অসম সীমানায় ১২০০ কমান্ডো মোতায়েন, মিজোরামকে নরম হওয়ার বার্তা হিমন্তের

দ্য কোয়ারি ডেস্ক: দুই রাজ্যের আন্ত:সীমামায় যেন যুদ্ধের পরিস্থিতি। সাধারণ জনগণ এখনও হতবাক। অসম সরকার মিজোরাম সীমানা বরাবর কমান্ডো ব্যাটেলিয়ন নামিয়ে দিয়েছে। স্বয়ংক্রিয় আগ্নেয়াস্ত্র রেডি করে মিজোরামের দিকে তাক করে রেখেছে জওয়ানরা। এ যেন দুই দেশের মধ্যে কোনও আন্তর্জাতিক সীমান্ত সংঘর্ষ পরিস্থিতি।

পরিস্থিতি এমনই মিজোরাম ও অসম আন্তরাজ্য সীমানা এলাকায়। অসমের কাছাড় জেলায় তীব্র আতঙ্ক। সোমবার গুলিতে মৃত ৫ পুলিশকর্মীকে শেষ শ্রদ্ধা জানান মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্বশর্মা। গুয়াহাটি থেকে শিলচরে গিয়ে পরিস্থিতি সরেজমিনে খতিয়ে দেখেছেন তিনি।

পরে মুখ্যমন্ত্রী নিহত পুলিশ কর্মীদের পরিবার পিছু আর্থিক ক্ষতিপূরণ ঘোষণা করেন। একইসঙ্গে মিজোরাম সীমানা বরাবর কমান্ডো ব্যাটেলিয়ন নামানোর নির্দেশ দেন। সেই মতো কমান্ডোরা মিজোরামের কৈলাশিব লাগোয়া অসমের সীমানায় বিশেষ অবস্থান নিয়েছে। মিজোরামের দিক থেকে আপাতত আসা স্থগিত।

মিজেরাম পুলিশ লাইট মেশিনগান থেকে গুলি চালায়, টুইট অসমের মুখ্যমন্ত্রীর

মিজোরামের মুখ্যমন্ত্রী জোরামথাঙ্গার সঙ্গে আলোচনার বার্তা দিয়েছেন অসমের মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্বশর্মা। তিনি বলেন, সোমবার যখন গুলি চলছিল তখনই বারবার মিজোরামের মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলি। কিন্তু কোনও অবস্থায় আমি রাজ্যের সীমানা রক্ষা করতে প্রস্তুত। তিনি আরও জানান, গুলিবিদ্ধ কাছাড় জেলার পুলিশ সুপার এন ভি চন্দ্রকান্তকে হেলিকপ্টার যোগে শিলচর থেকে মুম্বই নিয়ে যাওয়া হয়েছে।

সোমবার অসম মিজোরাম সীমানায় দুই রাজ্যের পুলিশের মধ্যে গুলিবিনিময় হয় বলে জানাচ্ছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। অসমের কাছাড় জেলাশাসক অভিযোগ, মিজোরামের দিক থেকে দীর্ঘ দিন ধরেই সে রাজ্যের পুলিশের মদতে হামলা করে দুষ্কৃতিরা।

অসম সরকারের অভিযোগ, গত কয়েকদিন ধরে কাছাড় জেলার লয়ালপুরের কিছু অংশ মিজোরাম পুলিশ ‘দখল’ করেছিল। এলাকাবাসীরা জানাচ্ছেন, পরিস্থিতি খতিয়ে দেখতে গিয়ে মিজোরাম পুলিশের হামলার মুখে পড়ে অসম পুলিশ।

এলাকার উত্তেজনা বাড়তে থাকে। মিজোরামের মুখ্যমন্ত্রী জোরামথাঙ্গা ও অসমের মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্বশর্মার মধ্যে পরস্পর টুইট যুদ্ধে। দুই মুখ্যমন্ত্রী পরিস্থিতির জন্য একে অপরকে বিঁধে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহকে টুইট করেন।

এদিকে গুলি চালনা নিয়ে মিজোরাম সরকার দায়ি করে অসম সরকারকে। পরে অসমের মুখ্যমন্ত্রী সরাসরি মিজোরাম পুলিশের বিরুদ্ধে লাইট মেশিনগান নিয়ে গুলি করার অভিযোগ করেন।

সোমবারের পর মঙ্গলবারও দুই রাজ্যের সীমানায় প্রবল আতঙ্কিত জনগণ। মিজোরাম লাগোয়া অসমের তিনটি বাংলাভাষী জেলা হাইলাকান্দি, করিমগঞ্জ ও কাছাড়ে শুরু হয়েছে বিক্ষোভ। মৃত ও আহতদের পরিবার প্রতিবাদ করছেন। পুলিশে পুলিশে সংঘর্ষের জেরে যুদ্ধের মতো অবস্থা এখন। কাছাড় জেলাবাসী মিজোরামের সঙ্গে সবরকম যোগাযোগ ছিন্ন করে অর্থনৈতিক অবরোধ শুরু করেছেন।

সম্পর্কিত পোস্ট