দোরগোড়ায় নির্বাচন, রাজীবকে নিয়ে দ্রুত সিদ্ধান্ত নিক দল

দ্য কোয়ারি ওয়েবডেস্কঃ শুভেন্দু অধিকারীর পর রাজ্য রাজনীতিতে বহুল চর্চিত নাম রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়। গুঞ্জন হয়ত নতুন বছরের শুরুতে নতুন করে রাজনৈতিক পথ নির্নয় করতে চলেছেন তিনি। তবে সবটাই জল্পনা-কল্পনা। বাস্তবে কী হবে সেটা বলা এখনই সম্ভব নয়।

শুভেন্দু অধিকারী সহ তাঁর ঘনিষ্ঠ মহলের একঝাঁক নেতা দলত্যাগের পর চরম অস্বস্তিতে পড়েছে তৃণমূল সে বিষয়ে সন্দেহের কোন অবকাশ নেই। যতই সাংবাদিক বৈঠকে শাসকদল বলুক না কেন শুভেন্দু অধিকারীর চলে যাওয়ায় কোন প্রভাব পরবেনা। বাস্তব কিন্তু অন্য কথা বলছে।

তবে রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে শুভেন্দু অধিকারীর প্রসঙ্গ, রাজনৈতিক নীতি-আদর্শ, পথচলা গুলিয়ে ফেলা চলবে না। শুভেন্দু অধিকারী পারিবারিকভাবে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে ২১ বছর ধরে রাজনীতির ময়দানে লড়াই করেছেন। তার নেপথ্যে শিশির অধিকারীর যথেষ্ট ভূমিকা ছিল।

রাজীব বন্দোপাধ্যায়ের কোনটাই ছিল না। মাটিতে নেমে আমজনতার সঙ্গে মিশে রাজনীতি করে তরুণ তুর্কিদের মধ্যে নিজের জায়গা তৈরি করে নিয়েছেন তিনি।

নির্বাচনের আগে বারবার রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়ের দলের প্রতি ক্ষোভ, মান-অভিমানের কথা মাথাচাড়া দিয়ে উঠছে। বিষয়টা উড়িয়ে দেওয়ার মতও নয়।

http://sh103.global.temp.domains/~lyricsin/thequiry/the-central-budget-is-presented-on-february-1/

রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়ের সাংগাঠনিক দিক থেকে বিচক্ষণতা প্রশ্নাতীত। হাওড়া, হুগলী, নদীয়া, করিমপুর, কালিয়াগঞ্জ, ফালাকাটা, দক্ষিণ দিনাজপুর, আলিপুরদুয়ারে বিভিন্ন সময়ে সংগঠনের গুরু দায়িত্ব পালন করে গিয়েছেন তিনি।

২০২১ এর নির্বাচনে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আগেই বলেছিলেন টার্গেট হবে যুব সম্প্রদায় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এই টার্গেট একমাত্র পূরণ করতে পারেন তিনি আর কেউ নন রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়।

তাহলে প্রশ্ন, কেন তাঁকে সংগঠনের সামনের সারিতে আনা হচ্ছে না? রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়কে দলের সামনের সারিতে এনে দায়িত্ব দিলে আখেরে লাভ হত দলেরই-একথা বলছেন দলেরই অন্দরের একাংশ।

শুভেন্দু অধিকারীর পর রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায় দলের অন্যতম জনপ্রিয় মুখ। একথা মনেপ্রাণে বিশ্বাস করেন, দলের শীর্ষ নেতৃত্বের অনেকেই। তাই বারবার যখন দলেরই অন্দরে প্রশ্ন উঠছে সংগঠনের দুর্বলতা নিয়ে, নেতৃত্বের গ্রহণযোগ্যতা নিয়ে – তখন কেন সামনে আনা হচ্ছে না রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়কে? এই প্রশ্নেই তোলপাড় রাজনৈতিক মহল।

এরই মাঝে নতুন করে জল্পনা শুরু হয়েছিল ১২ ই জানুয়ারি ফের রাজ্য সফরে আসছেন অমিত শাহ। তখনই নাকি রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায় সহ আরো অনেকেই যোগদান করবেন বিজেপিতে। তবে সে জল্পনা গোটাটাই উড়িয়ে দিয়েছেন রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়।

