“ধীরে ধীরে দেখো হোতা হ্যায় কেয়া !” অরাজনৈতিক মঞ্চ থেকে স্তাবকতার রাজনীতি নিয়ে সরব রাজীব
দ্য কোয়ারি ওয়েবডেস্কঃ ২০২১ এর বিধানসভা নির্বাচনে আর কি কি ক্লাইম্যাক্স অপেক্ষা করে রয়েছে পশ্চিমবঙ্গের জন্য, সেটা হয়ত ভগবানই জানেন।
শুভেন্দু অধিকারী থেকে শীলভদ্র দত্ত, জটু লাহিড়ী থেকে বৈশালী ডালমিয়া সকলেই একের পর এক বিস্ফোরক মন্তব্য করে দলের বিরুদ্ধে উগরে দিয়েছেন। মিহির গোস্বামী তো সটান যোগ দিয়ে দিলেন বিজেপিতে। এবার পালা শুভেন্দু অধিকারীর।
আগামীকাল সাংবাদিক বৈঠকের মাধ্যমে তার রাজনৈতিক কর্মপন্থা স্পষ্ট করার কথা। এরই মাঝে জল্পনা শিরোনামে উঠে এলেন রাজ্যের দাপুটে নেতা ও বনমন্ত্রী রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়।
শনিবার দুপুরে টালিগঞ্জে একটি অরাজনৈতিক সভায় যোগদান করেন দাপুটে নেতা ও মুখ্যমন্ত্রীর আস্থাভাজন রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়। সেখানেই বক্তব্য রাখেন তিনি। উঠে আসে বর্তমান রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট।
রাজীব বলেন, “অনেকেই আছেন যারা নিজেদের স্বার্থে ক্ষমতা দখলের স্বার্থে রাজনীতি করেন। বর্তমানে রাজনীতিতে স্তাবকতার যুগ তৈরি হয়েছে। যারা দুর্নীতিগ্রস্ত তারা স্তাবক বলে সামনের সারিতে। শুধুমাত্র হ্যাঁ-তে হ্যাঁ মেলাতে হবে। তাহলেই ভাল। এর অন্যথা হলে তুমি খারাপ। যাদের দক্ষতা আছে যারা মাঠে নেমে মানুষের সঙ্গে মিশে কাজ করে, তারা প্রাধান্য পাচ্ছে না। অপরদিকে যারা ঠাণ্ডা ঘরে এসির মধ্যে বসে রয়েছেন, যাদের মুখ মানুষ আর পছন্দ করছে না, তারাই স্তাবকতার জন্য সামনের সারিতে।”
আক্ষেপের সুরে তিনি বলেন, “যখনই যোগ্যতার সঙ্গে, স্বচ্ছতার সঙ্গে, নিষ্ঠার সঙ্গে কোনো ভালো কাজ করতে গিয়েছি, জানিনা কী কারনে কোনো অদৃশ্য শক্তি পিছন থেকে আমাকে টেনে ধরেছে। ঠেলে ফেলে দিয়েছে পিছনের সারিতে। যা এখনো আমাকে যন্ত্রণা দেয়।”
http://sh103.global.temp.domains/~lyricsin/thequiry/susato-ghosh-vs-shuvensu-adhikari-politocal-meeting-in-medinipur/
প্রসঙ্গত এটাই প্রথমবার নয়। এর আগেও দলের অন্দরে রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায় সরব হয়েছিলেন দুর্নীতি নিয়ে। বর্তমান রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে দাঁড়িয়ে রাজনীতির ময়দানে শাসক ও বিরোধী উভয় নেতৃত্বই একে অপরের ব্যক্তিগত এবং সামাজিক জীবনে কেউ কাউকে আক্রমণ করতে পিছপা হচ্ছেন না। সেদিক দিয়ে দেখতে গেলে একমাত্র রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায় রয়েছেন, যাকে নিয়ে বিরোধীরা কোন কটুক্তি করতে আজ পর্যন্ত পারেনি।
এর আগেও যে সমস্ত মানুষের দক্ষতা রয়েছে যারা স্বচ্ছ ভাবমূর্তির অধিকারী যারা দুর্নীতিগ্রস্থ নয়-তাদেরকে সামনের সারিতে আনার জন্য সরব হয়েছিলেন। তবে তাতে কিঞ্চিত পরিবর্তন হয়েছে তেমনটা নয়।
শুধুমাত্র রাজীব নয়। এই একই ইস্যুতে তৃণমূলের অন্দরেই সরব হয়েছিলেন দলের একাংশ। তারা বলেছিলেন, তরুণ প্রজন্মকে রাজনীতির ময়দানে আনতে গেলে প্রয়োজন সাংগঠনিক বুদ্ধি। তাই এমন ব্যাক্তিকে সামনে নিয়ে আসা প্রয়োজন। সেক্ষেত্রে সবার আগে নাম উঠে এসেছিল রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়ের।
http://sh103.global.temp.domains/~lyricsin/thequiry/distance-10-km-shuvendu-vs-rajeev-and-sujit/
শুভেন্দুকে নিয়ে যখন ডামাডোল চলছে তখন রাজনৈতিক মহলের একাংশ বলেছিলেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় এবং তার ঘনিষ্ঠ মহল ও অধিকারী পরিবার এবং তাদের ঘনিষ্ঠ মহল সহ কয়েকজন মুষ্টিমেয় নেতৃত্ব ছাড়া আর কেউই যোগ্যতা থাকা সত্ত্বেও দলের মধ্যে গুরুত্ব পাচ্ছেন না।
http://sh103.global.temp.domains/~lyricsin/thequiry/rajibs-over-boundary-is-the-bat-given-by-cm-mamata-banerjee/
আর রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায় ক্ষেত্রে নতুন করে তার যোগ্যতা প্রমাণ করার কোন প্রশ্নই ওঠে না। কারণ রাজীবের সাংগঠনিক শক্তির অগ্নি পরীক্ষা হয়ে গিয়েছে ২০১৯ এর দুটি উপনির্বাচনে।
করোনা থেকে আমফান। সমস্ত পরিস্থিতিতে রাস্তায় নেমে মানুষের সঙ্গে থেকে মানুষের পাশে থেকে কাজ করেছেন রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়। আর আজকে সেই তিনিই কিনা বলছেন মানুষের মন বোঝা যাচ্ছে না!
