শিশির অধিকারীর দলবদল সময়ের অপেক্ষা, মত তৃণমূলের একাংশ
দ্য কোয়ারি ওয়েবডেস্কঃ কাঁথির শান্তিকুঞ্জই যেন এখন যেন সব অশান্তির মূলে। শাসকশিবিরের ঘাম ঝড়াতে এই শান্তিকুঞ্জের ৪ বাসিন্দা উঠে পড়ে লেগেছেন। শান্তিকুঞ্জ থেকে প্রথম শুভেন্দু অধিকারীর গেরুয়া পতাকা হাতে তুলে নেওয়ার পরই পাল্টাতে শুরু করে রাজনৈতিক সমীকরণ। উত্তর-দক্ষিণ সর্বত্রই তাসের ঘরের মত ভেঙে পড়তে শুরু করেছে শাসকদল।
গঙ্গার বুকে বয়ে গিয়েছে অনেক জল। সমস্ত রাজনৈতিক দলের এখন একটাই টার্গেট নীলবাড়ি দখল। শুভেন্দু বিজেপিতে যোগ দেওয়ার পর গেরুয়া বাহিনী বঙ্গযুদ্ধে বাড়তি অক্সিজেন পেয়েছে একথা নিশ্চিত। শুভেন্দুর পর সৌমেন্দুও দাদার পদাঙ্ক অনুসরণ করলেও বাবা শিশির অধিকারী ও আরেক ভাই দিব্যেন্দু অধিকারীকে নিয়ে ধোঁয়াশা কাটছেনা তৃণমূলের।
তবে শিশির অধিকারী আগেই স্পষ্ট করে দিয়েছেন তিনি ছেলেদের বিরুদ্ধাচরণ করবেন না।একাধিকবার তোপ দেগেছেন শাসকদলকে। সাম্প্রতিক কালে মেদিনীপুরের একের পর এক জনসভায় গিয়ে যেভাবে অধিকারী পরিবারকে নিশানা করে আক্রমণ শানিয়েছেন শাসক শিবিরের নেতারা তা নিয়েও ক্ষোভ উগড়ে দিতে পিছপা হননি বর্ষীয়ান সাংসদ শিশির অধিকারী।
তাদের প্রতি আক্রমণ করা হলে তিনিও ছেড়ে কথা বলবেন না। বুধবার একথা আরও একবার মনে করিয়ে দিয়েছেন শিশিরবাবু। তাঁর কথায়, বাড়ির সামনে মাইক বাজিয়ে রীতিমত গালিগালাজ করা হচ্ছে। সিপিএম-কংগ্রেসের নেতারাও যা এতদিন করেনি তৃণমূল সেটাই করছে। তাঁর আরও অভিযোগ শাসক শিবিরের কিছু নিকৃষ্টমানের নেতা আছে যারা বাধ্য করেছে শুভেন্দুকে দল ছাড়তে।
নাম না করে তিনি বলেন “ঘরে বসে তৃণমূলের মিটিং শুনছিলাম। একজন এসে শুভেন্দুকে উদ্দেশ্য করে বলছিল, আমি দাঁড়িয়ে আছি তোর বাড়ির ৫ কিলোমিটারের মধ্যে। ক্ষমতা থাকলে তোর বাপকে ডেকে নিয়ে আয়। আসলে সেদিনই মেদিনীপুরের মানুষ বুঝে গেছে কার হাতে থাকলে বিপন্ন হবে মেদিনীপুর। হিন্দু একান্নবর্তী পরিবারে থেকে ছেলের অমঙ্গল তো চাইতে পারব না।”
করোনার পর দীর্ঘদিন ঘরবন্দি শিশির অধিকারী। ছেলেরা তাঁকে নিষেধ করেছেন ঘর থেকে বেরোতে। কয়েকদিন আগে করিয়েছেন ছানি অপারেশনও। তাই রাজনীতির ময়দান থেকে কিছুদিন বিশ্রাম নিয়েছেন তিনি।
তবে মেদিনীপুর জুড়ে শান্তিকুঞ্জের বাকি দুই সদস্য সরকারী সহ দলের যেসব পদে ছিলেন সেখান থেকে ইতমধ্যেই তাদের সরিয়ে দেওয়া হয়েছে।তৃণমূল মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায় সাফ জানিয়ে দিয়েছেন উনি বর্ষীয়ান সাংসদ। মন আর শরীর দুটোকে একজায়গায় রেখে রাজনীতি করা উচিত। উনি ঠিক করুন কী করবেন। মানুষ সবই বুঝতে পারছেন।
বকলমে এটা কার্যত পরিস্কার যে শিশির অধিকারীর বিজেপি যোগ কার্যত সময়ের অপেক্ষা। তাই একপ্রকার শুভেন্দু-সৌমেন্দু বাদে অধিকারীর পরিবারের বাকি দুই সদস্যকে মাইনাস করেই বিধানসভা নির্বাচনের লড়াই সুনিশ্চিত করে ফেলেছে শাসকদল।
রাজনৈতিক মহলের মতে, শিশির বাবুর বয়স প্রায় ৮০ বছর। এই বয়সে রাজনীতির ময়দানে এসে তিনি যদি জার্সি বদল করেন কোনোভাবেই রাজ্যের মানুষ তা বরদাস্ত করবেন না। সম্ভাবনা রয়েছে তিনি হয়ত বিজেপিতে যোগ দিয়ে ওড়িশার রাজ্যপাল পদটি পেতে পারেন। শিশির অধিকারীর দলবদল শুধু সময়ের অপেক্ষা মাত্র।