BJP ছেড়ে CPIM ও TMC যোগের হিড়িক, ত্রিপুরা সরগরম

দ্য কোয়ারি ওয়েবডেস্কঃ আগরতলার রাজনীতিতে কি শাসক বিজেপি ত্রমশ অস্তিত্ব সংকটে পড়তে চলেছে? এই প্রশ্ন এখন ত্রিপুরার সর্বত্র। পাহাড়ি উপজাতি এলাকা হোক বা সমতল এলাকা-দলে দলে বিজেপি সমর্থকরা ভিড়তে শুরু করেছেন বিরোধী দল সিপিআইএম ও নতুন করে প্রাসঙ্গিক হতে চলা তৃণমূল কংগ্রেসে।

গত বিধানসভা ভোটের আগেও ত্রিপুরার পার্বত্য উপজাতি এলাকায় সিপিআইএম ছাড়া অন্য কোনও দলের দাঁত ফোঁটানোর ক্ষমতা ছিলনা। সম্প্রতি সেই উপজাতি স্বশসিত এলাকা (এডিসি) নির্বাচনে সেখানে শূন্য হয়েছে সিপিআইএম। শাসক বিজেপির পক্ষে এডিসির শাসন ক্ষমতা দখল করা সম্ভব হয়নি। তাদের শরিক আইপিএফটি দল নিশ্চিহ্ন। বরং উপজাতি এলাকায় নতুন শক্তি হয়ে উঠে এসেছে তিপ্রা মথা দল। এডিসি চেয়ারম্যান হয়েছেন দলটির প্রধান তথা রাজা প্রদ্যোত দেববর্মা।

ত্রিপুরার রাজনৈতিক সমীকরণে তিপ্রা মথা বড়সড় কাঁটা হয়েই থাকবে আগামী বিধানসভা ভোটে শাসক ও বিরোধী দলের কাছে।

মনে করা হচ্ছে, পশ্চিমবঙ্গে বিপুল শক্তি নিয়ে তৃতীয়বারের জন্য টিএমসি সরকার গড়ার পর দলনেত্রী নজর দিয়েছেন ত্রিপুরায়। অন্যতম বাংলাভাষী এই রাজ্যের শাসন ক্ষমতা দখলে নামছে তৃণমূল কংগ্রেস। সূত্রের খবর, বিজেপি ত্যাগ করে মুকুল রায় টিএমসিতে ফিরতেই ত্রিপুরায় দলকে ফের শক্তিশালী করতে নির্দেশ দিয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

পশ্চিমবঙ্গে টিএমসির বিরাট জয়ের পরেই ত্রিপুরা জুড়ে ধুঁকতে থাকা তৃণমূলের সংগঠনে লেগেছে দোলা। বিভিন্ন এলাকায় বিজেপি ছেড়ে মমতা শিবিরে আসছেন অনেকেই। বিজেপির অভ্যন্তরেও ক্ষোভ তুঙ্গে। সেই ক্ষোভ কাজে লাগিয়ে মুকুলবাবুর নজর ত্রিপুরায় টিএমসিকে ফের রাজনৈতিক প্রাসঙ্গিক করা।

করোনার তৃতীয় ঢেউ রুখতে পর্যটন কেন্দ্রগুলিতে বাড়তি নজরদারির নির্দেশ স্বরাষ্ট্রসচিবের

গত বিধানসভা ভোটের আগে ত্রিপুরার ততকালীন বিরোধী দল কংগ্রেসের অন্দরমহলে পরপর রাজনৈতিক ধাক্কা লাগে। বিরোধী শিবিরের বিশিষ্ট নেতা সুদীপ রায় বর্মণের নেতৃত্বে পুরো বিরোধী দল তৃণমূল কংগ্রেসে যোগ দেয়। রাজ্যে মূল বিরোধী দল হয় টিএমসি।

এরপর মুকুল রায় টিএমসি ত্যাগ করে বিজেপি যোগ দেন। তাঁর অনুগামী সুদীপবাবু সহ বিরোধী বিধায়করা টিএমসি ছেড়ে বিজেপিতে যান। সেই মুহূর্তে রাজ্যে টিএমসি অপ্রাসঙ্গিক হয়ে যায়। নতুন বিরোধী দল হয় বিজেপি। নির্বাচনে টানা ২৫ বছরের বাম শাসনের পরিবর্তন হয়। সরকার গড়ে বিজেপি ও জোট শরিক আইপিএফটি।

গত তিন বছরের বেশি সময়ে বিজেপি সরকারে। দলের ভিতর প্রবল বিদ্রোহ। বারবার দাবি উঠেছে মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব দেব কে সরানোর। যদিও বিজেপি কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব এখনও পদক্ষেপ নেননি। ক্ষুব্ধ বিধায়কদের বেশিরভাগ সরাসরি তৃণমূল শিবিরে যোগাযোগ করেছেন বলেই খবর।

এক্ষেত্রেও বিজেপির দেখানো সেই পুরনো পথ নিতে চলেছে টিএমসি। উপজাতি এলাকায় ক্ষমতাসীন রাজা প্রদ্যোত দেববর্মার তিপ্রা মথার সঙ্গে জোটের সম্ভাবনা প্রবল। এই উপজাতি এলাকায় ২০টি আসন রয়েছে। এডিসি দখল করায় এখানে তিপ্রা মথা দলের আধিপত্য। সেই সুবাদে বিজেপি ও আইপিএফটি দল ছাড়ার পর্ব চলছে।

শর্তসাপেক্ষে চলবে মেট্রো, বিধিনিষেধ বহাল ৩০ জুলাই পর্যন্ত

পার্বত্য এলাকায় কর্তৃত্ব হারালেও পুরনো সংগঠনের কারণে সিপিআইএমের সমর্থক ভিত্তি কিছুটা রয়েছে। আর সমতল এলাকায় বাকি ৪০টি আসনের মধ্যে সিপিআইএমের সঙ্গেই মূল লড়াই হবে শাসক দলের।এই লড়াইয়ে শাসক বিজেপির ভাঙন ধরিয়ে টিএমসি উঠে আসতে মরিয়া।

রাজ্য জুড়ে চলছে বিজেপি ছাড়ার পর্ব। কোথাও দলে দলে সিপিআইএমে যোগদান তো কোথাও টিএমসি শিবিরে আসা। এতেই রাজনৈতিক হাওয়া গরম। বিরোধী দলনেতা ও প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী মানিক সরকারের কাছে আগামী বিধানসভা ভোট রাজনৈতিক অস্তিত্ব রক্ষার লড়াই।

কারণ, লোকসভার দুটি আসনে পরাজিত বামেরা, এডিসি এলাকায় শূন্য এবার বিধানসভার ভোটে ঘুরে না দাঁড়াতে পারলে পশ্চিমবঙ্গের মতো ত্রিপুরাতেও অপ্রাসঙ্গিক হয়ে পড়তে পারে সিপিআইএম।

সম্পর্কিত পোস্ট