মুখ্যমন্ত্রী বদল ঘিরে বিজেপির গোষ্ঠীদ্বন্দ্বে ত্রিপুরায় বড় সুযোগ বামেদের
দ্য কোয়ারি ওয়েবডেস্কঃ বিপ্লব দেব ইস্তফা দেওয়ার পর ত্রিপুরার নতুন মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে মানিক সাহার নাম ঘোষণার সাংবাদিক সম্মেলনেই বিজেপির গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব প্রকাশ্যে এসে গিয়েছিল। রবিবার উত্তর-পূর্বের এই রাজ্যের একাদশতম মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে মানিক সাহার শপথে সেই গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব আরও তীব্র আকার ধারণ করল।
উপস্থিত থাকলেন না রাজ্যের উপমুখ্যমন্ত্রী তথা প্রবীণ বিজেপি নেতা, দলের জনজাতি মুখ জিষ্ণু দেববর্মা। এতে বিধানসভা ভোটের আগে ত্রিপুরায় আরও নড়বড়ে হয়ে গেল বিজেপির অবস্থান। দু-দশকের টানা বাম জামানার অবসান ঘটিয়ে বিজেপি ক্ষমতায় আসায় আলোড়ন পড়ে গিয়েছিল গোটা দেশজুড়ে।
কারণ তার আগে সে রাজ্যে গেরুয়া শিবিরের তেমন কোনও অস্তিত্বই ছিল না। স্বাভাবিকভাবেই বিজেপি সরকারের কাছে মানুষের প্রত্যাশা ছিল অনেক। কিন্তু প্রত্যাশা পূরণ তো দূরের কথা ত্রিপুরার রাজনৈতিক মহলের অভিযোগ বামেরা যেটুকু করে নিয়েছিল তাও ধরে রাখতে পারেনি বিজেপি সরকার।
সব মিলিয়ে বিজেপির উপর ত্রিপুরাবাসীর ক্ষোভ তুঙ্গে। বাঙালি, জনজাতি কেউ সন্তুষ্ট নয়। এই পরিস্থিতিতে বিধানসভা ভোটের ১০ মাস আগে মুখ্যমন্ত্রী বদল করে মানুষের ক্ষোভ নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করল বিজেপি। এই সমীকরণ মোটামুটি পরিষ্কার। কিন্তু নতুন মুখ্যমন্ত্রী মানিক সাহার কোনও জনভিত্তি নেই। বরং অন্য মানিকের জনপ্রিয়তা আজও তুঙ্গে। রাজ্যের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী তথা বর্তমান বিরোধী দলনেতা মানিক সরকারের নেতৃত্বে বাম শিবির মোটামুটি ঐক্যবদ্ধ আছে।
রাজকোষের আয় বাড়াতে পড়ে থাকা জমিকে পর্যটনের কাজে ব্যবহারের উদ্যোগ সেচমন্ত্রীর
এই অবস্থায় ত্রিপুরার নির্বাচনে সরকারের কাজের পাশাপাশি দুই মানিকের প্রতি মানুষের আস্থা নিয়েও পর্যালোচনা হবে। মানিক সরকার এই বিষয়ে মানিক সাহাকে বলে বলে গোল দেবে এমনই দাবি সিপিএমের। যদিও তৃণমূল বলছে আগামী বছরের বিধানসভা ভোটে বিজেপির পতন ঘটিয়ে তারাই সরকার গঠন করবে, সিপিএম কোনও ফ্যাক্টর হবে না।
কিন্তু বাস্তব পরিস্থিতিটা অনেকটাই আলাদা। আগরতলা শহরের বাইরে সে রাজ্যে এখনও সংগঠন মজবুত করতে পারেনি তৃণমূল। জনজাতিদের মধ্যে তাদের বিন্দুমাত্র প্রভাব নেই। তুলনায় কিছুটা হলেও ভালো অবস্থায় আছে কংগ্রেস। সুদীপ রায়বর্মন বিজেপি ছেড়ে দলে ফিরে আসায় আবার উজ্জীবিত হয়ে উঠেছে হাত শিবির।
তাছাড়া প্রাক্তন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি তথা ত্রিপুরার রাজ পরিবারের সন্তান প্রদ্যুৎ কিশোর মানিক্য দেববর্মার তিপ্রা মথা জনজাতিদের মধ্যে যথেষ্ট প্রভাব ফেলেছে। এই অবস্থায় সংগঠন ছাড়া, জনপ্রিয় মুখ ছাড়া কোন অঙ্কে ত্রিপুরায় তৃণমূল বাজিমাত করার স্বপ্ন দেখছে তা রাজনৈতিক মহলের কাছে পরিষ্কার নয়।
২৩ এর লড়াই একেবারে মানুষের ঘরে ঘরে পৌঁছে দিলে আগামী বছর ত্রিপুরার ভোটে ফের পালাবদল ঘটতে পারে এমনই অনুমান রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের। একাংশের অনুমান এক্ষেত্রে অবশ্যই অ্যাডভান্টেজ প্রধান বিরোধী দল সিপিএম।