ত্রিপুরা: করোনা কার্ফু উড়িয়ে বিজেপির কর্মসূচি, চাকরিচ্যুত শিক্ষক-শিক্ষিকাদের ধরপাকড়
দ্য কোয়ারি ডেস্ক: প্রশাসনের নির্দেশে করোনা সংক্রমণ রোধে ত্রিপুরায় চলছে করোনা কার্ফু। জারি হয়েছে বিধিনিষেধ। কার্ফু নিয়ম ভাঙলেই চলছে ধরপাকড়। ততপর পুলিশ।
বিধিনিষেধ কি সরকারে থাকা বিজেপি দলের জন্য প্রযোজ্য নয়? উঠছে এই প্রশ্ন। কারণ, মঙ্গলবার সকালে দুই ভিন্ন ছবি ধরা পড়েছে রাজধানী শহর আগরতলায়। চাকরিচ্যুত ১০৩২৩ শিক্ষক-শিক্ষিকা মঞ্চের তরফে মৃত শতাধিক আন্দোলনকারীদের প্রতি শ্রদ্ধা জানানো ও প্রতিবাদ সমাবেশে হলো ব্যাপক ধরপাকড়। এই ঘটনায় আগরতলা সিটি সেন্টার এলাকা উত্তপ্ত হয়ে ওঠে।
আর বিজেপির রাজনৈতিক কর্মসূচি নিশ্চিন্তে অনুষ্ঠিত হয় আগরতলার সূরজ চৌমুহনীতে। এখানে করোনা দূরত্ববিধি মানা হয়নি বলে অভিযোগ। বিজেপি নেতা কর্মীরা নিবিড়ভাবে জড়ো হয়ে রাজনৈতিক কাজ পরিচালনা করেন।
বি়ভিন্ন মহলের অভিযোগ, চাকরিচ্যুত ১০৩২৩ শিক্ষক শিক্ষিকা মঞ্চ করোনা দূরত্ববিধি মেনেই অবস্থান করছিলেন। সেখানে পুলিশ গিয়ে তাঁদের হটিয়ে দেয়। শুরু হয় ধস্তাধস্তি। একপর্যায়ে আন্দোলনকারীদের টেনে টেনে বাসে তুলে দেওয়া হয়।
বিক্ষোভকারীদের অভিযোগ, রাজ্য সরকার অকেজো হয়ে গিয়েছে। গত বিধানসভা নির্বাচনের আগে বাড়ি বাড়ি চাকরির প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল বিজেপি। সেই প্রতিশ্রুতি পূরণ হয়নি। মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব দেবের ভূমিকা নিয়েও সরব হন তাঁরা। আরও অভিযোগ, প্রশাসন কোনওভাবেই চাকরিচ্যুতদের জন্য বিকল্প চাকরির ব্যবস্থা করছে না।
গত বিধানসভা ভোটে রাজ্যে টানা ২৫ বছরের বামফ্রন্ট জমানার পতন হয়। সিপিআইএমের সরকারের আমলে ১০৩২৩ জন শিক্ষক শিক্ষিকা চাকরি পেয়েছিলেন। তবে সেই নিয়োগ প্রক্রিয়ায় ত্রুটি থাকায় আদালতের নির্দেশে চাকরিচ্যুত হন শিক্ষক শিক্ষিকারা। বাম সরকার তাদের জন্য বিকল্প কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করে। এর মাঝেই সরকার পাল্টে যায়। সেই বিকল্প রোজগারের বিষয়টি ধামাচাপা পড়েছে।
চাকরি চেয়ে গত তিন বছর ধরে লাগাতার আন্দোলন করছেন শিক্ষক শিক্ষিকারা। অবসাদে অনেকে আত্মঘাতী হয়েছেন। অসুস্থ হয়ে কারোর মৃত্যু হয়েছে। সবমিলে শতাধিক চাকরিচ্যুত শিক্ষক শিক্ষিকা মৃত। অভাবের কারণে এক মৃত শিক্ষকের চিতায় উঠে সহমরণ করতে গিয়েছিলেন তাঁর স্ত্রী। এই ঘটনা দেশজুড়ে বিতর্ক তৈরি করেছিল।