ইউক্রেন সঙ্কটকে হাতিয়ার করে গদি বাঁচাতে চাইছেন ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী!
দ্য কোয়ারি ওয়েবডেস্ক: ইউক্রেন সঙ্কটকে হাতিয়ার করে নিজের ভবিষ্যৎ সুরক্ষিত করতে চাইছেন ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন? ব্রিটেনের মানুষের মধ্যেই এই সংক্রান্ত প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে।
এমনকি বরিসের নিজের দল কনজারভেটিভ পার্টির একাংশও প্রকাশ্যে তাঁর বিরুদ্ধে ইউক্রেন সঙ্কটকে রাজনৈতিক স্বার্থে ব্যবহার করার অভিযোগ তুলেছে।
ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রীর দফতর থেকে শনিবার বিবৃতি দিয়ে জানানো হয়, ইউক্রেনের সম্পূর্ণ অধিকার আছে নিজের ভবিষ্যৎ নির্ধারিত করার। সেখানে রাশিয়া কোনভাবেই নাক গলাতে পারে না। এরপর সুর চড়িয়ে ওই বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ক্রেমলিন যদি যুদ্ধ চায় তবে আমরা প্রস্তুত।
ন্যাটোর কাছে প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে। তারা ইউরোপ জুড়ে সৈন্য, বিপুল সমরাস্ত্র মোতায়েন করুক। এরপর বরিস জনসন নিজে একটি বিবৃতি দিয়ে বলেন, আগামী সপ্তাহে পূর্ব ইউরোপে ব্রিটিশ সেনার পরিমাণ বাড়ানো হবে। সেইসঙ্গে বিভিন্ন যুদ্ধাস্ত্র পূর্ব ইউরোপের রাশিয়া সীমান্তবর্তী এস্তোনিয়ায় পাঠানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রীর এই মন্তব্য থেকে পরিষ্কার ইউক্রেন সঙ্কট নিয়ে তিনি আমেরিকার থেকেও বেশি আক্রমণাত্মক হয়ে উঠেছেন। বাইডেন প্রশাসন যখন গোটা বিষয়টি নরমে-গরমে সামলাতে চাইছে তখন ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী যেন যুদ্ধ শুরুর জন্য অধৈর্য হয়ে উঠেছেন!
এমনিতেই করোনার উপর্যপুরি হানায় গোটা ইউরোপ বিধ্বস্ত। অর্থনৈতিক পরিস্থিতি অত্যন্ত খারাপ। ব্রিটেনেও সাধারণ মানুষের মধ্যে ক্ষোভ ক্রমশ বাড়ছে। এই পরিস্থিতিতে রাশিয়ার মতো মহা শক্তিশালী দেশের সঙ্গে যুদ্ধ মানে গোটা মহাদেশের উপর ভয়াবহ আর্থিক বিপর্যয় নেমে আসবে।
এই সহজ বিষয়টি বরিস জনসনের না বোঝার কথা নয়। এতো প্রতিবন্ধকতা সত্ত্বেও তিনি যুদ্ধের জন্য উদগ্রীব হয়ে ওঠায় রীতিমতো বিস্মিত অর্থনীতিবীদ থেকে সাধারণ মানুষ।
এদিকে নিজেরই সরকারের আনা আইন ভেঙে করোনাকালীন লকডাউনের সময় ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রীর বাসস্থান বেকার স্ট্রিটে বন্ধুবান্ধবদের নিয়ে পার্টি করার অভিযোগে বরিস জনসনের রাজনৈতিক ভবিষ্যত সঙ্কটে পড়ে গিয়েছে।
তাঁর নিজের দলের সাংসদরাই অনাস্থা প্রস্তাব আনার জন্য তোড়জোড় শুরু করেছে। ফলে দেশের ভিতরে প্রবল চাপে আছেন ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী। সেই কারণেই তিনি জাতীয়তাবাদ ও কট্টর রাশিয়া বিরোধী অবস্থান নিয়ে আভ্যন্তরীণ সঙ্কট থেকে নজর অন্যদিকে ঘুরিয়ে দিতে চাইছেন বলে বিরোধীদের অভিযোগ।