রাজা কৃষ্ণচন্দ্রের দেশে গেরুয়া গড়ে ভাঙন, ‘চানক্যে’-র হাত ধরে তৃণমূলে বিজেপি এজেন্ট

দ্য কোয়ারি ওয়েবডেস্কঃ সাড়ে তিন বছর পর বিজেপি ছেড়ে তৃণমূলে ফিরে এসেছেন একদা তৃণমূলের সেকেন্ড-ইন-কমান্ড মুকুল রায়। বাবার পদাঙ্ক অনুসরণ করে পুরনো দলে ফিরে এসেছেন পুত্র শুভ্রাংশু রায়। ২০১৭ সালের তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে যোগদানের পর তিনি প্রমাণ করে দিয়েছিলেন দল ভাঙানোর খেলায় তিনি সিদ্ধহস্ত।

বিজেপি ছেড়ে তৃণমূলে আসার পর ফের নেমে পড়েছেন তিনি সেই খেলায়। তবে এবারের লক্ষ্য ২০২৪ এর লোকসভা নির্বাচনে বিজেপিকে কেন্দ্র থেকে সরিয়ে দেওয়া। সেক্ষেত্রে সর্বভারতীয় স্তরে সংগঠনকে গোছানোর কাজ শুরু করে দিয়েছেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। পিছিয়ে নেই মুকুল রায়ও।

অনেকদিন আগেই বঙ্গ রাজনীতিতে তিনি চাণক্য উপাধি পেয়েই গিয়েছেন তিনি। রাজনীতির খুঁটিনাটি কৌশলে জুড়ি মেলা ভার। ২০২১ এর বিধানসভা নির্বাচনে কৃষ্ণনগর উত্তর থেকে তাঁকে টিকিট দিয়েছিল বিজেপি। সসম্মানে সেই কেন্দ্র থেকে জয়ী হয়ে আসেন তিনি। তারপরে অবশ্য মোহভঙ্গ হয়ে তৃণমূলে নাম লেখান।

বিধানসভা নির্বাচনের পর রবিবার প্রথম কৃষ্ণনগরে পা রাখলেন কৃষ্ণনগর উত্তরের বিধায়ক মুকুল রায়। বিধানসভা নির্বাচনের সময় তিনি বেলেডাঙ্গা মোড়ে যে বাসভবনে থাকতেন সেখানে সোজা পৌঁছে যান। সঙ্গে অবশ্যই ছিলেন পুত্র শুভ্রাংশু রায়। দলীয় কর্মীদের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন। এরপর ৩৪ নম্বর জাতীয় সড়কের পাশে একটি রেস্তোরাঁয় দলীয় নেতৃত্বের সঙ্গে মধ্যাহ্নভোজ করেন তিনি।

Fake Vaccine Camp: ভুয়ো ক্যাম্পের পুনরাবৃত্তি রুখতে পৃথক কমিটি গঠন

সেখানেই চলে জরুরি বৈঠক। বৈঠকেই ঘটে ছন্দপতন। মুকুল রায়ের নির্বাচনী এজেন্ট ওরফে বিজেপি নেতা অরূপ রায় তৃণমূলে যোগ দেন। মুকুল রায়ের হাত থেকেই এদিন দলীয় পতাকা তুলে নেন তিনি। অরূপ রায় ছাড়াও বেশ কয়েকজন প্রাক্তন কাউন্সিলর সহ শতাধিক বিজেপি কর্মী সমর্থক মুকুল রায়ের হাত ধরে তৃণমূলে যোগদান করেন। তারপর সাংবাদিকদের সামনে মুকুল রায় জানান “দলীয় কর্মীদের সঙ্গে সাক্ষাৎ এবং কৃষ্ণনগরের সার্বিক উন্নয়নের লক্ষ্যেই এই কর্মসূচি।”

এই ঘটনার পরই জোর চর্চা শুরু হয়েছে রাজনৈতিক মহলে। পর্যবেক্ষকরা বলছেন কৃষ্ণনগরের বিধায়ক মুকুল রায়ের হাত ধরে বিজেপি গড়ে যে ভাঙ্গন ধরবে তা একপ্রকার নিশ্চিত ছিল। এর আগে অবশ্য বিজপুরের গেরুয়া গড়ে ভাঙ্গন ধরিয়েছিলেন মুকুল রায়।

রাজনৈতিক মহলের মতে এখনও অনেকেই পা বাড়িয়ে রয়েছেন বিজেপি ছেড়ে তৃণমূলে যোগ দেওয়ার জন্য। ইতিমধ্যেই, নির্বাচনের আগে যারা তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে নাম লিখিয়েছিলেন তারা অনেকেই ফিরে আসতে চেয়েছেন বলে তৃণমূল সূত্রে জানা গিয়েছে। তবে তাদেরকে দলে নেওয়া হবে কিনা আর নিলেও, কাকে নেওয়া হবে না সে বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবে দলের শীর্ষ নেতৃত্ব।

লক্ষ্য ২০২৪ এর লোকসভা নির্বাচন। তার আগে রাজ্যে নিজেদের ঘাঁটি শক্ত করে সর্বভারতীয় স্তরে সংগঠন গোছানোর কাজ জোরকদমে শুরু করে দিয়েছে ঘাশফুল শিবির। এরই মাঝে বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী, মুকুল রায়ের পিএসি পদের মনোনয়ন বাতিলের দাবি জানিয়ে চিঠি লিখেছেন। হুঁশিয়ারি দিয়েছেন তিনি প্রণয়ন করবেন দলত্যাগ বিরোধী আইন। তাতে যত সময় লাগে লাগুক। তবে সব ছেড়ে এখন দেখার কিভাবে নিজেদের গড় রক্ষা করে বিজেপি।

সম্পর্কিত পোস্ট