মমতায় আস্থা কাননের ! বৈশাখী সন্ধ্যায় সমীকরণের নতুন ইঙ্গিত
দ্য কোয়ারি ওয়েবডেস্কঃ নির্বাচন শেষ। ২০১৯-র লোকসভা নির্বাচনের ব্যর্থতা কাটিয়ে ২০২১-র নির্বাচনে গোটা রাজ্যে মমতা ম্যাজিক। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ছাড়াও এই জয়ের অন্যতম কান্ডারী অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। সেই সঙ্গে যার কথা না বললেই নয় তিনি প্রশান্ত কিশোর। যারা বুদ্ধিতেই গোটা নির্বাচনে এক একটি পা অতি সন্তর্পণে ফেলেছেন দলনেত্রী সহ দলের অন্যান্য নেতৃত্বরা।
তবে সেখানেই তাল কেটেছে অনেকেরই। তৃণমূল কংগ্রেস এখন আর পরিবার নেই। তোপ দেগে মান-অভিমানে জর্জরিত হয়ে দল ছেড়েছেন একদা মমতা ঘনিষ্ঠ অনেকেই। তারা যে এভাবে নির্বাচনের মুখে দলকে ডোবাতে পারেন, সেকথা স্বয়ং নিজেও বিশ্বাস করতে পারেন তৃণমূল সু্প্রিমো।
তবে পিছু হটেননি কখনই তিনি। দৃপ্ত কন্ঠে আত্মবিশ্বাসী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় চষে বেড়িয়েছেন গোটা রাজ্য। নন্দীগ্রামে রেয়াপাড়ায় প্রচারে গিয়ে আক্রান্ত হওয়ার পর গোটা নির্বাচনটাই তাঁর কেটেছে হুইলচেয়ারে। কটাক্ষ করতে এক ইঞ্চি জমি ছাড়েননি দলবদলু নেতৃত্বরাও।
সেসব কিছুকে পিছনে ফেলে করোনা পরিস্থিতিতে চালিয়ে গিয়েছেন প্রচার। যাবতীয় ফল মিলল ২ মে হাতেনাতে। ২০০-র বেশি সিট নিয়ে গোটা রাজ্যে যখন জয়জয়কার তৃণমূলের তখনই দলত্যাগীদের উদ্দেশ্যে সুর নরম করলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে জানালেন, “কেউ আসতে চাইলে আসুক না। ওয়েলকাম।“
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের এই মনোভাব সামনে আসতেই তৃণমূল ও বিজেপির অন্দরে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে বিধানসভা নির্বাচনের আগে যে ট্রেন্ড দেখা গিয়েছিল, তার উলটপূরানের কী ফের সাক্ষী হতে চলেছে বাংলা?
সবাই ফোন করলেও ফোন পাননি প্রধানমন্ত্রীর, জানালেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়
তবে কালীঘাটের অন্দরমহলের থেকে যে গুঞ্জন উঠেছে তাতে সেই তালিকায় এক নম্বরে রয়েছে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ঘনিষ্ঠ শোভন চট্টোপাধ্যায় ও বৈশাখী বন্দ্যোপাধ্যায়ের।
২০০-র বেশী আসনে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে জয়ের শুভেচ্ছা জানিয়েছেন বৈশাখী বন্দ্যোপাধ্যায়। কুর্নিশ জানিয়েছেন সমস্ত বাধা-বিপত্তির সামনে তাঁর লড়াকু মনোভাবকে। শোভনের নিরাপত্তা প্রত্যাহার না করায় তৃণমূল সুপ্রিমোর কাছে কৃতজ্ঞতা প্রকাশও করেন বৈশাখী।
বৈশাখীর কথায়, নন্দীগ্রামে মমতার হার আসলে হার নয়। তৃণমূলের ভাষাতেই বৈশাখী বলেন, ২৯৪ আসনেই প্রার্থী মমতা ছিলেন। তাছাড়া নন্দীগ্রামে দাঁড়িয়ে মমতার লড়াইটাই একটা জয়। সেই সঙ্গে নিজেদের রাজনৈতিক ভবিষ্যত নিয়ে উস্কে দিয়েছেন জল্পনা।
রাজনীতি সম্ভাবনার শিল্প তাই আগামীদিমনে তাদের রাজনৈতিক মোড় কোন দিকে ঘুরবে সেটা এখনি বলা সম্ভব নয়। একইসঙ্গে বৈশাখী বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়েছেন রাজনৈতিক কেরিয়ার বাছাই করতে যে সিদ্ধান্ত শোভন চট্টোপাধ্যায় নেবেন তিনি তাতেই সহমত পোষণ করবেন তিনিও।
দলত্যাগীরা ফিরতে চাইলে স্বাগত, জানালেন মমতা
উল্লেখ্য, বিজেপিতে যোগদানের পরেও দীর্ঘ দেড় বছরেরও বেশী সময় তাদের সক্রিয় ভূমিকা দেখা যায়নি। ভোটের মুখে ফের তারা সক্রিয় হয়ে ওঠেন। কলকাতার দায়িত্ব দেওয়া হয় তাঁকে। তবে প্রার্থী তালিকায় শোভন-বৈশাখীর নাম না থাকায় ফের অভিমানের পর্ব শুরু হয়।
এবারে অবশ্য তাদের মান ভাঙাতে সক্রিয় হননি গেরুয়া নেতৃত্বরা। কার্যত এটা বুঝিয়ে দিয়েছিলেন যে, তারা বিরক্ত শোভন-বৈশাখীর নিত্য মান-অভিমানের গেরোয়। ভোটের ফলে দেখা যায় একদা শোভনের গড়ে জয়ের মুকুট উঠেছে এবার রত্না চট্টোপাধ্যায়ের মাথায়।
আগমীদিনে এই দুই অভিন্ন হৃদয় বন্ধুর রাজনৈতিক ভবিষ্যত কোন আবিরে রাঙিয়ে যাবে, তা শুধুই অপেক্ষা…..