নির্বাচনী সভা থেকে বিজেপিকে তোপ মমতার, ঘরের ছেলেতেই ভরসা রাখার আবেদন
দ্য কোয়ারি ওয়েবডেস্কঃ চতুর্থদফার প্রচারে নেমে কলকাতায় দুটি জনসভা করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এর প্রথমটি যাদবপুরে ও পরবর্তী সভা করেন টালিগঞ্জে। দুটি সভা থেকেই মোদি সরকারকে তুলোধোনা করলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
ভোট প্রচারে যাদবপুরে গিয়ে মমতা বলেন, বিজেপি শুধু মিথ্যা কথা বলে। বিজেপি দূঃশাসন, ভ্রষ্টাচার, অপদার্থের দল। ইলেকশনের সময় এখন বাংলায় আসছে।লোকসভা নির্বাচনে ১৮ টা সিট চোট্টামি করে নিয়েছিল বিজেপি। এবার বাংলার মানুষ সব বঞ্চনার জবাব দেবে।
বুধবার রাজ্যে প্রচারে এসে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ দাবি করেছেন, প্রথম তিন দফায় ৯১টি আসনের মধ্যে ৬৩ থেকে ৬৮টি আসনে জয়ী হবে বিজেপি । তবে এ দিন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, প্রথম তিন দফার ভোটে ২৫ থেকে ৩০টি আসনে জয়ী হতে পারে বিজেপি।
মুখ্যমন্ত্রী বলেন, গুজরাতের লাভলি দাদা বাংলা ৯১ টি কেন্দ্রে ভোট হয়েছে বলছেন ৬৮ থেকে ৭০ টি আসন পাবেন।এর আগে ছত্রিশগড়ে ৬৫সিটে জিতবে বলেছিল পেয়েছিল ১৫ সিট। তিনি বলেন, আগামী দিনে আমরাই সরকার গড়ব।
ভোট পরবর্তীতে প্রয়োজনে মমতাকে সমর্থন, জানালেন অধীর
প্রথম দুই দফায় জঙ্গলমহলের জেলাগুলিতে ভোট হয়েছে। যেখানে লোকসভা নির্বাচনে একতরফা ফল করেছিল বিজেপি। এ ছাড়াও পূর্ব মেদিনীপুরে শুভেন্দু এবং শিশির অধিকারী শিবির বদল করায় ওই জেলাতেও অনেক হিসেব বদলে যেতে পারে বলে আশাবাদী বিজেপি নেতৃত্ব।
তৃণমূল নেতৃত্ব অবশ্য বার বারই দাবি করেছেন, লোকসভা নির্বাচনের সঙ্গে বিধানসভার ফল মিলবে না। জঙ্গলমহলেও এবার ঘুরে দাঁড়াবে তৃণমূল। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় অবশ্য দাবি করেছেন, পরবর্তী দফাগুলিতে মানুষ যাতে বিভ্রান্ত হয়ে বিজেপি-কে ভোট দেয়, সেই উদ্দেশ্যেই বিজেপি অধিকাংশ আসন পাবে বলে দাবি করছেন অমিত শাহ।
তৃণমূল নেত্রী বলেন, এর আগে ছত্তীসগড়, দিল্লির মতো রাজ্যেও বিধানসভা নির্বাচনের সময় একই ধরনের দাবি করেছিলেন অমিত শাহ সহ বিজেপি নেতারা। কিন্তু ওই সব রাজ্যে বিজেপি-র ফল যথেষ্ট খারাপ হয়।
মুখ্যমন্ত্রী বলেন, বিজেপি এখন দিনে রাতে মিথ্যে কথা বলছে। এরা পারে না এমন কোনও কাজ নেই। এদের কাছে ৫ কোটি ১০ কোটি কোনো ব্যাপার নয় । সিপিএম বিজেপি সঙ্গে আন্ডারস্ট্যান্ডিং করে চলছে। যারা বিজেপির হয়ে তান্ডব করছে তারা আগে সিপিএমের হার্মাদ ছিল।
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় দাবি করেন কন্যাশ্রী সারা বিশ্বের মধ্যে এক নম্বরে পৌঁছেছে। বাংলাতে সহ্য করতে পারে না বিজেপি। বাঙালীদের সহ্য করতে পারে না। এখনও অবাঙালিরাও ওদের সহ্য করতে পারছে না। এদিন যাদবপুরের সভা থেকেও তৃণমূলকে ২০০ আসন জেতানোর ডাক দেন মমতা।
মমতা বলেন, আমি একা জিতে তো লাভ নেই। আমরা ভোট হয়ে গিয়েছে। আমি যেখানে দাঁড়াব সেখানেই জিতব। আমি এখানে দাঁড়ালে এখানেই জিততাম। আপনারাই আমাকে ভোট দিয়ে দিতেন। এটা সিডিউল কাস্ট সিট, তাই আমি চাইলেও দাঁড়াতে পারব না, পদবির ব্যাপার আছে। আমি একা জিতে তো সরকার গঠন করতে পারব না।এরপরেই তিনি বলেন,২৯৪-এর মধ্যে মিনিমাম আমার ২০০ চাই।
ভোট কিনতে কুপন বিলির অভিযোগ বিজেপির বিরুদ্ধে, নির্বাচন কমিশনে তৃণমূল
এদিকে,এদিন টালিগঞ্জে বহিরাগত বাবুলের বদলে অরূপকে জেতানোর ডাক দিলেন মমতা। যদিও একবারও বাবুলের নাম উল্লেখ করেন নি তিনি। পরোক্ষে তিনি বলেন,টালিগঞ্জে লোকাল কেউ ছিল না! বহিরাগতকে নিয়ে আসতে হল! স্থানীয়দের সঙ্গে গলা মিলিয়ে স্লোগান তুললেন, হায় হায় এ কী হল! আসানসোল থেকে পালিয়ে এল!
কিন্তু কেন বাবুল সুপ্রিয়কে এ হেন আক্রমণ! মমতার যুক্তি, শিল্পী হিসেবে সম্মান দিই। কিন্তু অত্যন্ত নীচু স্তরের কথা বলে, রাজনীতি জায়গা নেই। এদিন বাবুলদের জনসংযোগের চেষ্টাকেও বিঁধলেন মমতা। তাঁর কথায়, এরা কারা! এক কাপ চা খেলে লোক ভোট দেবে! ৩৬৫ দিন কাজ করবে ঘরের ছেলে! লজ্জা করে না ভোট চাইতে!