অনুব্রতর লাইনেই চলছে দল, মন্ত্রীর দাবির পরেও বীরভূম নিয়ে তৃণমূলে জল্পনা
দ্য কোয়ারি ওয়েবডেস্কঃ প্রায় দু’মাস হতে চলল বীরভূমে নেই অনুব্রত মণ্ডল। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তৃণমূল তৈরির পর জেলায় এমন পরিস্থিতি কখনও তৈরি হয়েছে কিনা তা মনেই করতে পারছেন না তৃণমূল কর্মীরা। এমনকি অনুব্রতর স্ত্রী যখন অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে ভর্তি ছিলেন, সেই সময় স্ত্রীকে দেখতে নিয়মিত কলকাতায় গেলেও জেলা ছেড়ে থাকেননি অনুব্রত।
সূত্রের খবর এবার শুধু শারীরিকভাবে অনুপস্থিতি নয়, মানসিকভাবেও বীরভূম ছাড়া তৃণমূলের কেষ্ট! এই অবস্থায় অনুব্রতকে ছাড়াই পঞ্চায়েত নির্বাচনের দিকে লক্ষ্য রেখে জেলায় বৈঠক করল তৃণমূল কংগ্রেস।রাজনৈতিক মহলে প্রচলিত কথাই হল, বীরভূমে তৃণমূল মানেই অনুব্রত। গ্রাম অধ্যুষিত লালমাটির জেলায় বেশিরভাগ তৃণমূল কর্মী নিজেদের মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের থেকেও বেশি অনুব্রত মণ্ডলের অনুগামী বলে পরিচয় দেন।
বলা যেতে পারে রাজ্যের বাকি বাইশটি জেলার থেকে বীরভূমের রাজনীতি অনুব্রতর সৌজন্যে অন্য খাতে বয়। সেই তাঁর দীর্ঘ অনুপস্থিতি নিয়ে নানান জল্পনা শুরু হয়েছে তৃণমূলেরই অন্দরে। দলীয় কর্মীদের একাংশের অনুমান শুধু শারীরিক অসুস্থতা নয়, দাদা ‘অন্য’ কারণেও কলকাতায় ঘরবন্দি করে রেখেছেন নিজেকে। এই ‘অন্য’ কারণটা সরাসরি না বললেও বোঝাই যাচ্ছে তা হল সিবিআই।
কানাঘুষো এমনও শোনা যাচ্ছে কেন্দ্রীয় এজেন্সির নজর তাঁর ওপর পড়ার পরই দলের মধ্যে কোণঠাসা হয়ে পড়েছেন অনুব্রত। নতুন প্রজন্মের দলীয় নেতারা তাঁকে জেলা সভাপতির পদ থেকে সরিয়ে দিতে চাইছেন। এমনকি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও তাঁর আদরের কেষ্টর সঙ্গে এই সময়কালে বিশেষ একটা যোগাযোগ করেননি বলে সূত্র মারফত খবর।
মুখ্যমন্ত্রী বদল ঘিরে বিজেপির গোষ্ঠীদ্বন্দ্বে ত্রিপুরায় বড় সুযোগ বামেদের
এমনই একটা পরিস্থিতিতে শেষ পর্যন্ত বীরভূমে দীর্ঘদিন পর দলীয় নেতাকর্মীদের নিয়ে বৈঠক করল তৃণমূল। রাজ্যের মন্ত্রী তথা বোলপুরের বিধায়ক চন্দ্রনাথ সিনহার নেতৃত্বে পঞ্চায়েত ভোটকে লক্ষ্য করে এই বৈঠক হয়। চন্দ্রনাথ তৃণমূলে অনুব্রত ঘনিষ্ঠ বলেই পরিচিত। তিনি বলেন, বীরভূমে অনুব্রত মণ্ডলের ঠিক করে দেওয়া লাইন ও আদর্শকে পাথেয় করেই দল এগিয়ে চলেছে।
খেয়াল করার বিষয় অনুব্রত মণ্ডলের আদর্শ, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বা অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের কথা বলা হয়নি! তবে আগেভাগে প্রস্তুতি শুরু করে দিলেও অনুব্রত মণ্ডল ময়দানে হাজির না থাকলে পঞ্চায়েত ভোটে বীরভূমে তৃণমূলের ফল কী হবে তা নিয়ে ইতিমধ্যেই সংশয় তৈরি হয়েছে শাসকদলের শীর্ষস্তরে। এই সুযোগে বিরোধীরা বীরভূমের নানান জায়গায় ধীরে ধীরে মাথাচাড়া দিয়ে উঠছে। এমনিতেই মহম্মদ বাজারের দেউচা-পাচামি কয়লা খনি প্রকল্পকে ঘিরে জেলার রাজনীতি উত্তপ্ত হয়ে আছে।