নন্দীগ্রামে ভূমি আন্দোলনে জড়িত অধিকারী পরিবারের বিরুদ্ধে কেস নেই কেন? প্রশ্ন তৃণমূল সুপ্রিমোর
দ্য কোয়ারি ওয়েবডেস্কঃ ১ এপ্রিল রাজ্যের দ্বিতীয় দফার ভোট। সেদিন ভোট রয়েছে নন্দীগ্রামেও। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বনাম শুভেন্দু অধিকারী। একেবারে হাইভোল্টেজ লড়াই হতে চলেছে নন্দীগ্রামে। তার আগেই আজ শেষ মুহুর্তের প্রচারে সোমবার নন্দীগ্রামে একের পর এক ঝোড়ো ইনিংস খেলে চলেছেন তৃণমূল প্রার্থী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। পিছিয়ে নেই বিজেপি প্রার্থী শুভেন্দু অধিকারীও।
আজ নন্দীগ্রামে ঠাকুরচক, বয়াল ২ নম্বর পঞ্চায়েত ও আমেদাবাদ হাইস্কুলের মাঠে পরপর ৩টি জনসভা করবেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তার আগে রেয়াপাড়া ক্ষুদিরাম মোড় থেকে ঠাকুরচক পর্যন্ত ৮ কিলোমিটার দীর্ঘ পথ হুইলচেয়ারে রোড শো করছেন তৃণমূল সুপ্রিমো।
গতবার নন্দীগ্রামে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের আক্রান্ত হওয়ার কথা মাথায় রেখেই এবারে রোড শো ঘিরে ছিল আঁটোসাঁটো নিরাপত্তা। একদিকে মুখ্যমন্ত্রী যখন রোড শো করে ঠাকুরচকে পৌঁছন। ঠিক তখনই শুভেন্দু অধিকারীও গ্রামের মাঠ ধরে হেঁটে প্রচারপর্ব সারেন।
ঠাকুরচকের সভামঞ্চ থেকে এদিন বিজেপি সহ অধিকারী পরিবারকে তীব্র নিশানা করেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এদিন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় মহিলাদের উদ্দেশ্যে বলেন, সারা বাংলায় ভোট চলছে। আমার এক পায়ে চোট আছে ঠিকই, কিন্তু আরেকটা পা ভালো আছে। হ্যাঁ, এক পায়ে চোটের কারণে প্রেসার ফল করে পড়ে যেতে পারি! কিন্তু আমার মনে হল, মা-বোনেরা যদি এত কষ্ট করে আসতে পারে, তাহলে আমিও যেভাবে পারি যাবই।
নন্দীগ্রামে তৃণমূল বিজেপি সংঘর্ষ নিয়ে তীব্র আক্রমন করেন মমতা। তাঁর কথায়, বিরুলিয়ায় মিটিংয়ের পর বিহার না উত্তরপ্রদেশের গুন্ডাবাহিনী গুন্ডামি করতে যায়। একটা ছেলের হাত ভেঙে দিয়েছে। সে নন্দীগ্রাম হাসপাতালে ভর্তি। ৪-৫টা বাইক আটকানো হয়েছে।
Corona: করোনার দ্বিতীয় ঢেউ বাড়াচ্ছে উদ্বেগ
এদিন বিজেপিকে নিশানা করেই পাল্টা প্রশ্ন করেন তিনি। নির্বাচন গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে হলে গুন্ডামি কেন? গুন্ডামি করে কারা? যারা ম্যাচের আগেই ম্যাচ হেরে বসে আছে। অন্যদের গুন্ডামি করার প্রয়োজন পড়ে না।
তথ্য পেশ করে তৃণমূল সু্প্রিমো জানান, এই কদিনে ৩ জন তৃণমূল কর্মী খুন হয়েছেন। বিজেপির একজন কোচবিহারে আত্মহত্যা করেছে। তাই নিয়ে মিথ্যে কথা বলে মিছিল করছে ওরা।
বিজেপির টুইট প্রতিবাদ প্রসঙ্গে তিনি ব্যাঙ্গাত্মক স্বরে বলেন, শাহ টুইট করে বলছেন, বাংলার কী হাল! উত্তরপ্রদেশ, গুজরাট, রাজস্থানের কী হাল! মিথ্যে কথা বলে টুইট করে ওরা।
নন্দীগ্রাম প্রসঙ্গে এদিন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, নন্দীগ্রাম আমি দিয়েছিলাম। কারণ নন্দীগ্রামটা আমার খুব প্রিয়। এদিকে আন্দোলনের সময় বাপ-বেটা কাউকে দেখা যায়নি। যাঁরা সেদিন খুন করল, সিপিআইএমের হার্মাদ, তাঁরা আজকে বিজেপিতে। আর গদ্দার তাদের নেতা।
West Bengal Election: প্রয়াত উত্তর দমদমের বিজেপি কর্মীর মা
অধিকারী পরিবারকে নিশানা করে তৃণমূল সুপ্রিমো আক্ষেপের সুরে বলেন, এটা আমার দোষ। আমি ভাবতেও পারিনি, এই ছেলেটাকে আমি সেচমন্ত্রী করেছি, বাবা-ভাইকে পদ দিয়েছি।একজনের ১০টা পদ! এতকিছু করার পর এখন অনেক টাকা হয়ে গিয়েছে। তাই বিজেপি করছে। টাকা বাঁচাতেই বিজেপি তাই বন্ধু হয়েছে এখন।
“নন্দীগ্রামে ভূমি আন্দোলনে জড়িতদের বিরুদ্ধে কেস করা হয়েছে। সেই কেসে স্থগিতাদেশ দেয় আদালত। পরে ওরা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয়ে কেস শুরু করে। এখন সুপ্রিম কোর্টে সেই কেস চলছে। একমাত্র অধিকারী পরিবারের নামে কোনও কেস নেই। কেন নেই? সেদিন পুলিসকে ওরা ডেকে নিয়ে এসেছিল।”এদিন সেই প্রশ্নও করেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।