‘দুর্গাপুজোর একাল-সেকাল’- কলমে মোজাহারুল ইসলাম

করোনা কালে ত্রস্ত গোটা বিশ্ব। কেমন ছিল ছেলেবেলার পুজো? কেমন ভাবেই বা কাটালেন করোনা আবহে দুর্গাপুজো? শেষলগ্নে পুজো সংখ্যার বিশেষ প্রতিবেদনে কলম ধরলেন অনেকেই।

মোজাহারুল ইসলাম, পৌর প্রশাসক, জঙ্গিপুর পৌরসভা

শরতের আকাশে সাদা মেঘের ভেলা এবং ভাগরথীর তীরে ঘাসফুলের মেলায় মা দূর্গার আগমনী সুর চারদিকে বেজে উঠেছে। ছোটবেলা থেকে জঙ্গিপুরের মাটিতে বড়ো হয়েছি।

ঈদের পর দুর্গাপুজোর গন্ধ কোনও বছরই আমায় ভুলিয়ে রাখতে পারেনি। তবে করোনার কারণে এবার তাতে ভাটা পড়েছে।

কিন্তু বাঙালির শ্রেষ্ঠ উৎসব বলে কথা। তাই মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশমতো স্বাস্থ্যবিধি মেনেই এবারের দুর্গাপুজো হবে। এবছর ঈদের দিনে আমরা বাড়িতেই নামাজ পড়েছি।

আগের থেকে পরিস্থিতি ধীরে ধীরে পরিবর্তন হয়েছে। ভ্যাকসিনের মাধ্যমে করোনা প্রতিরোধ না করা গেলেও, মানুষের মধ্যে থেকে ভীতি চলে গিয়েছে।

আস্তে আস্তে নিউ নর্ম্যালে ফেরার চেষ্টা করছেন সকলেই। তাও কিছুজন আক্রান্ত হচ্ছেন। তাই এবার জঙ্গিপুরের পুজো প্যান্ডেলগুলিতে করোনার দাওয়াই স্যানিটাইজারের ব্যবস্থা করা হয়েছে।

সত্যিই এক মহামারী আমাদের জীবনের চালচিত্র পাল্টে দিয়েছে। রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত থাকার কারণে এলাকার বিভিন্ন পুজোমন্ডপ উদ্বোধন করতে যেতে হয়৷ তার আগে জঙ্গিপুরের একাধিক পুজোমন্ডপ ঘুরে বেড়িয়েছি। এর মধ্যে পেটকাটির পুজোর সবথেকে বেশী নামডাক রয়েছে।

http://sh103.global.temp.domains/~lyricsin/thequiry/narayangarh-west-medinipur-mla-pradyut-ghosh-wrote-puja-experience-2020/

এর এক বড় ইতিহাসও রয়েছে। আমরা জঙ্গিপুরবাসী মনে করি আপন আপন ধর্ম থাকা সত্ত্বেও আমরা একে অপরের পরিপুরক৷ হিন্দুদের অনুষ্ঠানে মুসলিম ভাইয়েরা এগিয়ে আসি কিভাবে সুষ্টভাবে অনুষ্ঠান করা যায়। ঠিক তেমনই ঈদের সময় হিন্দু ভাইয়েরা সমস্ত রকমভাবে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেয়।

পুরসভার সাফাই অভিযান থেকে শুরু করে বিসর্জনের সময় নদীর পাড়ে আলো এবং নৌকার ব্যবস্থা আমরা সকলে মিলে করি। এগুলোইতো মানুষের মধ্যে ভাবাবেগ তৈরি করে৷

সংকটকালে মুখ্যমন্ত্রীর পাওয়া ৫০ হাজার টাকা পেয়ে পুজো কমিটিগুলো নতুন করে জীবন ফিরে পেয়েছে। আমরাও এবারে যতটা পেরেছি পুজো কমিটিগুলোকে যতটা পেরেছি ছুট দিয়ে রেখেছি।

এলাকায় সার্বভৌমত্ব, শান্তি শৃঙ্খলা কিভাবে বজায় থাকে সেইদিকেই বিশেষ নজর রেখেছি। এবারের পুজোতে আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন ছোটখাটো শিল্পের সঙ্গে যুক্ত শ্রমিকরা।

এবার তাঁদের জন্য কিছু বস্ত্র বিতরণ করতে চাইছি। যাতে ওই চারটে দিন নতুন জামার গন্ধে তাঁদের মুখে যেন হাসিটা সবসময় লেগে থাকে৷

সম্পর্কিত পোস্ট