৭ তারিখ ডুমুরজলাতেই শক্তি প্রদর্শন তৃণমূলের, পাল্টা কটাক্ষ বিজেপির
দ্য কোয়ারি ওয়েবডেস্কঃ শিয়রে নির্বাচন। তার আগেই জমে উঠেছে রাজনীতির ময়দান। কখনো বাম থেকে ডান। আবার কখনো ডান থেকে রাম। এ যেন জল ভাত।
৩১ জানুয়ারি হাওড়ার ডুমুরজলা স্টেডিয়াম থেকে বিজেপির যোগদান মেলায় বসেছিল চাঁদের হাট। রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায় থেকে শুরু করে বৈশালী ডালমিয়া, প্রবীর ঘোষাল থেকে শুরু করে রথীন চক্রবর্তী। সকলেই এদিন গেরুয়া শিবিরের হয় মঞ্চে আবির্ভূত হন। সেই সঙ্গে গোটা হাওড়া জেলার শয়ে শয়ে কর্মী সমর্থক শুধুমাত্র রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়ের সমর্থনে গেরুয়া শিবিরে নাম লেখায়।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক হাওড়ার এক তৃণমূল কর্মীর কথায়, ৩১ তারিখের পর থেকে রাতারাতি বদলে গিয়েছে হাওড়া জেলার চরিত্র। রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায় যে বিপুল জনসমর্থন নিয়ে বিজেপিতে গিয়েছেন তাতেই মুখে প্রকাশ না করলেও বেশ চিন্তায় পড়েছে তৃণমূল।
কৃষি আইন ইস্যুতে উত্তাল রাজ্যসভা, ওয়াক আউট বিরোধীদের
আর এবার সেই চিন্তা কাটাতেই এবং বিজেপিকে কড়া জবাব দিতে সেই ডুমুরজলা স্টেডিয়াম থেকেই ৭ ফেব্রুয়ারি সভা করবে তৃণমূল।
ঠিক যেভাবে শুভেন্দু অধিকারী বলেছিলেন যেখানে যেখানে সভা করবে তৃণমূল, ঠিক সেখানেই পাল্টা সভা করবে বিজেপি। তৃণমূলের এই সভার কথা সামনে আসতেই কার্যত এই ভাষাতেই তৃণমূলকে কটাক্ষ করেছে বিজেপি নেতৃত্বরা।
এই ডামাডোল পরিস্থিতিতে বিরোধীরা যাকে কাঠগড়ায় তুলে বিজেপিতে যোগদান করলেন সেই অরূপ রায় কিছুদিন আগেই অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন। তবে পরিস্থিতি বুঝেই তড়িঘড়ি তিনি নেমে পড়েছেন নির্বাচনী ময়দানে। তিনি নিজেই সভাস্থল পরিদর্শন করেন সোমবার। সঙ্গে ছিলেন হাওড়া সদরের সভাপতি ভাস্কর ভট্টাচার্য্য।
অরূপ রায়ের সঙ্গে রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিবাদ কোন নতুন কথা নয়। তবে রাজনৈতিক বিভাজনকে দূরে সরিয়ে সৌজন্যতার নিদর্শন রেখেই রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায় দৌড়ে গিয়েছিলেন হাসপাতালে। অরূপ বাবুর শারীরিক অবস্থার খোঁজ নিতে। যা রাজনীতিতে নতুন করে জল্পনা উস্কে দিয়েছিল।
হাওড়া জেলার একটা বিরাট অংশ যারা বিজেপিতে নাম লিখিয়েছেন তারা প্রত্যেকেই অরূপ রায়ের সম্পর্কে বিভিন্ন সময় অভিযোগ তুলেছেন। অনেকেই প্রকাশ্যে নাম না করলেও বৈশালী ডালমিয়া কিন্তু অরূপ রায়ের নাম নিয়েই সরাসরি আক্রমণ করেছেন।
বলেছেন অরূপ রায়ের জন্যই হাওড়া জেলাটা ঘেঁটে গেছে। যদিও পাল্টা কোনো মন্তব্য করতে দেখা যায়নি অরূপ রায়কে। দীর্ঘদিন ধরে হাওড়া জেলায় কমিটি গঠন নিয়ে সমস্যা ছিল। বিভিন্ন সময় রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায় সেই অভিযোগ শীর্ষ নেতৃত্বকে জানিয়েছেন। তবে লাভ হয়নি।
রাজনৈতিক মহলের প্রশ্ন এখানেই। যারা অরূপ রায়ের বিরুদ্ধে কথা বলে শাসকের রোষানলে পড়লেন। অবশেষে ধৈর্যচ্যুতি ঘটিয়ে বিজেপিতে গিয়ে যোগ দিলেন তারা সকলেই কি মিথ্যা কথা বলছেন? নাকি সকলেই বেইমান বা চোর? যদি তারা দুর্নীতি গ্রস্থই হয়ে থাকেন তাহলে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এতদিন তাদের বিরুদ্ধে কোনো সিদ্ধান্ত নিলেন না কেন ?
ওয়াকিবহাল মহলের মতে, রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে শুধুমাত্র তার বিধানসভা মানুষই নন হাওড়া জেলার বিভিন্ন প্রান্ত থেকে প্রচুর মানুষ আসতেন। একটা বিপুল অঙ্কের সাধারণ মানুষ রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে বরাবর ছিলেন। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কেন সব কিছু বোঝা সত্ত্বেও কোনো সিদ্ধান্ত কেন নিলেন না সেটাই ভাবাচ্ছে সকলকে।
পোলিয়োর বদলে স্যানিটাইজার, অসুস্থ ১২ জন শিশু
রাজনৈতিক মহলের মত, রাজীবের মতো স্বচ্ছ ভাবমূর্তির নেতৃত্বের হাত ধরে যেভাবে ভাঙ্গন শুরু হয়েছে হাওড়ার অন্দরে তাতে একুশের নির্বাচনে তৃণমূলের পক্ষে হাওড়া জেলার মাটিতে জোড়া ফুলের বীজ বপন করা অসম্ভব হয়ে যেতে পারে।
কারণ হাওড়া জেলার বিপুল অংশের যুবসমাজ মুখ ফিরিয়ে নিয়েছে শাসক শিবিরের থেকে। আগামী ৭ তারিখ কতটা ড্যামেজ কন্ট্রোল করতে পারেন শাসক শিবির নজর থাকবে সেদিকেই।