ত্রিপুরার বিজেপি বিধায়করা ‘ঝুঁকছেন’ তৃণমূলে, কলকাতায় ফের সুদীপ ‘ছক’

|| সহেলী চক্রবর্তী ||

পশ্চিমবঙ্গে একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিয়ে ক্ষমতায় আসার পর তৃণমূল প্রধান মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়েছিলেন ২০২৪ এর বিধানসভা নির্বাচনে ত্রিপুরা তাঁর পাখির চোখ। দলটির সর্বভারতীয় সম্পাদকের দায়িত্ব নিয়ে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় ঘোষণা করেছিলেন এরাজ্যের গন্ডি পেরিয়ে তৃণমূল বিস্তার করবে ত্রিপুরাতে।

যদিও টিএমসি উত্তর প্রদেশ বা অসমেও সংগঠনের কথা বলছে, কিন্তু তাদের মূল লক্ষ্য ত্রিপুরা। ২০২২ সালে বিধানসভা নির্বাচন রয়েছে উত্তরপ্রদেশে। ২০২৩ সালে বিধানসভা নির্বাচন রয়েছে অসম ও ত্রিপুরাতে। হাতে এখনো ২ বছর সময় থাকলেও সংগঠনের লক্ষ্যে কাজ শুরু করে দিয়েছেন নেতৃত্ব।

তৃণমূলের তরফে বারবার বলা হয়েছে ত্রিপুরায় বিপ্লব দেবের বিজেপি জোট সরকার সংখ্যালঘু। তৃণমূল চাইলেই এই সরকারকে ভেঙে দিতে পারে। তবে নির্বাচিত সরকারকে পুরো সময় ক্ষমতায় থাকার সুযোগ দিতে চায় টিএমসি। জল্পনার সূত্রপাত এখানেই।

ত্রিপুরায় বিজেপি ভেঙে তৃণমূলে যোগ দিতে পারেন বেশকয়েকজন বিধায়ক? এই প্রশ্নই এখন ঘুরে বেড়াচ্ছে কলকাতা ও আগরতলার রাজনীতির আনাচে কানাচে।

ঘরের মেয়ে সুস্মিতার হাত ধরেই অসম জয়ের লক্ষ্যে এগোচ্ছে তৃণমূল

তৃণমূল কংগ্রেস সূত্রের খবর, ত্রিপুরার বিজেপি আড়াআড়িভাবে বিভাজিত। শুধু তাই নয় এই ভাঙ্গন, এতটাই প্রবল, ত্রিপুরা ছেড়ে কলকাতায় এসে পাড়ি জমিয়েছেন বেশ কয়েকজন হেভিওয়েট বিজেপি নেতা। রয়েছেন বিজেপির অন্যতম সুদীপ রায় বর্মণ।

রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকরা বলছেন, ত্রিপুরায় বিজেপির অন্দরে মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব দেবের বিরুদ্ধে বিদ্রোহের আবহ তৈরি হয়েছে। সেই বিদ্রোহী বিধায়কদের একটা বড় অংশ যোগাযোগ রাখছে তৃণমূল কংগ্রেসের সঙ্গে। তবে খাতায়-কলমে এই সংখ্যাটা কত তা এখনই বলা সম্ভব নয়।

তৃণমূল সূত্রে খবর, অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় একটা কথা স্পষ্টভাবে জানিয়ে দিয়েছেন, জনগণের রায়কে মেনে নিয়ে কোন সরকারকে জোর করে ভেঙে দেয়ার পক্ষপাতী তৃণমূল নয়। কিন্তু ত্রিপুরায় তৃণমূল কংগ্রেসের প্রতি মানুষের সমর্থন বাড়ছে।

এদিকে, কলকাতা থেকে প্রায় প্রতিদিন নিয়ম করে নেতা কর্মীরা ত্রিপুরায় যাতায়াত করছেন। ফলে সে রাজ্যে কর্মী-সমর্থকদের মনোবল বাড়ছে। এই অবস্থায় একুশে জুলাই বা খেলা হবে দিবসের পর শনিবার তৃণমূল ছাত্র পরিষদের প্রতিষ্ঠা দিবস পালন করা হবে বলে খবর।

ইতিমধ্যেই সব রকম প্রস্তুতি শুরু করা হয়েছে। এক্ষেত্রে জমায়েত এড়িয়ে ছোট ছোট আকারে তৃণমূল ছাত্র পরিষদের প্রতিষ্ঠা দিবস পালন করা হবে। একইসঙ্গে একাধিক জায়গায় করোনা বিধি মেনে জায়ান্ট স্ক্রিনে শোনানো হবে তৃণমূল সুপ্রিমোর বক্তৃতা।

শনিবার ত্রিপুরায় তৃণমূল কর্মী-সমর্থকদের এই কর্মসূচি পালনের ক্ষেত্রে আবার পুলিশি বাধার মুখে পড়তে হয় কিনা! রাজনৈতিক সংঘাত হওয়ার সম্ভাবনা প্রবল।

সম্পর্কিত পোস্ট