রাজ্যে এখনই সম্পূর্ণ লকডাউন নয়, তবে লকডাউনের মতো সতর্কতা দরকার : মুখ্যমন্ত্রী
দ্য কোয়ারি ওয়েবডেস্কঃ করোনার দ্বিতীয় আছড়ে পড়েছে রাজ্যে। এর দাপটে কাঁপছে বাংলা। লাগামহীন সংক্রমণ কিছুতেই রোখা যাচ্ছে না। এমন অবস্থাতেও রাজ্যে সম্পূর্ণ লকডাউনের কথা ভাবছে না রাজ্য সরকার। কারণ সম্পূর্ণ লকডাউন হলে সবচেয়ে অসুবিধায় পড়বে গরিব মানুষ। তাই সোমবার মন্ত্রিসভার বৈঠক শেষে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় স্পষ্ট ভাষায় জানিয়ে দিলেন রাজ্যে সম্পূর্ণ লকডাউন জারি করা হবে না।
তবে রাজ্যের মানুষকে সম্পূর্ণ লকডাউন এর মত করে চলাফেরা করতে হবে। এদিন সাধারণ মানুষের কাছে সাহায্যের জন্য আবেদন জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। তিনি বলেন, কোভিড মোকাবিলা আমাদের অগ্রাধিকার। সাধারণ মানুষের সাহায্য ছাড়া সরকারের পক্ষে এই অতিমারীর সঙ্গে লড়াই করা একক ভাবে সম্ভব নয়।
মুখ্যমন্ত্রী এদিন সাংবাদিক সম্মেলনের শুরুতেই ধন্যবাদ জানালের রাজ্যের সাধারণ মানুষকে। মুখ্যমন্ত্রী বললেন, ‘তৃতীয়বার আমাদের ক্ষমতায় আনার জন্য মা, মাটি,মানুষকে কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি। আমরা মানুষের প্রতি কৃতজ্ঞ। সব ধর্মের মানুষ আমাদের সমর্থন করেছেন। আমরা বিভেদ চাই না, আমরা ঐক্য চাই। এই রায় শান্তি, সম্প্রীতি, উন্নয়ন, সংহতির রায়।’
রাজ্যের করোনা পরিস্থিতিতে রাজ্যের করণীয় নিয়ে সোমবার মুখ্যমন্ত্রী মুখ খোলেন । মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় স্পষ্ট জানিয়ে দেন, রাজ্যে এখনই সম্পূর্ণ লকডাউন হচ্ছে না। তিনি বলেন, ”সম্পূর্ণ লকডাউনের ঘোষণা না করে, লকডাউনের মতো সাধারণ মানুষকে আচরণ করতে হবে। কারণ সম্পূর্ণ লকডাউন হলে সাধারণ মানুষের অসুবিধা হবে। গরিব মানুষ না খেতে পেয়ে মারা যাবেন, সেটা আমরা চাই না। এমনিতেই লোকাল ট্রেন বন্ধ করা হয়েছে। বাজার , দোকান খোলার সময় বেঁধে দেওয়া হয়েছে।
তিনি বলেন, এবার রেড রোডে হচ্ছে না ঈদের নামাজ। ধর্মীয় জমায়েত, বিয়ে বাড়ি, উত্সবে জমায়েতে ৫০ জনের বেশি লোক নিয়ে না করতে বলা হয়েছে। এর জন্য প্রশাসনের অনুমতি নিয়ে অনুষ্ঠান করতে বলা হয়েছে। সবাইকে মাস্ক পরতে বলছি। হাত ধুতে বলছি ভালো করে।সবাই হয়তো স্যানিটাইজার কিনতে পারেন না, তারা হাত ধোবেন ভালো করে। বাজার থেকে সবজি কিনে গরম জলে ধুয়ে রান্না করতে হবে।’
করোনা মোকাবিলায় ত্রাণ পাঠাচ্ছে দুবাই, তৈরি ‘এয়ার ব্রিজ’
মুখ্যমন্ত্রী এদিন করোনা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে মেডিক্যাল কলেজগুলিতে যাতে অক্সিজেন সেন্টার তৈরি হয় সেই কথা বলেন। পাশাপাশি তাঁর আবেদন, বড় কর্পোরেট সংস্থাগুলো যেন এই পরিস্থিতিতে রাজ্যের পাশে এগিয়ে আসে।
মুখ্যমন্ত্রী এদিন কোরোনার টিকা ও অক্সিজেন নিয়ে কেন্দ্রীয় সরকারকেও সমালোচনা করেন। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘কেন্দ্রীয় সরকার টাকা দিয়ে সাহায্য করছে না। টিকা দিয়েও সাহায্য করছে না। তিন কোটি টিকা চেয়ে পেয়েছি মাত্র ১ লক্ষ। কেন্দ্রীয় সরকার কেন ৩০ হাজার কোটি টাকা খরচ করেও টিকা দিতে পারছে না, জানি না। সরকারের অগ্রাধিকার করোনা মোকাবিলা। ৬৪% ভ্যাকসিন যদি বিদেশে পাঠিয়ে দেওয়া হয় তাহলে কোন দেশ থেকে ভারতের চাহিদা মতো ভ্যাকসিন আনা হবে সেটা কেন্দ্রের ঠিক করতে হবে।
তাঁর কথায়, কিন্তু এর মধ্যেও কেন্দ্রীয় দল এসে রাজ্যে উত্তেজনা ছড়াচ্ছে। আমি প্রধানমন্ত্রীকে চিঠি লিখেছি কোভিড সরঞ্জামে জিএসটি না নিতে।’ এ ছাড়াও মুখ্যমন্ত্রী সোমবার ঘোষণা করেন, কেন্দ্র থেকে করোনার টিকা এলেই রাজ্যের সকলকে বিনামূল্যে টিকাকরণের কাজ শুরু করা হবে। তত্পরতার সঙ্গে করোনা মোকাবিলা করবে রাজ্য সরকার।