তৃণমূলে ফিরতে চেয়ে সুপ্রিমোর দ্বারস্থ রতন ঘোষ ও বাবু মাস্টার ! ক্ষোভে ফুঁসছে জেলা নেতৃত্ব

দ্য কোয়ারি ওয়েবডেস্কঃ উত্তর ২৪ পরগনা জেলা জুড়ে রাজনীতির পট পরিবর্তনের ইঙ্গিত ক্রমশ জোড়ালো হয়ে উঠছে। সপুত্র মুকুল রায় বিজেপি ছাড়ার  ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই ভাঙ্গন গেরুয়া দুর্গে। দল ছাড়লেন উত্তর ২৪ পরগনা জেলা পরিষদের সদস্য রতন ঘোষ।

তিনি জানান, বিজেপির নীতি ও আদর্শের সঙ্গে সামঞ্জস্য রাখতে পারছেন না। কোথাও যেন রয়েছে সমন্বয়ের অভাব। তাই আবার তৃণমূলের ফিরতে চাইছেন তিনি। একই সঙ্গে দলনেত্রীর কাছে এ বিষয়ে তিনি বার্তা পাঠিয়েছেন হলেও সংবাদমাধ্যমে জানিয়েছেন।

বিধানসভা নির্বাচনের আগে তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে যোগ দিয়েছিলেন রতন ঘোষ এবং বাবু মাস্টার। উত্তর ২৪ পরগনার হাসনাবাদের দাপুটে নেতা ফিরোজ কামাল গাজী ওরফে বাবু মাস্টারের বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছিল মাছ চুরির।

তাঁর দাবি ছিল মিথ্যা মামলায় ফাঁসানো হয়েছে তাঁকে। এই ঘটনার পর থেকেই দল পাশে দাঁড়ায়নি। দীর্ঘদিন নিজের এলাকায় ঢুকতে পারেননি বাবু মাস্টার। সেই সমস্ত কারণেই একপ্রকার ক্ষোভ প্রকাশ করে দল ছেড়েছিলেন ফিরোজ কামাল গাজী।

মুকুল রায় ঘনিষ্ঠ ২ বিজেপি নেতা রতন ঘোষ এবং ফিরোজ কামাল গাজী তৃণমূলের ফিরতে চলেছেন এই খবর প্রকাশ্যে আসার পর থেকেই উত্তর ২৪ পরগনা জেলা পরিষদের পাঁচিলে অসংখ্য পোস্টার চোখে পড়েছে। তাতে লেখা রতন ঘোষ ও বাবু মাস্টার দুর্নীতিগ্রস্ত। তাদের তৃণমূল নেতাদের কোনো স্থান নেই।

“দলত্যাগ বিরোধী আইন বাংলায় কার্যকর করবই”- মুকুলের দলত্যাগ প্রসঙ্গে হুঁশিয়ারী শুভেন্দুর

জেলা সভাপতি তথা বনমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক জানান, এই পোস্টারের সঙ্গে তৃণমূলের কোন যোগ নেই। এটা সম্পূর্ণ বিজেপির গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের ফল। অবশ্য তিনি এও জানিয়েছেন যদি তারা দলে ফিরতে চান , সেক্ষেত্রে আদৌ তাদের ফেরানো হবে কি না, সে বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

ফেব্রুয়ারি মাসের ১৩ তারিখ উত্তর চব্বিশ পরগনার মিনাখাঁয় বাবু মাস্টারের ওপর হামলার ঘটনা ঘটে। বিজেপি নেতার গাড়ি লক্ষ্য করে চলে এলোপাতাড়ি গুলি ও বোমা। বসিরহাটের সভা সেরে ফিরছিলেন তিনি। সেই সময় লাউহাটি ফাঁড়ির সামনে  তাঁর গাড়ি ঘিরে ধরে দুষ্কৃতীরা হামলা চালায় বলে অভিযোগ।

আশঙ্কাজনক অবস্থায় তৎক্ষণাৎ একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করা হয় বাবু মাস্টারকে। সেই রাতেই হাসপাতালে ছুটে আসেন শুভেন্দু অধিকারী গোটা ঘটনায় নিশানা করা হয় তৃণমূলকে।

যদিও সেসব এখন অতীত। নির্বাচনের ফলাফল ঘোষণার পর ক্রমশ পশ্চিমবঙ্গে একের পর এক রাজনৈতিক সমীকরণ বদলের গুরুত্বপূর্ণ ইঙ্গিত পাওয়া যাচ্ছে। তার মধ্যে অন্যতম রতন ঘোষ ও বাবু মাস্টারের ঘরে ফেরার জল্পনা।

ইতিমধ্যেই উত্তর ২৪ পরগনা জেলার একাংশ সাফ জানিয়ে দিয়েছেন, যদি তাদেরকে দলে নেওয়া হয় সে ক্ষেত্রে ভবিষ্যতে তারা তৃণমূল কংগ্রেস করবেন কিনা সে বিষয়ে যথেষ্ট সন্দেহ রয়েছে। তাদের আশা নিশ্চয়ই দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সমস্ত দিক বিবেচনা করেই সিদ্ধান্ত নেবেন।

নিউটাউনের ঘটনায় পাক যোগ, আটক পাঞ্জাবের এক পুলিশ অফিসার

জেলা পরিষদের পূর্ত কর্মাধ্যক্ষ তথা অশোকনগরের তৃণমূল বিধায়ক নারায়ন গোস্বামী অবশ্য জানান, এই বিষয়ে তিনি কিছুই জানেন না।  কারা জেলা পরিষদের দেওয়ালে পোস্টার ফেলেছেন সে বিষয়ে তাঁর কাছে এখনো পর্যন্ত কোনো খবর নেই।

তবে বাবু মাস্টার এবং রতন ঘোষ যে দলে ফিরতে চেয়ে আবেদন জানিয়েছেন সে বিষয়ে তিনি জানলেও কোন মন্তব্য তিনি করতে চাননি। তাঁর কথায় যা সিদ্ধান্ত নেওয়ার তৃণমূল সুপ্রিমো এবং শীর্ষ নেতৃত্ব নেবেন।

সম্পর্কিত পোস্ট