বর্ধমান ‘লাইনে’ ভবিষ্যৎ দেখছে সিপিএম

দ্য কোয়ারি ওয়েবডেস্কঃ বুধবার খাদ্য আন্দোলনের শহিদ দিবস উপলক্ষে বর্ধমান শহরে জেলাশাসকের অফিস ঘেরাও অভিযানের ডাক দিয়েছিল সিপিএম। সেই কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে যা যা ঘটেছে তা মোটামুটি রাজ্যবাসী জেনে গিয়েছে। এর কারণ হঠাৎই যেন নতুন রুপে হাজির হয়েছে রাজ্যের প্রাক্তন শাসক দল।

২০১১ সালে ক্ষমতা হারানোর পর এত অগ্রাসী রূপে তাদের খুব একটা দেখা যায়নি। যেখানে পুলিশ মারলে পাল্টা তাদের দিকে তেড়ে যাওয়া, কখনও বা পুলিশকেই দু চার ঘা ধরিয়ে দেওয়া আছে। তবে সবচেয়ে চমকপ্রদ বিষয়ে হল দলের অন্যতম শীর্ষ নেতা আভাস রায়চৌধুরীর গ্রেফতার হওয়া। এই ঘটনা সিপিএমের অন্দরে কার্যত তোলপাড় ফেলে দিয়েছে।

সিপিএমের নিচু তলার কর্মীরা অনেকদিন থেকেই বলছিলেন, তবে এবার জেলা ও রাজ্য স্তরের নেতাদের একাংশ প্রকাশ্যেই বলতে শুরু করেছেন এই বর্ধমান লাইনকে জেলায় জেলায় ছড়িয়ে দিতে হবে, রাজ্য নেতৃত্বকে এই পথেই আন্দোলন করতে হবে। এই বর্ধমান লাইনটা ঠিক কী?

তোলপাড় ফেলে কেন্দ্রীয় কমিটির আভাস জেলে, এবার বাকি নেতারাও কী এক‌ই পথে হাঁটবেন

এখন বর্ধমান লাইন বলে খাতায়-কলমে কিছু নেই। কিন্তু সাম্প্রতিক অতীতে পশ্চিম বর্ধমানের মেয়ে তথা ডিওয়াইএফ‌আই এর রাজ্য সম্পাদক মীনাক্ষী মুখার্জি রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে আন্দোলন করতে গিয়ে জেলে গিয়েছিলেন। দশদিন তিনি জেল হেফাজতেও ছিলেন। যা শুধু সিপিএম নয়, রাজ্য রাজনীতিতেই আলোড়ন ফেলে দিয়েছিল।

কারণ সাম্প্রতিক কালে আন্দোলন করতে গিয়ে বাংলার আর কোনও হেভিওয়েট রাজনীতিবিদের জেলে হেফাজতে যাওয়ার ঘটনা ঘটেনি। এবার বিশ্ব বাংলা লোগো উপড়ে ফেলার দিন সিপিএম কর্মীদের সঙ্গে পুলিশের সরাসরি সংঘর্ষের ঘটনায় জেলে যেতে হয়েছে সিপিএমের কেন্দ্রীয় কমিটি তথা রাজ্য সম্পাদক মণ্ডলীর গুরুত্বপূর্ণ সদস্য আভাস রায়চৌধুরীকে।

এই দুই ঘটনা তুলে ধরেই সিপিএমের অন্দরে বলা হচ্ছে, বর্তমানে আলাদা জেলা হলেও অবিভক্ত বর্ধমানের অংশ ছিল এই দুই এলাকা। তারাই মমতা সরকারের মোকাবিলায়পথ দেখাচ্ছে। এই থেকেই বর্ধমান লাইন লব্জটা চালু হয়েছে।

ঘটনা হল, ‘বর্ধমান লাইন’ শব্দ বন্ধটির সঙ্গে সিপিএম নেতাকর্মীদের অতীতে ভালোমতোই পরিচয় ছিল। কারণ রাজ্য সিপিএমের অন্দরে বরাবরই ব্যাপক দাপট ছিল বর্ধমানের হরেকৃষ্ণ কোঙার, বিনয় চৌধুরী, বিনয় কোঙার, নিরুপম সেন, সাইফুদ্দিন চৌধুরীদের জেলার।

আগ্রাসী বর্ধমান আলিমুদ্দিনের চলার লাইন ঠিক করায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিত বলে মনে করেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা। এবারেও অবিভক্ত বর্ধমানের নেতাকর্মীরা যে অগ্রাসী ভূমিকা নিচ্ছে তা সময়ের দাবি মেনে সঠিক পথেই চলেছে, এমনটাই ধারণা অনেকের।

সম্পর্কিত পোস্ট