ভ্রমণ পচ্ছন্দ করেন, তাহলে এই রাস্তাগুলি রাতে এড়িয়ে চলুন
যেসব রাস্তার সঙ্গে আজও জড়িয়ে নানা অলৌকিক-অবিশ্বাস্য কাহিনি ! অনেকের কাছে এগুলোই ভুতুড়েে রাস্তা নামে পরিচিত ।
দ্য কোয়ারি ওয়েবডেস্ক- রোজকার জীবন সকলের কাছে বড়োই একঘেয়ে । আর ঠিক তার জন্যই একটু ছুটি পেলেই মন যে করে উড়ু উড়ু।
শহরে থাকার সুবাদে ছুটিতে সকলেই চান একটু নিরিবিলিতে সময় কাটাতে ।
আর যদি সড়ক পথও হয় নির্জন তাহলে গাড়ি চালানো বা চড়ার মজাটাই আলাদা ।
প্রকৃতির সৌন্দর্যের বুক চিড়ে এঁকে-বেঁকে এগিয়ে যাওয়া পথগুলি দিয়ে যেতে কার না ভাল লাগে !
ভারতের ভুতুড়ে রাস্তা
তবে জানেন কি, এদেশে এমন অনেক সুন্দর-আকর্ষণীয় রাস্তা আছে, যেখান দিয়ে যেতে গা ছমছম করে ওঠে ।
যেসব রাস্তার সঙ্গে আজও জড়িয়ে নানা অলৌকিক-অবিশ্বাস্য কাহিনি ! অনেকের কাছে এগুলোই ভারতের ভুতুড়ে রাস্তা নামে পরিচিত ।
ভারতের ভুতুড়ে রাস্তা কোনগুলি
দিল্লি ক্যান্টনমেন্ট রোড-
ভারতের সবথেকে ভৌতিক রাস্তা বলে দিল্লি ক্যান্টনমেন্ট রোডের সুনাম বা দুর্নাম আছে ।
অন্ধকার রাতে গাড়ির চালকরা প্রায়শই এখানে সাদা সাড়ি পরিহিতা এক নারীকে রাস্তার মাঝখানে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখেন ।
কখনও কখনও সেই নারী অলৌকিকভাবে গাড়ির ব্যাকসিটেও চলে আসে । আবার চোখের পলকে উধাও হয়ে যায় ।
গাটা লুপস (মানালি-লেহ হাইওয়ে)-
বাইকার্সদের কাছে গাটা লুপস একেবার স্বর্গের মতো । পথের প্রতিটি বাঁকেই রোমাঞ্চ। হাড় কাঁপানো ঠান্ডায় এই রাস্তায় বাইক চালানো বেশ চ্যালেঞ্জিংও ব্যাপার ।
প্রাকৃতিক প্রতিকূলতার পাশাপাশি এ পথের আড়ালে ঘটে যায় ভৌতিক ঘটনাও।
কথিত আছে, একবার এক ট্রাক চালকের সঙ্গে এক সাফাইকর্মী লেহ যাচ্ছিলেন । প্রবল তুষার ঝড়ের কবলে পড়ে ট্রাকটি ।
নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে তা খাদে পড়ে যায়। আর সেই সাফাইকর্মী আটকে পড়েন বরফাবৃত রাস্তায় ।
এক মুঠো খাবার আর জলের জন্য বেশ কয়েকদিন চাতক পাখির মতো সেখানেই বসেছিলেন তিনি। শেষরক্ষা হয়নি ।
মৃত সাফাইকর্মী ওই রাস্তার মোড়েই সমাধিস্ত হন ।
তারপর থেকেই নাকি পর্যটকরা এই রাস্তায় গেলেই একজনকে জল চাইতে দেখতে পেতেন। বর্তমানে সেখানে একটি ছোট্ট মন্দির তৈরি হয়েছে। বাইকআরোহীরা সেখানে জলের বোতল-খাবার ইত্যাদি দান করেন ।
মুম্বাই-নাসিক হাইওয়ে-
ঝাঁ চকচকে এই রাস্তার কাসারা ঘাট এলাকাটি একটু গা ছমছমে ।
ঘন ঝোপঝাড়, ছায়া-ছায়া ভাব । বেশ একটা ভৌতিক পরিবেশ । এখানে অনেকেই নাকি কালো শাড়ি পরা এক মুণ্ডহীন নারীমূর্তিকে দেখেছে।
আরে কলোনি (মুম্বই)-
মুম্বইয়ের হন্টেড রোড বলে পরিচিত আরে কলোনি । দুদিকে আকাশচুম্বি গাছ। মাঝখান দিয়ে চলে গিয়েছে কালো পিচের রাস্তা ।
দিনের বেলা আর পাঁচটা জায়গার মতোই স্বাভাবিক এখানকার ছবি । কিন্তু সন্ধে নামলেই গুমোট অন্ধকারের মধ্যে হাতছানি দেয় অশরীরীরা ।
