৮ তারিখে নন্দীগ্রামের সভা থেকেই মাননীয়ার প্রশ্নের জবাব দেবোঃ শুভেন্দু
দ্য কোয়ারি ওয়েবডেস্কঃ ৭ তারিখ নন্দীগ্রামে জনসভা করবেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ঠিক তার পরের দিন নন্দীগ্রামে বিজেপির পতাকায় প্রথমবার জনসভা করবেন শুভেন্দু অধিকারী। সেই জনসভায় মুখ্যমন্ত্রীর সমস্ত প্রশ্নের জবা দেবেন বলে জানিয়েছেন তিনি।
বিজেপিতে যোগদানের পর এই প্রথমবার নিজের গড়ে মিছিল করছেন বিজেপি নেতা শুভেন্দু অধিকারী। বুধবার কাঁথিতে তৃণমূলের মিছিলের পর এদিন মেচেদা থেকে কাঁথি সেন্ট্রাল বাসস্ট্যান্ড অবধি মিছিল করার পর সেখানেই সভা করবেন তিনি। বিভিন্ন জায়গা থেকে বিজেপি কর্মীরা উপস্থিত হয়েছেন এদিনের সভায় পা মেলাবেন বলে। এছাড়াও এদিনের মিছিলে উপস্থিত ছিলেন জয়প্রকাশ মজুমদার এবং বিজেপি যুব মোর্চার রাজ্য সভাপতি সৌমিত্র খাঁ।
শুরু থেকেই রাজনৈতিক মহলের প্রশ্নও ছিল, শুভেন্দু বিজেপিতে যোগ দিলে আদি বিজেপির সঙ্গে হয়তো বিবাদ হতে পারে। সেক্ষেত্রে এদিনের জনসভায় পুরোটাই নস্যাৎ করেছেন গেরুয়া শিবিরের সদস্যরা। এদিক থেকে শুভেন্দু অধিকারীর বিজেপিতে আগমণ একশো শতাংশ সার্থক হয়েছে সেটা প্রমাণ হয়ে গেল। এমনকি শুভেন্দু অধিকারীকে বলতে শোনা গেল মিছিলে মানুষের ভিড় প্রমাণ করে দিল তিনি কোনও ভুল করেননি। মানুষ তার সিদ্ধান্তকে শিলমোহর দিয়েছে জানিয়েছেন তিনি।
আরও পড়ুনঃ জানুয়ারির প্রথম সপ্তাহে নন্দীগ্রামে সভা করবেন মমতা
এদিনের সভামঞ্চে সভাবসিদ্ধ ভূমিকায় দীপ্তকন্ঠে আওয়াজ তুলতে দেখা যায় শুভেন্দু অধিকারীকে। কিন্তু এবারের আক্রমণের নিশানায় ছিলেন তারই কয়েকমাস আগেকার নিজের দল তৃণমূল কংগ্রেস। একাধিকবার শুভেন্দু অধিকারীকে বিশ্বাসঘাতক বলে কটাক্ষ করেছেন তৃণমূল নেতারা। পাল্টা শুভেন্দু বলেন, আমি নৈতিকতার দিক থেকে ঠিক থেকেছি। আমি সরকারী সমস্ত পদ থেকে ইস্তফা দিয়েছি। তারপর বিধায়ক পদ থেকে ইস্তফা দিয়েছি। এমনকি দল থেকে ইস্তফা দিয়েছি। তারপর একজন আম ভোটার হিসাবে গণতান্ত্রিক অধিকারে ভারতীয় জনতা পার্টিতে যোগদানের ইচ্ছাপ্রকাশ করেছি।
বুধবার কাঁথিতে ডরমেটরি ময়দানে বিরাট জনসভা করে তৃণমূল। সেখানে উপস্থিত ছিলেন রাজ্যের মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম এবং তৃণমূল সাংসদ সৌগত রায়। শুভেন্দু অধিকারীকে বিশ্বাসঘাতক, মিরজাফরের সঙ্গে তুলনা করেন দুই নেতা। তারই পাল্টা জবাবে শুভেন্দু অধিকারী তৃণমূলের দুই নেতাকে ‘মিনি পাকিস্তানওয়ালা মন্ত্রী’ এবং ‘অপারচুনিস্ট পলিটিশিয়ান’ হিসাবে কটাক্ষ করেন। সৌগত রায়কে উদ্দেশ্য করে শুভেন্দু অধিকারী বলেন, উপেন শেঠের মৃত্যুর পর নির্বাচনের সময় সৌগত রায়ের প্রচারের শুভেন্দু অধিকারীকে যেতে হয়েছিল। সৌগত রায়কে প্রচারের জন্য প্রয়োজন হয়নি। এমনকি সৌগত রায়ের নৈতিকতা নিয়ে প্রশ্ন তুলে শুভেন্দু অধিকারী বলেন, ১৯৯৮ সালে দক্ষিণ কলকাতায় কংগ্রেসের প্রার্থী হয়েছিলেন তিনি। তখন তৃণমূল এবং বিজেপির পতাকা নিয়ে প্রচার করছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেইসময় হাজরা মোড়ে দাঁড়িয়ে যে সমস্ত কথা বলছিলেন টেপ ক্যাসেট বাজাবো।
বুধবার তৃণমূল নেতাদের মুখে বলতে শোনা যায়, শিশির অধিকারীর কারণে একাধিকবার সুযোগ পেয়েছেন শুভেন্দু অধিকারী। তারও একাধিক খতিয়ান দেন শুভেন্দু। তবে ‘ভাইপো’ বলতে তিনি কয়লা পাচার কান্ডের সঙ্গে যুক্ত ‘লালা’ এবং গরু পাচারের সঙ্গে যুক্ত ‘এনামুল’-কে বারবার বোঝাতে চেয়েছেন সেটাও স্পষ্ট করে দেন তিনি।
শুভেন্দু অধিকারী বিজেপিতে যোগদানের পরেই রাজনৈতিক মহলের গুঞ্জন শুরু হয়েছিল। একদিকে যেমন তৃণমূলে ভাঙন ধরবে অন্যদিকে বিজেপির শক্তি বৃদ্ধি হবে। সেইসঙ্গে মেদিনীপুরে দিলীপ ঘোষ এবং শুভেন্দু অধিকারীর দাপটে একাধিক আসন পেতে পারে গেরুয়া শিবির। এদিনের সভামঞ্চ থেকে সেটাও স্পষ্ট করে দিলেন। বললেন, গোপিবল্লভপুরের দিলীপ ঘোষ এবং কাঁথির শুভেন্দু অধিকারীর যুগলবন্দি অবিভক্ত মেদিনীপুর থেকে ৩৫ টি আসন দখল করবে। এমনকি বিজেপি সারা বাংলার ২০০ এর বেশী আসন পাবে সেটাও স্পষ্ট করেছেন তিনি।