মেদিনীপুরের সভামঞ্চে পুরানো ফর্মে মমতা, শুভেন্দু নিয়ে করলেন না বাক্য ব্যয়
দ্য কোয়ারি ওয়েবডেস্কঃ শুভেন্দু নিয়ে জল্পনার মধ্যে মেদিনীপুরে ‘মেগা ইভেন্ট’ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের। এদিনের সভামঞ্চে অধিকারী পরিবারের কোনও সদস্য উপস্থিত না থাকলেও উপস্থিত ছিলেন দুই মেদিনীপুর এবং ঝাড়্গ্রামের বিধায়করা এবং ছিলেন তৃণমূলের একাধিক শীর্ষ নেতৃত্ব। উপস্থিত ছিলেন মহাসচীব পার্থ চট্টোপাধ্যায়, তৃণমূল সম্পাদক সুব্রত বক্সি, রাজ্যের মন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য, পুর্ণেন্দু বসু এবং রাজ্যসভার সাংসদ মানস ভুঁইয়া সহ একাধিক নেতৃত্ব।
এদিনের মঞ্চে উল্লেখযোগ্যভাবে উপস্থিত ছিলেন তৃণমূলের রাজ্য কমিটির সদস্য ছত্রধর মাহাতো। এদিন তাঁকে সামনে এগিয়ে এনে জনগণের উদ্দেশ্যে বার্তা দিয়ে তৃণমূল সুপ্রিমো বলেন, আমি অতীতকে ভুলিনা। আমরা একসঙ্গে লড়াই করেছি। ছত্রধরকে মাওবাদী তকমা দিয়ে ১০ বছর ধরে জেলে পুড়ে রেখেছিল পুলিশ। সেই সময়ের জনসাধারণ কমিটির কনভেনর তৃণমূলের ব্লক সভাপতি ছিলেন। মমতা বলেন, যেদিন ঘটনা ঘটে সেদিন চৌরঙ্গীতে জনসভা করছিলেন তিনি। সেখানে তিনজনকে হত্যা করা হয়েছিল। ছত্রধর জেল থেকে আসার পর ও আমাদের সঙ্গেই রয়েছে।
আরও পড়ুনঃ “মুখ্যমন্ত্রী নয়, স্বেচ্ছাসেবী” সিঙ্ঘু বর্ডারে কৃষকদের পাশে অরবিন্দ কেজরিওয়াল
এদিনের সমাবেশকে দ্বিতীয় ব্রিগেড সভা বলে দাবী করেন তৃণমূল সুপ্রিমো। হাতে ধান নিয়ে জনগণের উদ্দেশ্যে বলেন, লক্ষ্মীর ঝাঁপি হাতে বলছি। কৃষকদের পাশে ছিলাম, আছি, থাকবো। আমি নন্দীগ্রাম, সিঙ্গুর, নেতাই আন্দোলন ভুলিনি। আমি দিল্লি সীমান্তে আন্দোলনরত কৃষকদের বন্ধকে সম্পূর্ণভাবে সমর্থন জানিয়েছেন তিনি।
এদিন ফের বিরোধী দলগুলির দিকে খোঁচা দিয়ে আরও একবার মন্তব্য করেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি বলেন, সিপিএম, বিজেপি এবং কংগ্রেস ঘোলা জলে মাছ ধরার চেষ্টা করছে। সরকার ভাঙছে, দল ভাঙছে তাঁরা। “সিপিএম রক্ষক, বিজেপি ভক্ষক, কংগ্রেস তক্ষক”, মেদিনীপুরের মঞ্চ থেকে সরাসরি আক্রমণ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের।
একের পর এক সরকারী সংস্থাগুলিকে বেচে দিচ্ছে কেন্দ্র সরকার। রেল বিক্রি করছে, এয়ার ইন্ডিয়া বিক্রি করছে, সেল বিক্রি করছে, কোল বেসরকারিকরণ হচ্ছে। সোমবার মেদিনীপুরের মঞ্চ থেকে বিজেপি কটাক্ষ করে মন্তব্য তৃণমূল নেত্রীর। বহিরাগতদের পক্ষে বাংলা দখল করা সম্ভব নয়, হুঁশিয়ারি মমতার। এলাকায় বহিরাগত কারা এসেছে খেয়াল রাখুন। মহাত্মা গান্ধীকে যারা হত্যা করেছে তাঁদের কাছে তৃণমূল মাথানত করবে না।
তিনি আরও বলেন, “তৃণমূল যখন প্রথম তৈরি হয়েছিল তখন অনেকে বলেছিল ছাগলে খেয়ে নেবে… কিন্তু এখন বটবৃক্ষে পরিণত হয়েছে তৃণমূল। অনেক টাকা দিয়ে ছল চাতুরি করে দলে টানার চেষ্টা করবে। কিন্তু বিজেপির মনে রাখা দরকার, বিজেপির কাছে সব থাকলেও তৃণমূলের মতো কর্মী পাওয়া সম্ভব নয়। তৃণমূলকে কিনতে পারো না, পারবে না। ৩৪ বছর ধরে এই জায়গায় এসেছি আমরা। অন্যায়কে প্রশয় দেবো না। বাংলাকে কখনোই গুজরাট হতে দেব না। সাফ বার্তা মমতার।
শুভেন্দু জল্পনার মাঝে সোমবার মমতার জনসভা ভীষণ তাৎপর্যপুর্ণ বলে মনে করা হচ্ছিল। মেদিনীপুর শহর জুড়ে রবিবার থেকেই পোস্টারে ভরে যায়। পাল্টা পড়ে “মেদিনীপুরের ভুমিপূত্র শুভেন্দু অধিকারী” –এর পোস্টার। সভামঞ্চে নন্দীগ্রামের বিধায়ককে নিয়ে বিন্দুমাত্র বাক্যব্যয় করলেন না দলনেত্রী। যদিও রাজনৈতিক মহলের মতে, শুভেন্দুকে বাইপাস করেই যে মমতা এদিনের সমাবেশের ডাক দিয়েছিলেন । আর সেখানে নিজের জনপ্রিয়তার প্রমাণও দিলেন তিনি।