শাসক শিবিরের নিশানায় হাওড়ায়, জল মাপছেন রাজীব !

দ্য কোয়ারি ওয়ে়বডেস্কঃ যতই নির্বাচন এগিয়ে আসছে ততই রাজ্যজুড়ে হুলুস্থুল কাণ্ড। যে সমস্ত বিধায়ক ও নেতৃত্বদের বেসুরো বলা হচ্ছে তারা প্রত্যেকেই কোন না কোন কারণ নিয়ে রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে ক্ষোভ প্রকাশ করছেন। আর সেই ক্ষোভের বিষয় প্রকাশ্যে আসতেই সংশ্লিষ্ট নেতা-কর্মী-বিধায়ক তিনি যেই হোন না কেন তাকে বলা হচ্ছে বেসুরো।

বেসুরোদের তালিকায় এখন প্রথমেই নাম রয়েছে রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়ের। যিনি রাজ্যের বনমন্ত্রী এবং ডোমজুড়ে বিধায়ক। দাপুটে তৃণমূল নেতা।  হাওড়া জেলার শহর সভাপতির পদ থেকে চলতি সপ্তাহেই পদত্যাগ করেছেন লক্ষ্মীরতন শুক্লা।

সেইসঙ্গে পদত্যাগ করেছেন ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রীর পদ থেকেও। দলত্যাগ করেছেন তবে বিধায়ক হিসেবে মেয়াদ অবধি থাকবেন বলে জানিয়েছেন তিনি। ঘটনায় কালবিলম্ব না করেই লক্ষ্মীর স্থলাভিষিক্ত হয়েছেন ভাস্কর ভট্টাচার্য। যা নিয়ে তোলপাড় হাওড়া জেলা।

শোনা যাচ্ছে ভাস্কর ভট্টাচার্য অরূপ রায়ের ঘনিষ্ঠ। অতিদ্রুত তিনি জেলা সভাপতি পদ পেয়ে গেলেন, কোনো আলাপ-আলোচনা ছাড়াই।যা প্রশ্ন তুলছে হাওড়া জেলার কর্মী সমর্থকদের মধ্যেও।

অনেকেই প্রত্যক্ষ প্রশ্ন ছুঁড়ে দিয়েছেন কেন রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়কে জেলার সভাপতি করা হল না? ভাস্কর ভট্টাচার্যের সাংগঠনিক ক্ষমতা কি রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়ের থেকেও বেশী?

http://sh103.global.temp.domains/~lyricsin/thequiry/a-two-day-special-session-against-agricultural-law/

কর্মী সমর্থকদের তোলা প্রশ্ন থেকেই বিষয়টি পরিস্কার। তবে তা কতটা শাসক শিবিরের পক্ষে অনুকূল হবে সে বিষয়ে ব্যাখ্যায় না-ই বা যাওয়া হল।

লক্ষ্মীরতন শুক্লার এই সিদ্ধান্তের সমর্থনে মুখ খুলেছেন বালির বিধায়ক বৈশালী ডালমিয়া। স্পষ্ট ভাষায় তিনি জানিয়েছেন, দলের ভেতরে এমন অনেকেই রয়েছেন যারা কাজ করতে দিচ্ছেন না। কেউ কাজ করতে চাইলে তাকে বিভিন্নভাবে বাধা দেওয়া হচ্ছে। আসলে বেসুরো এবং বেইমান সেই সমস্ত নেতারা। তাদের উইপোকার সঙ্গে তুলনা করেছেন বৈশালী ডালমিয়া। তাঁর কথায় সেই সমস্ত উইপোকা নেতাদের দল থেকে বের করে দিল এই আদতে দলের লাভ।

ঘটনার রেশ কাটতে না কাটতেই অন্য সুরে বাজতে শোনা গিয়েছে হাওড়া পৌরনিগমের প্রাক্তন মেয়র রথীন চক্রবর্তীকে। যিনি আবার বকলমে রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায় ঘনিষ্ঠ বলে জানা গিয়েছে। সম্প্রতি রাজীব বাবুর শরীর অসুস্থ থাকায় তিনি গিয়েছিলেন তাঁর সঙ্গে দেখা করতে।

