গোটা দেশের মানুষকে ক্ষতিগ্রস্ত করেছে এনআরসিঃশ্রীকান্ত মাহাতো
এনআরসি ও সিএএ নিয়ে এই মুহুর্তে উত্তাল গোটা দেশের পরিস্থিতি। TheQuiry এর সঙ্গে একান্ত আলাপচারিতায় শালবনির বিধায়ক শ্রীকান্ত মাহাত।
এনআরসি ও সিএএ নিয়ে এই মুহুর্তে উত্তাল গোটা দেশের পরিস্থিতি। TheQuiry এর সঙ্গে একান্ত আলাপচারিতায় শালবনির বিধায়ক শ্রীকান্ত মাহাত।
প্রশ্নঃ এনআরসি এবং সিএএ পশ্চিমবঙ্গের মানুষের মধ্যে কতটা প্রভাব ফেলেছে?
শ্রীকান্ত মাহাতোঃ এনআরসি এবং সিএএ শুধুমাত্র পশ্চিমবঙ্গের মানুষের মধ্যে বলা ভুল হবে, গোটা দেশের মানুষকে ক্ষতিগ্রস্ত করেছে। এই এনআরসি এবং সিএএ এর মাধ্যমে দেশের মানুষের মধ্যে বিভেদ তৈরি করতে চাইছে বিজেপি। এর কোনও ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা নেই। শুধুমাত্র রাজনৈতিকভাবে ব্যবহার করতে চাইছে তাঁরা। তাই তাঁদের বিরুদ্ধে সোচ্চার হয়ে বাঁচার আন্দোলনে নেমেছে সাধারণ মানুষ। আজ অসমে প্রায় ১ লক্ষের আদিবাসী ডিটেনশেন ক্যাম্পে বন্দি রয়েছে। সেখানে যারা বন্দি তাঁদের মধ্যে কেউ লোধা, কেউ কোল, কেউ মুন্ডা, কেউ মাহাতো। শুধুমাত্র আদিবাসী মানুষ নয়, সেখানে সমস্ত ধর্মের মানুষ বন্দি রয়েছে। যাদের জমি জায়গা বলে সেরকম কিছু নেই, তাঁরাও আজ ডিটেনশন ক্যাম্পে বন্দি। এই আন্দোলন সিঙ্গুর নন্দিগ্রাম থেকে বড় আন্দোলন। এই আন্দোলন মানুষকে বাঁচিয়ে রাখার আন্দোলন।
প্রশ্নঃ শুধু কি মুসলিম সম্প্রদায়ের মানুষ আতঙ্কিত? নাকি অন্যান্য সম্প্রদায়ের মানুষও আতঙ্কিত?
শ্রীকান্ত মাহাতোঃ শুধুমাত্র মুসলিম সম্প্রদায়ের মানুষ নয়, দেশের সব ধর্মের সমস্ত মানুষ আতঙ্কিত।
প্রশ্নঃ এর বিরুদ্ধে প্রতিরোধ কিভাবে গড়ে তুলছেন আপনারা?
শ্রীকান্ত মাহাতোঃ আমরা আন্দোলনের মাধ্যমে সিএএ এবং এনআরসির প্রতিরোধ গড়ে তুলছি। আমরা সাধারণ মানুষকে বোঝানোর চেষ্টা করছি । এর ফল কি হতে পারে সেই কথাই আমরা গ্রামে-গ্রামে, এলাকায়-এলাকায় মানুষকে বলছি। আমরা মানুষের মধ্যে সচেতনতা গড়ে তোলার চেষ্টা করছি।
প্রশ্নঃ দেশের অর্থনীতি তলানিতে ঠেকেছে। জিডিপি একেবারে নিম্নমুখী। সেখান থেকেই মোড় ঘেরাতেই কি সিএএ এবং এনআরসি লাগু করতে চাইছে সরকার?
শ্রীকান্ত মাহাতোঃ ভারতবর্ষকে কোম্পানির দেশ করতে চাইছে নরেন্দ্র মোদি এবং অমিত শাহ। ঠিক যেমন ইংরেজ শাসনের ফলে বণিকের মানদণ্ড রাজদণ্ডে পরিণত হয়েছিল একইভাবে বণিকের রাজদণ্ডকে মানদণ্ডে পরিণত করতে চাইছে এই সরকার। বণিক রাজনীতি কায়েম করার চেষ্টা চলছে সারা দেশজুড়ে। বিএসএনএল, রেল থেকে শুরু করে অন্ন, বস্ত্র, বাসস্থান, জীবন জীবিকা সমস্ত কিছু কোম্পানির অধিনে পাঠিয়ে দিতে চাইছে সরকার। তাই দেশের জিডিপি এতটা কমে গিয়েছে। আজকে ভারতবর্ষের মানুষের টাকা রিজার্ভ ব্যাঙ্ক থেকে চুরি করে নিয়ে গিয়ে বিদেশে বসে রয়েছে। ডলারের মাধ্যমে টাকা ধার নিয়ে দেশটাকে আমেরিকার হাতে বিকিয়ে দেওয়ার চেষ্টা চালানো হচ্ছে। জনগণের টাকা ডাকাতি করছে। এইসব কিছু থেকেই মোড় ঘোরাতে এনআরসি এবং সিএএ আনতে চাইছে সরকার।
প্রশ্নঃ ইতিমধ্যে এনআরসি এবং সিএএ এর বিরোধিতায় সরব হয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। গ্রামগঞ্জের মানুষের কাছে আপনাদের বার্তা পৌঁছে দিতে আপনারা কি পদক্ষেপ নিচ্ছেন?
শ্রীকান্ত মাহাতোঃ আমরা গ্রামে গ্রামে গিয়ে মানুষকে বোঝাচ্ছি এনআরসির ফল কি। আমরা বৈঠক করছি। রাজনৈতিকভাবে এনআরসির বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াতে যে সমস্ত পদক্ষেপ নেওয়া দরকার। সমস্ত পদক্ষেপ নিতে রাজি আমরা।
(সাক্ষাৎকার নিয়েছেন শুভজিৎ চক্রবর্তী)