হেড়িয়ার জনসভা থেকে মমতাকে পাল্টা চ্যালেঞ্জ শুভেন্দুর
দ্য কোয়ারি ওয়েবডেস্কঃ সোমবার নন্দীগ্রামে সভা করেছেন তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মঙ্গলবারই ফের নন্দীগ্রামে পাল্টা জনসভা করলেন নন্দীগ্রামের প্রাক্তন বিধায়ক শুভেন্দু অধিকারী। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দিকে চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে দিয়ে বলেন, দু’জায়গা থেকে দাঁড়ালে হবে না। নন্দীগ্রাম থেকেই দাঁড়াতে হবে।
এদিন হেড়িয়ার সভা থেকে বিজেপি নেতা শুভেন্দু অধিকারী বলেন, মাননীয়ার সভা দেখে মনে হয়েছিল এটা হায়দ্রাবাদের আসাদুদ্দিন ওয়েইসির জনসভার মতো। একেবারে সরাসরি আক্রমণে গিয়ে বলেন, শুরু থেকেই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে হতাশাগ্রস্ত মনে হয়েছিল। ৫ বছর পর পর আসেন শুধু ভোটের সময়ে।
তিনি আরও বলেন, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কাগজ দেখে দেখে নন্দীগ্রামে শহীদদের নাম বলছিলেন। শুভেন্দু অধিকারীকে টুকলি করতে হয় না। এরপরেই এক নাগাড়ে সমস্ত শহীদ এবং যারা নিখোঁজ, তাঁদের নাম বলে গেলেন তিনি।
খনিকটা সরাসরি আক্রমণে গিয়ে শুভেন্দু বলেন, পাঠ্যপুস্তকে সিঙ্গুর আন্দোলনের কথা উল্লেখ থাকলেও নন্দীগ্রাম নিয়ে একটি লাইন উল্লেখ করেননি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। পরিবর্তে যেসমস্ত পুলিশ অফিসাররা গুলি চালিয়েছেন তাঁদের পদোন্নতি করেন মুখ্যমন্ত্রী।
আরও পড়ুনঃ শুভেন্দু অধিকারীর সভার আগে উত্তপ্ত নন্দীগ্রাম
সোমবার মঞ্চ থেকেই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় স্থির করেন এবারের বিধানসভা নির্বাচনে নন্দীগ্রাম বিধানসভা কেন্দ্রে প্রার্থী হবেন তিনি। সেই প্রস্তাবে সম্মতি দেন তৃণমূলের রাজ্য সম্পাদক সুব্রত বক্সি। মঙ্গলবার শুভেন্দু অধিকারী বলেন, বিজেপির কোনও প্রার্থী মঞ্চে ঠিক হয় না। আমরা বিজেপি করি। তৃণমূল প্রাইভেট লিমিটেড করি না।
এর আগে সোমবারই দলনেত্রীকে কার্যত চ্যালেঞ্জ করে শুভেন্দু জানিয়েছিলেন, হাফ লাখের থেকে বেশী ভোটে হারাতে না পারলে তিনি রাজনীতি ছেড়ে দেবেন। রাজনৈতিক মহলের মতে, সোমবার তেখালির মোড়ে জনসভায় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রস্তাবকে সবাই যখন মাস্টারস্ট্রোক বলছিলেন, তখন শুভেন্দুর চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে দেওয়ায় অস্বস্তিতে পড়তে হল তৃণমূলকে।
এদিন তৃণমূল সুপ্রিমোর দিকে কার্যত চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে দিয়ে বলেন, কার ভরসায় আপনি জিতবেন? ৬২ হাজারের ভরসায়? পদ্ম তো জিতবে ২ লক্ষ ১৩ হাজারের ভরসায়। এমনকি সংখ্যালঘু ভোটারদের ৬২ হাজারের ভোট কাটবেন বলে জানিয়েছেন তিনি। প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রীর নামে লেটার হেড ছাপতে হবে আপনাকে। তৃণমূল সরকারের চলে গেলে মিথ্যাশ্রীর প্রথম পুরষ্কার মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে দেওয়া হবে বলে হুঁশিয়ারি শুভেন্দু অধিকারীর।
এদিন শুভেন্দু অধিকারীর মিছিলের আগে কার্যত রণক্ষেত্র হয়ে ওঠে পুর্ব মেদিনীপুর। অভিযোগ, খেঁজুরিতে বিজেপির ওপর হামলা চালায় তৃণমূল আশ্রিত দুষ্কৃতীরা। এমনকি কাঁথিতেও বাস ভাঙচুর করা হয় বলে অভিযোগ। আহত হন বেশ কয়েকজন বিজেপি কর্মী।
সব মিলিয়ে বাংলার রাজনীতির আলোচনার ভরকেন্দ্রে রয়েছে নন্দীগ্রাম। যার একপাশে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ওপর প্রান্তে তাঁর একসময়ের অগ্রজ সৈনিক শুভেন্দু অধিকারী। কার ওপর ভরসা রাখবে জনগণ? ইতিহাসের পাতা ওল্টাতে শুরু করেছে রাজনৈতিক মহল।