“বক্তব্যে কোন সৌন্দর্য নেই, শালীনতা নেই, কেউ জানেনা ল্যাজ কাটা হনু ঘুরে বেড়াচ্ছে”-শুভেন্দুকে তীব্র আক্রমণ মমতার

দ্য কোয়ারি ওয়েবডস্কঃ শুভেন্দুর ভাষণের কড়া সমালোচনা করে তৃণমূল। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “কেউ জানেনা ল্যাজ কাটা হনু ঘুরে বেড়াচ্ছে। বক্তব্যে কোন সৌন্দর্য নেই। শালীনতা নেই। বিজেপির অনেক নেতাকে চিনি। রাজ্যপালকে ধন্যবাদ জানাচ্ছি। আর যারা তাঁকে ভাষন পড়তেই দিলনা তারা মানুষকে বলতে না দিয়ে আমি কত বড় প্রচার করতে এসেছে। রাজ্যপাল কেন্দ্রের মনোনীত। তার বক্তব্য শোনার সময় নেই আপনাদের। হাউজে কিছু বলার নেই।বিরোধীরা যদি ভালো সাজেশন দেয় আমরা গ্রহণ করতে প্রস্তুত।”

তিনি আরও বলেন, “এবার বিধানসভা নির্বাচনে জোর করে বাংলা দখল করার জন্য কি না হয়নি! সব আর এস এস এর লোক বসিয়ে টাকা ঢেলে, সব চেষ্টা হয়েছে। আমি নিজে হেরে গেছি। একজনকেও ভোট দিতে দেওয়া হয়নি। সব অফিসারদের সরিয়ে দেওয়া হয়েছে। অবজারভার করা হয়েছে বিজেপির লোকেদের। ভিভিপ্যাট গনণা হয়নি। ঠিক ভাবে ভোট হলে ৩০ টা আসনও পেত না। কেস চলছে। রেজাল্ট বেরোলে দেখতে পাবেন। কে গুলি চালিয়েছিল।”

শীতলকুচি কান্ড নিয়ে তোপ দেগে তিনি বলেন,  “শীতলকুচি থেকে প্রতিটা ঘটনা কমিশনের সময় ঘটেছে। উপযুক্ত ডিএম না থাকার জন্য ঘটেছে। পুরো তিনটে মাস বাংলাকে এমন করে দেওয়া হয়েছে পুলিশ কথা শোনেনি। পুলিশকে থ্রেট করা হয়েছে। বলা হয়েছে You are under scanner। কিন্তু বাংলার মানুষ নিঃশব্দে বিপ্লব করে দিয়েছে। তাদের কুর্নিশ জানাই।”

ভ্যাকসিন নিয়ে মুখ্যমন্ত্রী বলেন,   “আমরা দু কোটি মানুষকে ভ্যাকসিন দিয়েছি। কাল তথ্য এসেছে পাঁচ কেজি চাল দেবে মাসে। আমরা তো প্রতিমাসে দিই।সব কিছুতে প্রধানমন্ত্রীর ছবি। এরকম নির্লজ্জ প্রধানমন্ত্রী দেখিনি। আমরা প্রায় ২ কোটি ২৫ লক্ষ ভ্যাকসিন দিয়েছি। গুজরাট, রাজস্থানে তিন চার কোটি করে ভ্যাকসিন দিয়েছে আমাদের দেয়নি। সাধারণ মানুষকে ভুগতে হচ্ছে।”

শুভেন্দুর ভাষণের কড়া নিন্দা স্পিকারের, প্রতিবাদে বিধানসভা ওয়াকআউট বিজেপির

তিনি আরও বলেন, “আমাদের রাজ্য সরকারের তরফ থেকে আমরা খেলা হবে দিবস পালন করব। কোভিড যোদ্ধাদের শ্রদ্ধা জানাই। দশ বছর আগে বাংলা কি ছিল? আগে বাইরে গিয়ে শুনতাম এখানে কিছু নেই।
এখন একশ দিনের কাজে বাংলা প্রথম, গ্রামীণ সড়ক নির্মাণে এক নম্বর, খাদ্যসাথীতে ১০ কোটি লোককে রেশন, কৃষি জমির নাম পত্তন ফি মুকুব করা হয়েছে।”

উন্নয়নের খতিয়ান তুলে ধরার পাশাপাশি রাজ্য সরকারের কাজের প্রশংসা করে তিনি বলেন, “কোভিডের জন্য বিশ্ব বাংলা সম্মেলন হয়নি। ডেউচা পাঁচমি কাজ প্রথম পর্যায়ে অবিলবে শুরু হবে। মানুষকে সব রকমের পুনর্বাসন দেব। এটা হলে বিদ্যুৎ উৎপাদনের জন্য বাইরে থেকে কয়লা কিনতে হবে না বাংলাকে।ডানকুনি ফ্রেট করিডর তৈরি হলে রাজ্যের ভোল বদলে যাবে। যারা বেঙ্গলকে আন্ডার এস্টিমেট করছে তারা ভুলে যাচ্ছে Bengal is the gateway।”

উত্তরবঙ্গ পৃথক রাজ্যের তীব্র বিরোধীতা করে তিনি বলেন, “উত্তরবঙ্গে উন্নয়ন কি হয়নি ! কিছু বাকি নেই। যারা উত্তরবঙ্গ ভাগ করে দাও পাহাড় ভাগ করে দাও তাদের বলছি বাংলা ভাগ করতে দেব না। আমরা ভাগাভাগির রাজনীতিতে বিশ্বাস করিনা। অন্য জায়গার হিংসার ঘটনা বাংলার বলে চালানো হচ্ছে। বাংলাদেশের হিংসার ছবি বাংলার বলে চালানো হচ্ছে।আমরা এর বিরুদ্ধে কড়া ব্যবস্থা নিচ্ছি। ৯৪ টা মামলা হয়েছে। ৪৭৪ টা পোস্ট ব্লক হয়েছে।”

কেন্দ্রীয় সরকারকে তীব্র আক্রমণ করে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “বড় বড় কথা। উত্তর প্রদেশে গঙ্গায় লাশ ফেলে দিচ্ছে। গঙ্গা দূষিত করে দিচ্ছে। লজ্জা করে না। নরেন্দ্র মোদীর সরকার, মিথ্যবাদির সরকার। কেউ জানে কত লোককে খুন করেছে। জঙ্গলের রাজত্ব চলছে। কোন হিসাব নেই। আর বাংলার হিসাব চাইছে। বাংলা নিজেদের মাথা উচু করে চলবে। বিজেপির জন্য একটা কথা ধিক্কার ধিক্কার ধিক্কার।”

সম্পর্কিত পোস্ট