দলবদলের উল্টো স্রোতে হেঁটে তৃণমূলে প্রাক্তন কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী যশবন্ত সিনহা
দ্য কোয়ারি ওয়েবডেস্কঃ নির্বাচনের আগে বড় সাফল্য তৃণমূলের। শনিবার তৃণমূল কংগ্রেসে যোগ দিলেন অটল বিহারী বাজপাই এর আমলে অর্থমন্ত্রী যশবন্ত সিনহা।ভোটের আগে যখন তৃণমূল ছেড়ে বিজেপি শিবিরে যোগ দেওয়ার জন্য নেতাদের হিড়িক লক্ষ্য করে যাচ্ছে, ঠিক তখন প্রাক্তন কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রীর হাত ধরে বাংলার মানুষ দেখল এক উল্টো ছবি।
এদিন বাইপাসের ধারে তৃণমূল ভবনে সুব্রত মুখোপাধ্যায়, সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায় এবং ডেরেক ও’ব্রায়েন তাঁকে দলে স্বাগত জানান। তার আগে অবশ্য দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে এক প্রস্থ আলোচনা ও ছাড়েন তিনি।
যোগদানের মঞ্চে এদিন সুব্রত মুখোপাধ্যায় জানান, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নিজে যশবন্তকে দলে স্বাগত জানাতে চেয়েছিলেন। কিন্তু অসুস্থতার জন্য আসতে পারেননি তিনি। তৃণমূলে যোগ দিয়ে যশবন্ত তৃণমূলকে আরও সমৃদ্ধই করলেন।
উল্লেখ্য, রাজ্যের শাসক দলসূত্রে জানা গিয়েছে, যশবন্তকে জাতীয় রাজনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব দিতে পারেন তৃণমূলনেত্রী। দীনেশ ত্রিবেদী তৃণমূল ছাড়ার পর যে শূণ্যতা তৈরি হয়েছিল সেই শূণ্যস্থানও যশবন্তকে দিয়ে পূরণ করে নিতে চাইছে তৃণমুল।
সেক্ষেত্রে আগামী দিনে দীনেশের ছেড়ে যাওয়া রাজ্যসভার আসনেও যশবন্তকে দেখা যেতে পারে বলে ওয়াকিবহাল মহল মনে করছে।তৃণমূলে যশবন্তের যোগদান অন্যক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠতে চলেছে। বিশেষ করে জাতীয় রাজনীতিতে এই ঘটনা ভালোরকম প্রভাব পড়তে চলেছে।
শেষ চালে মুম্বইয়ের বাজিমাত, কুপকাত এটিকে মোহনবাগান
এক তো বাজপেয়ীজির আমলের বেশ কিছু বিজেপি নেতানেত্রী মোদি জমানায় কার্যত চূড়ান্ত কোনঠাসা অবস্থায় রয়েছেন। তাঁদের অনেকেই সঙ্ঘের সঙ্গে জড়িত নয়, আবার অনেকে সঙ্ঘের সঙ্গে জড়িত। আবার কংগ্রেসেও এমন অনেক নেতা আছেন যারা দীর্ঘদিন ধরে কংগ্রেসে থেকে গেলেও এখন ক্রমশ কোনঠাসা হয়ে পড়ছেন দলে।
এদের অনেকেই বিজেপির দিকে পা বাড়াতে চাইছেন না, কিন্তু বিকল্প কোনও মঞ্চও খুঁজে পাচ্ছিলেন না। যশবন্তের তৃণমূলে যোগদান কার্যত সেই মঞ্চের দরজা খুলে দিল। আগামি দিনে তাই বিজেপি ও কংগ্রেসের বেশ কিছু নেতাকে তৃণমূলে যোগ দিতে দেখলে অবাক হওয়ার কিছু থাকবে না।
প্রসঙ্গত বিজেপির এই প্রবীণ প্রাক্তন নেতা মোদি শাহের ‘স্বেচ্ছাচারিতার’ বিরোধিতা করে ২০১৮-য় বিজেপি ছেড়ে বেরিয়ে আসেন। এ দিন তৃণমূলের পতাকা হাতে তুলে নিয়ে তিনিই বলেন, ‘‘মোদি-শাহের সরকার এই মুহূর্তে দেশে স্বেচ্ছাচার চালাচ্ছে। এদের বাধা দেওয়ার মতো কেউ নেই। দেশের গণতন্ত্র আজ বিপন্ন। এক অদ্ভুত পরিস্থিতির মধ্যে দিয়ে যাচ্ছে দেশ। সমস্ত প্রতিষ্ঠান দুর্বল হয়ে পড়েছে। গণতন্ত্র বজায় রাখতেই একজোট হওয়া প্রয়োজন। তাই বাইরে থেকে নয়, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে থেকেই আমি মোদি সরকারের বিরুদ্ধে লড়াই করতে চাই’’
এ দিন যশবন্ত সিনহা অষ্ট ভাষায় জানিয়ে দেন, অটল বিহারি বাজপেয়ী সরকারের আমলে যে বিজেপি ছিল, আজকের বিজেপি তার চেয়ে অনেক আলাদা, অনেক বেশি ব্যক্তিকেন্দ্রিক।
তিনি বলেন, ‘‘অটলজি কখনো তার জোট সঙ্গীকে দুর্বল করার চেষ্টা করেননি। বরং তাদের সঙ্গে নিয়ে চলার কথা সব সময় বলেছেন।’’
তিনি আরও বলেন বলেন, ‘‘অটলজির সময়কার বিজেপি-র থেকে এখনকার বিজেপি অনেক আলাদা। এখন বিজেপি বাকিদের পদানত করতে চায়। যে কারণে শিবসেনা, অকালি দলের মতো শরিকরা ছেড়ে চলে গিয়েছে। পুরনোদের মধ্যে একমাত্র নীতীশ কুমারই রয়েছেন। মমতাজি আর আমি দু’জনেই অটলজির সংসারে ছিলাম। কান্দাহার বিমান ছিনতাইয়ের সময় নিজেকেই পণবন্দী করতে চেয়েছিলেন মমতা।’’