মমতার দ্রৌপদী মন্তব্যে বানচাল বিজেপির ছক
দ্য কোয়ারি ওয়েবডেস্কঃ রথ যাত্রার বিকেলে তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছেন, “আমাদের সঙ্গে বহু দলিত ও আদিবাসী মানুষ আছেন। বিজেপি দ্রৌপদী মুর্মুর বিষয়টি আগে জানালে ভেবে দেখতাম।” তাঁর এই মন্তব্যের পরই হইহই করে ময়দানে নেমে পড়েছে বাম ও কংগ্রেসের একদল স্বার্থান্বেষী মানুষ। তাদের মতে এই মন্তব্যের মাধ্যমে মমতা নাকি বুঝিয়ে দিয়েছেন তিনি বিজেপির সঙ্গেই আছেন! এইসব মন্তব্য শুনে এবার বোধহয় ঘোড়াতেও হাসবে!
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কেন এই মন্তব্য করেছেন তা তলিয়ে দেখতে গেলে একটু পিছনের দিকে হাঁটতে হবে। ১৮টি বিরোধী রাজনৈতিক দলের সর্বসম্মত প্রার্থী ঠিক করার ক্ষেত্রে তৃণমূল নেত্রীর ভূমিকা ছিল সবচেয়ে বেশি। বিরোধী দলগুলো রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে তাদের প্রার্থী হিসেবে যশবন্ত সিনহাকে মেনে নেওয়ার বিষয়টি নিঃসন্দেহে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের রাজনৈতিক উচ্চতার প্রমাণ দেয়।
কিন্তু এরপরই বিজেপি দ্রৌপদীর নাম তাদের প্রার্থী হিসেবে ঘোষণা করে।এরপর প্রথা মেনে দ্রৌপদী মুর্মু অন্যান্য বিরোধী নীতি-নেত্রীদের পাশাপাশি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কেও ফোন করে সমর্থন চেয়েছেন। এ পর্যন্ত পুরো বিষয়টাই ঠিক ছিল। কিন্তু বাংলার কোনঠাসা বিজেপি নেতারা অনৈতিক রাজনীতির পথে হেঁটে হঠাৎই ছক কষতে শুরু করেছেন।
এরাজ্যের বিজেপি নেতারা বলতে শুরু করেছেন, তৃণমূল কংগ্রেস যদি আদিবাসীদের পক্ষে থাকতো তবে তারা দ্রৌপদী মুর্মুকে সমর্থন করত। ঘটনা হচ্ছে নিজের প্রার্থীকে ছেড়ে কোন ব্যক্তি অন্যের প্রার্থীকে কোনদিন সমর্থন করেছে? এটা বিজেপি নেতারাই বলতে পারবে।
ঘরে-বাইরে ‘অসহিষ্ণুতা’ চাপে মোদি সরকার, ভাবমূর্তি ফেরাতে উপরাষ্ট্রপতি পদই হতে পারে বাজি
সবাইকে নিয়ে ঐকমত্য গড়ে তোলার দায়িত্বটা ছিল বিজেপির উপর। এক্ষেত্রে তারা সম্পূর্ণ ব্যর্থ হয়েছে। এখন শুভেন্দু অধিকারী, সুকান্ত মজুমদারদের দিয়ে বলিয়ে রাজনৈতিক ফায়দা তুলতে চাইছে গেরুয়া শিবির।
বাংলার জনপ্রিয়তম রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব হিসেবে বিজেপির এই ছক ভণ্ডুল করে দেওয়াটা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব। আর সেটা করতে গিয়েই রথের দিন দ্রৌপদী সংক্রান্ত মন্তব্যটি করেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
তাঁর এই বক্তব্যের পর আদিবাসী দ্রৌপদীকে সমর্থন করার বিষয়ে বিজেপি নোংরা রাজনীতিটা করতে পারবে না বলেই রাজনৈতিক মহলের ধারণা। কারণ মুখ্যমন্ত্রী স্পষ্ট করে দিয়েছেন বিজেপি তাঁকে সময় থাকতে কিছু জানায়নি। এক্ষেত্রে বাম ও কংগ্রেস নেতাদের একটা বিষয় বুঝতে হবে, তথ্য বিকৃতি করে বা উল্টো মানে করে মানুষের মন পাওয়া যায় না।