তৃণমূল সূত্রে জানা যাচ্ছে, খুব শীঘ্রই হয়তো যে সমস্ত বিধায়ক নেতাকর্মীরা দলের প্রতি ক্ষোভ উগরে দিচ্ছেন, সর্বোপরি প্রশান্ত কিশোরের বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলছেন -তাদের সঙ্গে বৈঠকে বসতে চলেছেন তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

তবে তা দিনক্ষণ এখনো পর্যন্ত কিছুই ঠিক হয়নি। তৃণমূল সূত্রে আরো জানা যাচ্ছে, হয়তো সুপ্রিমো বৈঠকের প্রথম দিনেই একান্তে কথা বলতে পারেন রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায় সঙ্গে।

দলের একাংশ মনে করছেন যদি সত্যিই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে একান্তে বৈঠক করেন তাহলে অচিরেই হয়তো সমস্যার সমাধান হয়ে যেতে পারে।

কারণ এর আগেও রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায় যখন অরূপ রায়ের বিরুদ্ধে দুর্নীতি প্রসঙ্গে সরব হয়েছিলেন তৎক্ষণাৎ সিদ্ধান্ত নিয়ে অরুপের ক্ষমতা খর্ব করেছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মনে করা হচ্ছে এবারও ২০২১ এর নির্বাচনের আগে রাজীবকে দায়িত্ব দিয়ে সামনের সারিতে আনতে পারে তৃণমূল।

রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায় যদি সত্যিই দল ত্যাগ করেন, সেক্ষেত্রে শাসক দলের অন্দরে যুব সমাজের আইকন বলতে আর কেউ নেই বললেই চলে। কারন মহুয়া মৈত্র, ডেরেক ও’ব্রায়েন, মিমি, নুসরাত, দেব, সোহম এনারা থাকলেও সাংগঠনিক দিক থেকে রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায় এর সঙ্গে টেক্কা দেওয়ার মতো কেউই নেই।

পাশাপাশি যুব সমাজকে প্রভাবিত করা এবং ভালো মন্দের বিচার করে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া সেরকম রাজনীতিবিদও অমিল। অনেকেই বলছেন হাওড়া, হুগলি, নদীয়া সহ বিভিন্ন জেলাতে যুব সম্প্রদায় যারা দলে দলে যোগদান করছেন তাদের কাছে রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায় অভিভাবকের মতো । আর অভিভাবক যদি না থাকেন তাহলে সেই যুব সমাজ কতটা দলমুখি থাকবে তা নিয়েও কিন্তু প্রশ্ন উঠে যাচ্ছে।

http://sh103.global.temp.domains/~lyricsin/thequiry/shiv-sena-has-decided-to-contest-more-than-100-seats-in-the-assembly-westbengal/

বরাবরই উঠেছে প্রশ্ন, কেন রাজীবকে যোগ্য সম্মান দেওয়া হল না? তবে তার উত্তর কিন্তু পাওয়া যায়নি এখনো পর্যন্ত। হয়তো আগামী দিনে এর উত্তর স্পষ্ট হয়ে যাবে। কিন্তু ততদিনে রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায় তাঁর রাজনৈতিক ভবিষ্যৎ পরিবর্তনের কথা চিন্তা ভাবনা করে যদি ফেলেন সে ক্ষেত্রে নিঃসন্দেহে বেকায়দায় পড়বে দল।

একুশের নির্বাচনে তরী পার করা মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে চ্যালেঞ্জের সমান হয়ে যাবে । একথা আমরা বলছি না, বলছেন দলের একাংশ।

২০২০ শেষ। ২০২১ এর শুরুতে আর একটুও সময় বাকি নেই। অতএব যা করার বা সিদ্ধান্ত নেওয়ার তা খুব দ্রুতই নিতে হবে। না হলে যে কোন মুহূর্তে বদলে যেতে পারে পশ্চিমবঙ্গের রাজনৈতিক সমীকরণ।

সম্পর্কিত পোস্ট