দিল্লি হিংসা : মোদি-কেজরি বৈঠকে ত্রাণ নিয়ে কথা, ব্রাত্য ঘৃণ্য বক্তব্য
দ্য কোয়ারি ডেস্ক : উত্তরপূর্ব দিল্লির হিংসায় দায় যাদের, তাদের রেহাই দেওয়া যাবে না। মঙ্গলবার প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে এ অনুরোধ জানিয়েছেন দিল্লির মুখমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়াল।
এদিন সকাল ১১ টা নাগাদ সংসদ ভবনে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠকের পর কেজরিওয়াল বলেন, আমি প্রধানমন্ত্রীকে বলেছি, দেশের রাজধানীতে এমন হিংসার ঘটনা আর যাতে না ঘটে, সেটা আমাদের অবশ্যই নিশ্চিত করতে হবে।
এই সংঘর্ষের ঘটনায় দায় যাদের, তারা যে রাজনৈতিক দলের হোক না কেন, রেহাই দেওয়া হবে না। যত প্রভাবশালী মানুষই হোক, তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য প্রধানমন্ত্রীকে অনুরোধ করেছেন তিনি।
উল্লেখ্য, দিল্লির হিংসার ঘটনায় এখনও পর্যন্ত ৪৭ জনের মৃত্যু হয়েছে এবং গুরুতর জখম হয়েছেন ২০০-রও বেশি মানুষ। হিংসায় জড়িত থাকার অভিযোগে ১২০০ জনকে গ্রেফতার এবং ৩৬৯টি এফআইআর দায়ের করেছে দিল্লি পুলিশ।
আরও পড়ুনঃ উত্তরপ্রদেশ থেকে গ্রেফতার শাহরুখ
দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী হওয়ার পর প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে কেজরির এটাই ছিল প্রথম বৈঠক। এদিন কেজরি আরও বলেন, হিংসায় ক্ষতিগ্রস্তদের জরুরি ভিত্তিতে ত্রাণ বন্টনের পদক্ষেপ নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে আলোচনা করেন তিনি।
যদিও একাধিক নাগরিক অধিকার সংগঠনের অভিযোগ, এই হিংসার ঘটনায় কয়েকজন বিজেপি নেতাকে অভিযুক্ত করলেও তাঁদের বিরুদ্ধে কোনও পদক্ষেপ নেয়নি পুলিশ।
হিংসায় আক্রান্তদের পাশে যায়নি কোনও বিধায়ক বা দিল্লি সরকারের কোনও প্রতিনিধি।যথেষ্ট ত্রাণের ব্যবস্থা হয়নি বলেও কেজরি সরকারের বিরুদ্ধে অভিযোগ করেছে ওইসব সংগঠন।
যদিও, উপমুখ্যমন্ত্রী মনিশ শিশোদিয়া এদিন ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা পরিদর্শনে যাবেন বলে জানা গিয়েছে।
প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে দিল্লির মুখ্যমন্ত্রীর বৈঠকে দিল্লি হিংসায় ক্ষতিগ্রস্তদের ত্রাণ, দোষিদের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ, করোনা ভাইরাস সহ নানা বিষয়ে আলোচনা হলেও ‘ঘৃণ্য বক্তব্য’ নিয়ে কোনও আলোচনা হয়নি।
অথচ, বিজেপি নেতাদের ‘ঘৃণ্য বক্তব্য’কেই হিংসার জন্য দায়ি করছে বিভিন্ন মহল।দিল্লি বিধানসভা নির্বাচনের প্রচারে এসে নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন বিরোধী শাহিনবাগের বিক্ষোভ অবস্থান পরিবেশকে কলুষিত করছে বলে অভিযোগ করেছিলেন মোদি, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ এবং অন্যান্য বিজেপি নেতারা।
আরও পড়ুনঃ দোলের পরেই জারি হবে পুরভোটের বিজ্ঞপ্তি
প্রচারে কমপক্ষে তিনজন বিজেপি নেতা কেন্দ্রীয় মন্ত্রী অনুরাগ ঠাকুর, সাংসদ প্রবেশ বার্মা এবং প্রাক্তন বিধায়ক কপিল শর্মা উত্তেজক শ্লোগান দিয়েছেন। ঘৃণা ছড়িয়েছেন। এদের বিরুদ্ধে এফআইআর না হওয়ায় প্রশ্নও তুলেছে বিভিন্ন মহল।
উত্তরপূর্ব দিল্লির জাফরাবাদের নাগরিকত্ব সংশোধনী বিরোধী বিক্ষোভ অবস্থান তুলে দেওয়া নিয়ে পুলিশকে চরমসীমা দেওয়ার পর হিংসা ছড়ালেও তাঁর বিরুদ্ধেও এফআইআর করেনি দিল্লি পুলিশ।
সম্প্রতি দিল্লি হাইকোর্টে এনিয়ে এক মামলায় সলিসিটর জেনারেল তুষার মেহতা জানান, অভিযুক্ত বিজেপি নেতাদের বিরুদ্ধে এফআইআর নথিভুক্ত করার সময় এখনও আসেনি।
তিনি আদালতের কাছ থেকে এর জন্য সময় চেয়ে নেন। এদিন প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে দিল্লির মুখ্যমন্ত্রীর বৈঠকেও হিংসার দায় যাদের, তাদের নিয়ে কোনও আলোচনা হল না।ব্রাত্যই থাকল ‘ঘৃণ্য বক্তব্য’-এর প্রসঙ্গ।