অনেকেই জানান, গাড়িতে ওই পথ দিয়ে রাতে যাওয়ার সময় সাদা শাড়ি পরিহিতা এক যুবতী পথ আটকায় । তাকে লিফ্ট দিতে অনুরোধ জানায়।
আরও পড়ুন : সাড়ে তিন ঘণ্টায় কলকাতা থেকে সাগর, চলতি সপ্তাহেই চালু ক্রুজ পরিষেবা
প্রথমটায় তাকে শান্ত মনে হলেও গাড়িতে চেপে বসতেই বদলে যায় তার রূপ। তার বিস্ফারিত হিংস্র চোখ দেখে শিউরে উঠেছেন অনেকেই।
শুধু তাই নয়, এই রাস্তা দিয়ে যাওয়ার সময় অনেকে বাচ্চার কান্নার শব্দও শুনেছেন। আবার কেউ কেউ রাস্তার মাঝে মৃতদেহ পড়ে থাকতে দেখেছেন।
মার্ভে অ্যান্ড মাধ আইল্যান্ড রোডস, মুম্বই-
এখানে প্রায়শই এক নববধূকে দেখা যায় । কথিত আছে, এই বধূটিকে নাকি তার স্বামীই হত্যা করে গাড়ি চাপা দিয়ে ।
রাতের দিকে অনেকেই তার কান্না শুনেছেন । অনেকে তার অস্পষ্ট বা স্পষ্ট অবয়বও নাকি দেখেছেন ।
এই আত্মা কারোর কোনও ক্ষতি করে না। কিন্তু রাতের নির্জন সড়কে তার উপস্থিতি গাড়ি চালকদের অস্বস্তির কারণ হয়ে দাঁড়ায় ।
রাঁচি-জামশেদপুর রোড (ঝাড়খণ্ড)-
স্থানীয়দের মতে, রাঁচি-জামশেদপুরের ৩৩ নম্বর জাতীয় সড়কটি নাকি অভিশপ্ত ।
রাস্তার একটি জায়গায় দু’দিকে দুটি ছোট মন্দির আছে । শোনা যায়, মন্দির দুটির সামনে গাড়ি দাঁড় করিয়ে প্রণাম না করলে বিপদ অনিবার্য ।
দিল্লি-জয়পুর হাইওয়ে-
রাস্তার সবটাই ভাল, কেবলমাত্র ভানগড়ের আশপাশটা ছাড়া । ভারতের সবথেকে ভৌতিক স্থান ভানগড় ।
এলাকাটি পেরোতে গিয়ে গাড়ির চালকরা কত রকমের অতিলৌকিক ঘটনার সম্মুখীন হয়েছেন তা বলে শেষ করা যাবে না ।
বেসান্ত অ্যাভেনিউ রোড- চেন্নাইয়ের এই রাস্তায় রাতের দিকে প্রায়শই সমস্যা দেখা দেয় ।
অনেকেই বলেছেন রাতের দিকে এই রাস্তায় হাঁটতে গিয়ে তাঁরা অশরীরী কারোর হাতে চড়-থাপ্পড় খেয়েছেন ।
বাইক আরোহীদের কেউ ধাক্কা দিয়ে ফেলে দিয়েছে । মনে করা হয় এক ইহুদি পরিবারের কোনও সদস্য এখানে দুর্ঘটনায় মারা যান ।
তাঁর অতৃপ্ত আত্মাই এমন কাণ্ড ঘটায়। এ ছাড়াও এক নারী ও শিশুর আবছা অবয়বও দেখা যায় এই এলাকায়।
সত্যমঙ্গলম (তামিলনাড়ু)-
দক্ষিণ ভারতের সড়কের প্রাকৃতিক দৃশ্য আপনাকে আকৃষ্ট করবেই । তবে সৌন্দর্যতার সঙ্গে সত্যমঙ্গলমে রয়েছে অলৌকিকতাও ।
আরও পড়ুন : কমছে ভারতীয় পাখির সংখ্যা, উদ্বেগ ১০১ প্রজাতির পাখি নিয়ে : রিপোর্ট
এককালে এই রাস্তার ধারের জঙ্গলেই রাজত্ব করতেন বীরাপ্পন । ২০৯ নম্বর জাতীয় সড়কের সঙ্গে যুক্ত এই রাস্তাটি তামিলনাড়ুর সবচেয়ে ভয়ংকর স্থান ।
অন্ধকারে পথে হঠাৎই তীব্র চিৎকার শোনা যায় । আবার কখনও পথের মাঝেই শূন্যে ভেসে থাকতে দেখা যায় লন্ঠন ।
ভূত আছে কি নেই তার দ্বন্দ আজও বিরাজমান । এমন কিছু ঘটনা আমাদের আসেপাশে ঘটে যার কোনো ব্যাখ্যা হয় না ।
সড়কপথের এই ঘটনাগুলিও ঠিক সেই রকম । তবে খুব দরকার না পড়লে রাতের বেলা নির্জন সড়ক এড়িয়ে চলাই বুদ্ধিমানের কাজ ।