রাজনীতিতে জেন্টলম্যান শোভনদেব চট্টোপাধ্যায়, রাজ্যসভায় দেখা যাবে তাঁকে?

|| আকাশ চৌধুরি ||

২০২১ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কেন্দ্রে নির্বাচনে জিতে ছিলেন বর্ষীয়ান তৃণমূলে নেতা শোভনদেব চট্টোপাধ্যায়। সেই ভবানীপুর কেন্দ্র থেকে তিনি পদত্যাগপত্র জমা দিলেন বিধানসভার অধ্যক্ষ বিমান বন্দ্যোপাধ্যায় কাছে। পদত্যাগপত্র গৃহীত হয়েছে।

এই কেন্দ্র থেকে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নির্বাচনে লড়াই করবেন আগামী ৬ মাসের মধ্যে। এখন দেখার নির্বাচন কমিশন এই কেন্দ্রে কবে নির্বাচনের দিন ঘোষণা করে।

শোভনদেব চট্টোপাধ্যায় বর্ষীয়ান নেতা তাহলে কি দল তাঁকে রাজ্যসভায় পাঠাবে? এই সিদ্ধান্ত নেবেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। যেহেতু রাজ্যসভায় দুটি সাংসদের পথ খালি রয়েছে তৃণমূল কংগ্রেসের।

মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ২০১১ সালে মুখ্যমন্ত্রী হওয়ার আগে তিনি রেলমন্ত্রী ছিলেন। সেইসময় এই ভবানীপুর কেন্দ্রে জয়ী হয়েছিলেন সুব্রত বক্সি। তারপর তিনি মমতার মন্ত্রিসভায় পূর্তমন্ত্রীর দায়িত্ব সামলান। কিন্তু ২০১১ সালে সুব্রত বক্সী ভবানীপুর কেন্দ্র থেকে পদত্যাগ করেছিলেন। তারপর উপনির্বাচনে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জয়ী হয়ে আসেন।

বর্ষীয়ান নেতা শোভনদেব চট্টোপাধ্যায় আর সুব্রত মুখার্জি দুজনেই বন্ধুসম। দুজনেই প্রয়াত প্রিয়রঞ্জন দাসমুন্সীর স্নেহধন্য ছিলেন। শোভনদেব চট্টোপাধ্যায় ও সুব্রত মুখার্জীর রাজনৈতিক গুরু ছিলেন প্রয়াত প্রিয়রঞ্জন দাশমুন্সি। এই দুই বর্ষীয়ান নেতা মমতার মন্ত্রিসভার গুরুত্বপূর্ণ মুখ। পাশাপাশি রাজ্যসভার সাংসদ তত্ত্ব রাখা হচ্ছে। কিন্তু শোভনদেব চট্টোপাধ্যায়ের বয়স ৭০ এর উপর।

করোনায় মৃতদের প্রতি শ্রদ্ধা জ্ঞাপনে আবেগপ্রবণ প্রধানমন্ত্রী

মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যেদিন কংগ্রেস ত্যাগ করেছিলেন সেইসময় থেকে শোভনদেব চট্টোপাধ্যায় তাঁর পাশেই ছিলেন। তৃণমূল গঠনের সময় থেকে শোভনদেব চট্টোপাধ্যায় এখনো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গেই আছেন।

২০২১ এর বিধানসভা নির্বাচনের আগে বহু তৃণমূল নেতা ও বিধায়ক দল ছাড়লেও শোভনদেব চট্টোপাধ্যায়ের অকৃতদার, মমতার পাশে থেকেছেন সবসময়। দল গঠনের সময় থেকে বর্তমান সময় পর্যন্ত বর্ষীয়ান নেতা শোভনদেব চট্টোপাধ্যায়কে কোনদিনই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সম্পর্কে কটূক্তি করতে শোনা যায়নি ।

বরং মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে আস্থা রেখে একনিষ্ঠ কর্মী থাকার পরিচয় দিয়েছেন সবসময়। তাই তৃণমূল কংগ্রেসের মতো দক্ষিণপন্থী দলে অদল বদলের বা পরিবর্তনের স্রোত দেখা দিলেও শোভনদেব চট্টোপাধ্যায় বরাবরই থেকেছেন মমতার পাশে।

এই কারণে দলের অন্দরে তাঁকে জেন্টেলম্যান হিসেবে আখ্যা দেওয়া হয়। এমনকি বাম বা বিজেপি এবং কংগ্রেস পার্টির কোনো নেতাই শোভনদেব চট্টোপাধ্যায় সম্পর্কে কোনো বিরূপ, তির্যক মন্তব্য করতে শোনেনি বাংলার মানুষ।

রাজনৈতিক সততা ও স্বচ্ছতার কারণে বিরোধী দলের কাছে শোভনদেব চট্টোপাধ্যায়ের গ্রহণযোগ্যতা ঈর্ষণীয়। এখন দেখার মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বর্ষীয়ান এই নেতার রাজনৈতিক পুনর্বাসন কিভাবে দেন। সেদিকেই তাকিয়ে বাংলা।

সম্পর্কিত পোস্ট