লোকসভা নির্বাচনের পর হাওড়া জেলা জুড়ে গোষ্ঠী কোন্দল চরমে ওঠে। গ্রামীণের দায়িত্ব দেওয়া হয় পুলক রায়ের ওপর। হাওড়া শহরের দায়িত্ব পান লক্ষ্মীরতন শুক্লা।

রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায় এর ঘনিষ্ঠ হওয়ার সুবাদে লক্ষ্মীরতন শুক্লাকে হাওড়া জেলার বিভিন্ন কাজ করতে বাধা পেতে হতো বলে অভিযোগ জানিয়েছেন লক্ষীর ঘনিষ্ঠ শিবির। আর সেই ইঙ্গিতের আঙুল উঠেছে অরূপ রায়ের দিকে।

নাম না করে অরূপ রায়কে কার্যত নিশানা করেছেন বৈশালী ডালমিয়া-ও। আর রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায় সঙ্গে অরূপ রায়ের বিবাদ সর্বজনবিদিত।

রথীন চক্রবর্তী লক্ষ্মীরতন শুক্লার পদত্যাগ প্রসঙ্গে মন্তব্য করতে গিয়ে বলেন, এটা ওর ব্যক্তিগত ব্যাপার। তবে দলের অবস্থা এখন এতটাই ভঙ্গুর এবং সামঞ্জস্যহীন তা ভাষায় প্রকাশ করা যাবে না। যে সমস্ত কর্মীরা দলের হয়ে ১০০ শতাংশ কাজ করছেন প্রাপ্য সম্মান এবং মর্যাদা দিক থেকে তারা বঞ্চিত থেকে যাচ্ছেন। ফলে মানিয়ে নিতে না পেরে নিজেদের দল থেকে সরিয়ে নিচ্ছেন। ক্ষতি হচ্ছে দলেরই। তবে তিনি রাজ্য এবং জেলা নেতৃত্বকেও দায়ী করেছেন এই পরিস্থিতির জন্য।

রাজনৈতিক মহলের মতে, রথীন বাবুর বক্তব্যের বাস্তব উদাহরণ রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়। দলের জন্য ঝাঁপিয়ে পড়ে যাকে কাজ করতে দেখা গিয়েছে, তিনি প্রাপ্য সম্মানের তালিকা থেকে বরাবরই বাদ থেকেছেন।

http://sh103.global.temp.domains/~lyricsin/thequiry/professor-of-visva-bharati-university-is-allegedly-suspended/

অন্যদিক ভোটের মাত্র ২ মাস বাকী। ফের বকলমে ফিরিয়ে আনা হল জেলা পর্যবেক্ষকের পদ। হাওড়া ও হুগলির দায়িত্ব পেলেন ফিরহাদ হাকিম। নদীয়ার দায়িত্ব পেলেন পার্থ চট্টোপাধ্যায়। ওয়াকিবহল মহলের মতে, এখানেও ব্রাত্য রাখা হয়েছে দাপুটে নেতা রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়কে। যিনি নিজে গতবার নদীয়ার দায়িত্ব পাওয়ার পর সংগঠনের মাটি মজবুত করেছিলেন। স্বয়ং সাধুবাদ জানিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রীও।

নির্বাচনী ঘন্টা বেজে গিয়েছে। রাজনৈতিক মহলের মতে, বিধানসভা নির্বাচনের ফলাফলে এবার যথেষ্ঠ বেগ পেতে হবে শাসক শিবিরকে। কারণ তাদের নেতৃত্ব বাছাইয়ের ক্ষেত্রে যেমন রয়েছে গলদ। তেমনি প্রাপ্য সম্মানের থেকে বঞ্চিত রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়ের মত স্বচ্ছ ভাবমূর্তির অধিকারী নেতৃত্বও। এমনকি বিরোধীরাও তাঁর বিরুদ্ধে কোনো অভিযোগ তুলতে পারেন না। তবে রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়ের রাজনৈতিক ভবিষ্যত কিন্ত জল্পনাময়ই থেকে গেল।

সম্পর্কিত পোস্ট