তার কারণ কী? স্পষ্ট স্বীকারোক্তি রাজীবের, “বর্তমান রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে দাঁড়িয়ে যে পরিস্থিতি পশ্চিম বাংলার বুকে তৈরি হয়েছে তাতে বিভ্রান্ত রাজ্যের মানুষ। রাজনীতিতে একটা শূন্যতা তৈরি হয়ে যাচ্ছে। শুভেন্দু চলে গেলে সেটা আরও প্রকট হবে। কারণ স্তাবকতার যুগে এবং পালা বদলের রাজনীতিতে আগ্রহ হারিয়ে ফেলছেন তরুণ প্রজন্ম। রাজনীতি বিমুখ হয়ে যাচ্ছে নতুন প্রজন্ম।”
রাজীবকে নিয়ে জল্পনা আজকে নতুন করে নয়। যেদিন ক্যাবিনেট বৈঠকে রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায় এবং শুভেন্দু অধিকারী দুজনেই একসঙ্গে অনুপস্থিত ছিলেন। সেদিন থেকেই তাদেরকে নিয়ে জল্পনা তুঙ্গে। অনেকেই বলছেন শুভেন্দু অধিকারীর রাজনৈতিক কর্মপন্থা নির্ধারণ এর অপেক্ষা। তারপর হয়তো একই পথে হাঁটতে দেখা যাবে অনেককেই। আর এদের মধ্যে উঠে আসছে রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়ের নাম।
আজ তাৎপর্যপূর্ণ এবং যথেষ্ট ইঙ্গিতবাহী মন্তব্যগুলির কারণ কী রাজীবকে জিজ্ঞেস করা হলে তিনি বলেন, তিনি স্পষ্ট কথা স্পষ্ট ভাবে বলতে পছন্দ করেন। রাজীবের স্পষ্ট উত্তর, তিনি দলে থেকে মন্ত্রীসভার সদস্য হয়ে এই কথাগুলো বলেছেন। গণতান্ত্রিক দেশে মানুষের মনের কথা বলার অধিকার রয়েছে। সেটা কোনো অপরাধ নয়।
http://sh103.global.temp.domains/~lyricsin/thequiry/distance-10-km-shuvendu-vs-rajeev-and-sujit/
যদিও এদিন শুভেন্দু অধিকারীকে নিয়ে কোনো মন্তব্য সংবাদমাধ্যমে তিনি করতে চাননি। তবে শুক্রবার সন্ধ্যায় জেলা সভাপতিদের নিয়ে ভার্চুয়াল বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রী কড়া বার্তা দিয়ে দিয়েছেন দলকে।
সেইসঙ্গে জেলা সভাপতিদের বলেছেন যেখানে যেখানে দুর্নীতি হচ্ছে সেখানেই সংশ্লিষ্ট জেলার সভাপতিদেরই দায়িত্ব নিতে হবে। প্রয়োজনে যারা দল বিরোধী কাজে লিপ্ত তারা দলের কোন পদে থাকলে সেখান থেকে সরিয়ে দিতে হবে।
এক্ষেত্রে সর্বপ্রথম যে জেলার নাম উঠে এসেছে তা পূর্ব মেদিনীপুর। পূর্ব মেদিনীপুরের জেলা সভাপতি হিসেবে বিস্তীর্ণ অংশের দায়িত্ব দেখভালের দায়িত্ব পড়েছে শিশির অধিকারীর কাঁধেই।
তাহলে কী সত্যি দলত্যাগ করছেন রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়? স্মিত ভাষী, স্পষ্ট বক্তা, এক-কথার মানুষ রাজীব বুদ্ধিদীপ্ত হাসিতে বলে যান এখনি সব বলব না, ধীরে ধীরে দেখো হোতা হ্যায় কেয়া !