আনিসুর রহমানের মামলা প্রত্যাহারের নির্দেশিকা রাজ্য কীভাবে দেয়? প্রশ্ন আদালতের
দ্য কোয়ারি ওয়েবডেস্কঃ আনিসুর রহমানের মামলা প্রত্যাহারের নির্দেশিকা খারিজ করল কলকাতা হাইকোর্ট। ইতিমধ্যে ছেড়ে দেওয়া হলে ফের গ্রেফতার করতে হবে আনিসুরকে।
আগে জামিনের বিরোধিতা করে হঠাৎ কেন প্রত্যাহার? রাজ্য সরকারের এই নির্দেশিকা স্পষ্ট নয় বলে জানিয়েছেন হাইকোর্ট। আদালতের তরফে জানানো হয়েছে, রাজ্য মামলা প্রত্যাহার করতে পারে তবে তার নির্দিষ্ট কারণ থাকতে হবে। এভাবে মামলা প্রত্যাহার করা যায় না।
মঙ্গলবার হাইকোর্টের বিচারপতি সব্যসাচী ভট্টাচার্যের এজলাসে মৃতের পরিবারের আইনজীবী বলেন, যে ঘৃণ্য কাজ তিনি করেছেন সেখান থেকে আনিসুরের ওপর থেকে মামলা প্রত্যাহার করে নিলে সাধারণ মানুষের আইনের ওপর থেকে আস্থা চলে যাবে।
এদিন আদালতের তরফে সাফ জানানো হয়, কোনভাবেই ইচ্ছেমতো এই নির্দেশ পালন করা যায় না। এধরনের মামলায় আদালত চোখ বন্ধ করে থাকতে পারে না।
তমলুক আদালতের নির্দেশ খারিজ করে সাফ জানিয়ে দিল কলকাতা হাইকোর্ট। মঙ্গলবার রাজ্যের আবেদনে মামলা প্রত্যাহার করে তমলুক আদালত। তমলুক আদালতের সেই আবেদন খারিজ করে দিল কলকাতা হাইকোর্ট।
আরও পড়ুনঃ করোনা সংক্রান্ত দস্তাবেজে প্রধানমন্ত্রীর ছবি নির্বাচন কমিশনে যাচ্ছে তৃণমূল
একইসঙ্গে সরকারের আইনজীবী যাতে নিজের অবস্থান স্পষ্ট রাকঝেন সেই বার্তাও আদালতের তরফে দেওয়া হয়।
এদিন তমলুক আদালতের নির্দেশের পরেই জেলা হাসপাতাল থেকে ছেড়ে দেওয়া হয় আনিসুরকে। তাঁকে স্বাগত জানাতে উপস্থিত হন অনুগামীরা। কিন্তু হাইকোর্টের নির্দেশের পর আবারও তাঁকে গ্রেফতার করে পুলিশ।
২০১৯ সালে পাঁশকুড়ার তৃণমূল ব্লক সভাপতি কুরবান শাহের খুনের ঘটনায় অভিযুক্ত হিসাবে উঠে আসে আনিসুর রহমানের নাম। তাঁকে গ্রেফতার করে পুলিশ।
কিন্তু হঠাৎ তারই বিরুদ্ধে মামলা প্রত্যাহার করার সিদ্ধান্ত নেয় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার। ২৬ ফেব্রুয়ারি রাজ্যের আবেদনে সাড়া দিয়ে তমলুক আদালর মামলা প্রত্যাহার করে নেয়। এরপর হাইকোর্টের দ্বারস্থ হন মৃত কুরবান শাহের পরিবার।
কিন্তু আনিসুরের প্রতি হঠাৎ এত সহানুভূতিশীল কেন মমতা? শুভেন্দু অধিকারী বিজেপিতে যাওয়ার পর তেখালিতে জনসভা করেছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেখানেই আনিসুরের নাম উল্লেখ করে তিনি বলেন তাঁর ওপর অত্যাচার করে জেলে রেখে দিয়েছে।
খানিকটা স্মৃতিচারণ করে নন্দীগ্রামের জমি আন্দোলনের সময় আনিসুরের নাম উল্লেখ করে মমতা বলেন, সেদিন ওরা কিছুতেই আমাকে নন্দীগ্রামে যেতে দিচ্ছিল না। আমি তখন এক সহকর্মীকে বলি বাইক বা স্কুটার আনতে। ওর নাম আনিসুর।
আনিসুরের ওপর থেকে মামলা প্রত্যাহারের বিষয়ে রাজনৈতিক যোগ দেখছে রাজনৈতিক মহল। অনেকেই মনে করছেন এবারের নির্বাচনের আগেই আনিসুরকে তৃণমূলে আনতে মরিয়া শাসক দল। তাই তাঁর ওপর থেকে মামলা পরত্যহার করে নেওয়া হচ্ছে।