নির্বাচন ঘোষণা হতেই তোলপাড় মালদহ, জেলাপরিষদের প্রায় ২১ জন বিজেপির পথে

দ্য কোয়ারি ওয়েবডেস্কঃ প্রার্থী ঘোষণার পর থেকেই মালদায় চলছিল প্রার্থীদের নিয়ে ক্ষোভ। বিশেষ করে হাবিবপুর তৃণমূল প্রার্থী সরলা মুর্মুকে নিয়ে অভিযোগ ছিল তিনি নাকি তলায় তলায় বিজেপির সঙ্গে যোগাযোগ রেখে চলছেন।

রবিবার রাত্রে সেই অভিযোগ আরও স্পষ্ট হয়। জানা যায় কলকাতায় যোগদান মেলায় পদ্ম শিবিরে যোগদান করতে রওনা দিয়েছেন তৃণমূল প্রার্থী। অবস্থায় চরম অস্বস্তির মধ্যে পড়ে তৃণমূল। তাই সকাল হতেই হাবিবপুরে তৃণমূল কংগ্রেস প্রার্থী বদল করা হল। এ

দিন তৃণমূলের তরফে প্রেস বিবৃতিতে জারি করে এই বদলের খবর জানানো হয়েছে। বলা হয়েছে শারীরিক অসুস্থতার জন্যই তাঁকে প্রার্থী পদ থেকে সরানো হল। এদিন তার বদলে প্রদীপ বাস্কেকে তৃণমূল প্রার্থী হিসাবে নাম ঘোষণা করা হয়।

তৃণমূল এ কথা বললেও বাস্তব চিত্র অন্য। এদিনই কলকাতার হেস্টিংসে বিজেপিতে যোগ দিচ্ছেন মালদা জেলা পরিষদের একাধিক সদস্য। সেই তালিকা রয়েছে তৃণমূল প্রার্থী সরলা মুর্মুর নামও।

পশ্চিম বাংলার বুকে এমন ঘটনা ঘটেনি, যে দলের প্রার্থী হয়ে কেউ দলে যোগদান করেছেন। কিন্তু এমন ঘটনাই বাস্তবে ঘটতে চলেছে আজ। যার ফলস্বরূপ এদিন প্রার্থী বদল করতে হল রাজ্যের শাসক দলকে।

পেট্রোপণ্যের মূল্যবৃদ্ধির ইস্যুতে উত্তাল সংসদ, দীর্ঘ সময় মুলতুবী রাজ্যসভা

ওয়াকিবহাল মহলের একাংশ মনে করছে, বরাবরই সরলা মুর্মু নিজেকে হেভিওয়েট মনে করেন। কার্যত মন্ত্রীর মতোই তাঁর চলনবলন, হাঁকদর, দাপট। আর তাই নিজের ইচ্ছাকেই প্রাধান্য দেন তিনি। দলের ইচ্ছা গুরুত্ব পায় না তাঁর কাছে।

তাই দল তাঁকে টিকিট দিলেও তা তাঁর পছন্দ হয়নি। সেই না পসন্দের জেরেই এবার তিনি দলই ছেড়ে দিচ্ছেন। ঘাসফুল ছেড়ে চলে যাচ্ছেন তিনি পদ্মবনে। সেখান থেকেই মিলবে নিজের ইচ্ছা মতো আসনে দাঁড়িয়ে ভোটে লড়াই করার সুযোগ।

সরলা মুর্মূ মালদা জেলা পরিষদের সভাধিপতি ছিলেন। জিতেছিলেন কংগ্রেসের টিকিটে ২০১৩ সালে। কিন্তু ২০১৬ সালে তিনি চলে আসেন তৃণমূলে। ২০১৮ সালে তৃণমূল তাঁকে জেলা পরিষদের আসনে টিকিট দিলেও আর জেলা পরিষদের সভাধিপতি করেনি। তা নিয়ে ক্ষোভ ছিল সরলার।

সেই ক্ষোভ মেটাতেই চেয়েছিলেন দল তাঁকে টিকিট দিক বিধানসভায় লড়াই করের জন্য। সেই আবদার অবশ্য রেখেছিল তৃণমূল নেতৃত্ব। দেওয়া হয়েছে তাঁকে আদিবাসী অধ্যুষিত তপশিলী উপজাতিদের জন্য সংরক্ষিত হব্বিবপুর আসনটি থেকে দলের টিকিট।

কিন্তু সেই আসন না পসন্দ সরলার। তাঁর চাই পুরাতন মালদা আসনটি যা কিনা সংখ্যালঘু অধ্যুষিত। কিন্তু দল সেই আসনে তাঁকে টিকিট দেয়নি। তাই রাগে এবার তিনি পা বাড়িয়েছেন বিজেপির পথে।

সংসদের অধিবেশন স্থগিতের দাবিতে চিঠি তৃণমূলের

অন্য়দিকে ৩৩ টি আসন বিশিষ্ট মালদহে জেলা পরিষদের ৬ আসন বিজেপির দখলে ছিল। এবার আরও ২১ জন বিজেপি গামী হলে বিধানসভা নির্বাচনের আগেই মালদহ জেলা পরিষদ বিজেপির দখলে চলে যাবে। সেক্ষেত্রে মালদহে বিধানসভা নির্বাচনের ফল যে গেরুয়া শিবিরের পাল্লা ভারী করবে বলেই মনে করছেন রাজনৈতিক  বিশেষজ্ঞরা।

সম্পর্কিত পোস্ট