আলাপনকে নিয়ে অচলাবস্থায় কেন্দ্রকেই দুষছে সিপিএম-কংগ্রেস-তৃণমূল

দ্য কোয়ারি ওয়েবডেস্কঃ 31 মে 2021 চাকরি জীবনের মেয়াদ শেষ হচ্ছে পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যসচিব আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায়ের ৷ কিন্তু করোনা পরিস্থিতিতে তাঁর প্রয়োজনীয়তার কথা বুঝতে পেরে রাজ্যের তরফে তাঁর মেয়াদ বৃদ্ধির আর্জি জানানো হয় কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে ৷

কয়েকদিন আগে কেন্দ্র সেই আবেদন অনুমোদনও করে ৷ কিন্তু শুক্রবার আচমকা আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায়কে ডেপুটেশনে দিল্লিতে ডেকে নেয় কেন্দ্র ৷

আর তা নিয়েই গতকাল রাত থেকে ফের শুরু হয়েছে কেন্দ্র-রাজ্য চাপানউতোর ৷ আদৌ কি আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায়কে এই ভাবে ডেপুটেশনে নেওয়ার এক্তিয়ার রয়েছে কেন্দ্রের ?

এই প্রশ্নের উত্তরে সিপিএমের আইনজীবী নেতা তথা রাজ্যসভার সাংসদ বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্য বলছেন, ‘‘আইনের ভাষায় এক্ষেত্রে যেহেতু আলাপনবাবুদের নিয়োগ করে কেন্দ্রীয় সরকার । কাজেই কেন্দ্র ইচ্ছা করলে তাঁকে ডাকতেই পারে । এর মধ্যে কোনও আইনি বাধা নেই ।’’

তবে তিনি এটাও স্পষ্ট করে দিয়েছেন যে রাজ্যের হাতে ক্ষমতা রয়েছে এই অবস্থায় ওই অফিসারকে ছাড়বে কি না । রাজ্য চাইলে কেন্দ্রের এই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে আইনের দ্বারস্থ হতেও পারে । সে সংস্থানও রয়েছে ।

কেন্দ্রের এই সিদ্ধান্তকে সমর্থন করছেন না রাজ্যের প্রাক্তন আমলারা

অন্যদিকে আইনজীবী অরুণাংশু চক্রবর্তী জানাচ্ছেন, এই ধরনের সিদ্ধান্ত রাজ্যের সঙ্গে আলোচনা করে নিতে হয় ৷ কিন্তু রাজ্য যদি রাজি না হয়, সেক্ষেত্রে কেন্দ্র একতরফা ভাবে সিদ্ধান্ত নিতে পারে ৷ তবে অবসরের দু’বছরের কম সময় থাকলে ডেপুটেশনে নেওয়া যায় না ৷ তাছাড়া রাজ্য সরকারের সঙ্গে কবে আলোচনা হল, সেই প্রশ্নই তুলেছেন এই আইনজীবী

৷কিন্তু আইনে যা থাক, গোটা বিষয়টিকেই কেন্দ্রীয় সরকারের প্রতিহিংসা হিসেবেই দেখছেন তৃণমূল কংগ্রেসের মুখপাত্র কুণাল ঘোষ ৷ তাঁর কথায়, ‘‘প্রতিহিংসার পথে হাঁটছে কেন্দ্র । আমরা এর তীব্র বিরোধিতা করছি । করোনা এবং যশ পরিস্থিতিতে এই বদলির নির্দেশের উদ্দেশ্য শুধু পশ্চিমবঙ্গ সরকারের ক্ষতি করতে নয়, পশ্চিমবঙ্গের মানুষেরও ক্ষতি করা ৷’’

একই মত লোকসভায় কংগ্রেসের দলনেতা অধীররঞ্জন চৌধুরীরও ৷ বহরমপুরের সাংসদ বলছেন, ‘‘কোভিড পরিস্থিতি এই সময়টা খুব এমারজেন্সি পিরিয়ড । এমন সময় মুখ্যসচিব তাঁর দীর্ঘদিনের অভিজ্ঞতাকে কাজে লাগিয়ে পরিস্থিতির মোকাবিলা করছেন । সেই সময় এইভাবে উঠিয়ে নেওয়াটা একটু অবাক লাগল ।’’

তাই এটার কি সত্যি দরকার ছিল বলে প্রশ্ন তুলেছেন অধীর । তাঁর বক্তব্য, ‘‘প্রতিহিংসার মানসিকতা থেকে এটা হচ্ছে । এটা কিন্তু আমাদের কারও জন্যই ভালো হচ্ছে না ।’’
স্বাভাবিক ভাবেই তাই প্রশ্ন উঠছে যে এবার কী হতে পারে ?

৫ জুন দলের বর্ধিত কোর কমিটির বৈঠক ডাকলেন মমতা

কংগ্রেসের আইনজীবী নেতা অরুণাভ ঘোষ বলছেন, আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায় এই পরিস্থিতিতে এক্সটেনশন নাও নিতে পারেন ৷ কিন্তু এক্সটেন না নিয়ে যদি তিনি নির্ধারিত দিনে অবসর নিয়ে নেন, তাহলে তাঁর বিরুদ্ধে কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন অরুণাভ ঘোষ ৷

কেন্দ্রের মোদি সরকারের প্রতি সরাসরি কটাক্ষ, শিক্ষার অভাব নিয়ে ক্ষমতায় এলে এমনই আচরণ স্বাভাবিক ৷ তবে এর জন্য দেশের শিক্ষিত অংশের কাছে জনপ্রিয়তা কমছে মোদি সরকারের, এমনটাই মনে করেন কংগ্রেসের এই আইনজীবী নেতা ৷

সম্পর্কিত পোস্ট