অনির্দির্ষ্টকালের জন্য বন্ধ ৪০ টি শিশু শ্রমিক বিদ্যালয় , কর্মহারা বহু পরিবার

দক্ষিণ দিনাজপুরের এই শিশু শ্রমিক বিদ্যালয় গুলি কেন্দ্রীয় সরকারের অধিনস্থ। আপাতত চাকরি না থাকায় পরিবার পরিজন নিয়ে পথে বসল শিক্ষক-অশিক্ষক কর্মীরা।

দ্য কোয়ারি ওয়েবডেস্কঃ আচমকা সিদ্ধান্ত কেন্দ্রের। বন্ধ ৪০ টি শিশু শ্রমিক বিদ্যালয় । দক্ষিণ দিনাজপুরের এই শিশু শ্রমিক বিদ্যালয় গুলি কেন্দ্রীয় সরকারের অধিনস্থ। আপাতত চাকরি না থাকায় পরিবার পরিজন নিয়ে পথে বসল শিক্ষক-অশিক্ষক কর্মীরা।

সার্ভের নাম করে এই বিদ্যালয়গুলি সম্পূর্ণভাবে বন্ধ করে দেওয়ার চক্রান্ত চলছে বলেই অভিযোগ জানান কর্মহারা পরিবারগুলি।

জানাগেছে, শিশু শ্রমিকদের পঠন পাঠনের জন্য প্রায় ২২ বছর আগে দক্ষিণ দিনাজপুর জেলায় তৈরি হয় পৃথক একটি বিদ্যালয়।

কেন্দ্রীয় সরকারের অধিনস্থ এই স্কুলগুলি চালায় তিনটি এনজিও।

শিশু শ্রমিক বিদ্যালয়

দক্ষিণ দিনাজপুর জেলায় থাকা ৪০ শিশু শ্রমিক স্কুলের মধ্যে ১৫ টি ভারতীয় রেড ক্রস, ২ টি সেন্ট জন্স ও বাকি ২৩ টি টেগর সোসাইটির অধিনে রয়েছে।

একেকটি স্কুলে শিক্ষক অশিক্ষক কর্মী রয়েছেন ৪ জন করে মোট ১৬০ জন।

এছাড়া আরো ১৪ জন কর্মী রয়েছেন ভোকেশনাল ইন্সট্রাক্টর হিসেবে।

 আরও পড়ুনঃ খড়গপুরে ধোনি আসার অপেক্ষায় দিন গুনছেন বৃদ্ধা মা কলাবতী দেবী

এই ইন্সট্রাক্টরদের একেকজনের অধীনে তিনটি করে স্কুল রয়েছে।

এই স্কুলগুলিতে মোট পড়ুয়া রয়েছে এক হাজার আটশোর (১৮০০) বেশি।

পেটের দায়ে যে সব শিশুরা কারখানা ও বিভিন্ন দোকানে কাজ করে তাঁদের উদ্ধার করে এই স্কুলগুলিতে নিয়ে গিয়ে শিক্ষাদান করা হয়।

মাসিক ৪০০ টাকা করে এই পড়ুয়াদের বৃত্তি প্রদান করে সরকার। যাতে পঠনপাঠনে আগ্রহ থাকে এদের।

এক স্কুলে ছয় মাস অন্তর একসঙ্গে বেতন হয় শিক্ষক ও অশিক্ষক কর্মীদের।

পড়ুয়াদের ভাতাও আসে ছয় মাস অন্তর।

রাজ্যের নজরদারিতে থাকা এই প্রকল্পের টাকা বরাদ্দ হয় কেন্দ্রীয় সরকার থেকে।

বন্ধ ৪০ টি শিশু শ্রমিক বিদ্যালয়

কিন্তু ৩১ ডিসেম্বর ২০১৯ তারিখে শিক্ষক ও অশিক্ষক কর্মীদের জানিয়ে দেওয়া হয় স্কুলগুলি আপাতত কয়েকমাস বন্ধ রাখা হচ্ছে।

এতেই দিশেহারা হয়ে পড়েন শিক্ষক থেকে অশিক্ষক কর্মীরা।

অনুপ রঞ্জন দাস সহ অনান্য শিক্ষক-অশিক্ষক কর্মীরা জানান, তাদের একমাত্র কর্মসংস্থান ছিল এটি।

এছাড়া শিশু শ্রমিকদের স্বার্থে এই স্কুলগুলি গুরুত্বপূর্ণ। অথচ সার্ভের নাম করে কয়েকমাস স্কুল চলবে না বলে তাদের জানিয়ে দেওয়া হয়েছে এনজিও গুলির মাধ্যমে।

এনিয়ে কোনো লিখিত অর্ডারও আসেনি বলে জানান স্কুলের শিক্ষক-অশিক্ষক কর্মীরা। আগেও তিনবছর অন্তর সার্ভে হয়েছে।

কিন্ত কখনো স্কুল বন্ধ রাখার নির্দেশ আসেনি। তারা মনে করছেন চক্রান্ত করে শিশু শ্রমিক স্কুলগুলি তুলে দেওয়ার চেষ্টা চলছে।

এই ঘটনার প্রতিবাদে আন্দোলনে নামবেন নামবেন বলেও হুঁশিয়ারী দিয়েছেন শিক্ষক-অশিক্ষক কর্মীরা।

দক্ষিণ দিনাজপুর জেলার জেলা শাসক নিখিল নির্মল বলেন, কেন্দ্রীয় সরকারের প্রকল্প দ্বারা চলা স্কুলগুলি তিনমাস বন্ধ রাখার নির্দেশ তার কাছে এসেছে। সেই নির্দেশ বহাল করা হল। যখন যেমন নির্দেশ আসবে সেইমত পদক্ষেপ নেওয়া হবে।

সম্পর্কিত পোস্ট