বিধায়ক পদ ছাড়তে চেয়ে অধ্যক্ষকে চিঠি বেচারামের

দ্য কোয়ারি ওয়েবডেস্কঃ ফের শিরোনামে বেচারাম মান্না। হুগলি জেলা তৃণমূলেরে কোন্দল আরও একবার প্রকাশ্যে। বিধায়ক পদ থেকে ইস্তফা দেওয়ার ইচ্ছা প্রকাশ করে বিধানসভার অধ্যক্ষ বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়কে চিঠি দিলেন সিঙ্গুর জমি রক্ষা কমিটির এই অন্যতম প্রধান মুখ।

উল্লেখ্য, কয়েকদিন আগেই সিঙ্গুরের মাস্টারমশাই রবীন্দ্রনাথ ভট্টাচার্য দল ছাড়ার হুমকি দিয়েছিলেন, কিন্তু বাস্তবে বিধায়কপদ ছাড়তে উদ্যোগী হলেন অন্যজন। এর জেরেই ধনতেরাসের দিন সিঙ্গুরে শাসক শিবিরে জোর চাঞ্চল্য তৈরি হল- যার জের শেষ পর্যন্ত পৌঁছাল কালিঘাট পর্যন্ত। বৃহস্পতিবার দুপুরে কার্যত কাকপক্ষীকে না জানিয়েই বিধানসভায় এসে বিধায়ক পদ থেকে ইস্তফা দিয়ে গেলেন হরিপালের বিধায়ক তথা সিঙ্গুর জমি রক্ষা কমিটির অন্যতম প্রধান মুখ বেচারাম মান্না।

সিঙ্গুরের বিধায়ক রবীন্দ্রনাথ ভট্টাচার্যের সঙ্গে হরিপালের বিধায়ক বেচারাম মান্নার বিরোধ সর্বজনবিদিত। কয়েক দিন আগেই রবীন্দ্রনাথ দল ত্যাগ করবেন বলে হুমকি দিয়েছিলেন। এরপরেই দলের শীর্ষ নেতৃত্বের তরফ থেকে হস্তক্ষেপ করা হয়। যাঁর কারণে এই পট পরিবর্তন। আর এদিন দুপুরে বিধানসভায় এসে ইস্তফা পেশ করেন বেচারামের। যদিও এদিন অধ্যক্ষ বিমান বন্দ্যোপাধ্যায় এই নিয়ে এখনও কোনও মন্তব্য করেননি। পাশাপাশি, শাসক দল তৃণমূল কংগ্রেসও এই নিয়ে সন্ধ্যা পর্যন্ত মন্তব্য করেনি বলেই জানা গিয়েছে।

দলীয় সূত্রে খবর, সিঙ্গুরের ব্লক সভাপতি পদে রবীন্দ্রনাথ ঘনিষ্ঠ মহাদেব দাসকে সরিয়ে বেচারাম ঘনিষ্ঠ গোবিন্দ ধাঁড়াকে বসানো হয়। এরপরেই হুঙ্কার দিয়ে দল ছাড়ার হুঁশিয়ারি দেন সিঙ্গুরের বিধায়ক। পরিস্থিতি হাতের বাইরে চলে যেতে পারে দেখে শীর্ষ নেতৃত্বের পক্ষ থেকে হস্তক্ষেপ করা হয়। সূত্রের খবর, বুধবার রাতে এরপর দলীয় নেতৃত্বের তরফ থেকে ফোন করে বেচারামকে বলা হয় মহাদেবকে ফের দায়িত্বে ফিরিয়ে দিতে। পাশাপাশি, তাঁকেও কড়াভাবেই বেশ কিছু কথা বলা হয়। এরপরেই বেচারামের ধৈর্য্যের আগল ভাঙে।

তিনি একধাপ এগিয়ে বিধায়ক পদ থেকেই ইস্তফা দেন বলেই খবর বিধানসভা সূত্রে। যদিও সেই পদত্যাগপত্র গ্রহণ হয়েছে কি না, তা এখনও স্পষ্ট নয়। তবে বলাই যায় বেচারামের এই ইস্তফা পেশের মধ্য দিয়েই হুগলিতে শাসক দলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব যে আরও গভীরে প্রবেশ করল তা নিশ্চিত।

এখানেই শেষ নয়, বেচারাম ঘনিষ্ঠরা জানাচ্ছেন, তৃণমূল শীর্ষ নেতৃত্বের ধমক খাওয়ার পরে হরিপালের বিধায়ক কার্যত ভেঙে পড়েন। তিনি কান্নাকাটিও করেন। রাতেই সিদ্ধান্ত নিয়ে নেন, বিধায়ক পদে আর থাকেবন না। এদিকে  শুক্রবার বেচারামের অনুগামীরা সিঙ্গুরে তৃণমূলের বিভিন্ন সাংগঠনিক পদ থেকে গণ-পদত্যাগ করবেন বলে স্থানীয় তৃণমূল নেতৃত্ব সূত্রে খবর মিলেছে। এখন দেখার এই সমস্যা নির্বাচনের আগে শাসক দল কী করে মেটায় ।

সম্পর্কিত পোস্ট