ভারতের ‘খণ্ডিত হৃদয়’ জুড়তে গিয়ে হিন্দুত্ববাদীদেরও পাশে পাচ্ছেন রাহুল
দ্য কোয়ারি ওয়েবডেস্কঃ রাহুল গান্ধির ‘ভারত জোড়ো’ যাত্রা ৬৫ দিনে পা রাখল। এই মুহূর্তে মহারাষ্ট্রে হাঁটছেন তিনি। তবে মারাঠা ভূমে সবচেয়ে বড় খবর হল রাহুলের পাশে হাঁটলেন বালাসাহেব ঠাকরের নাতি আদিত্য। যা নিয়ে মহারাষ্ট্রের রাজনীতিতে তোলপাড় পড়ে গিয়েছে।
একনাথ শিন্ডের নেতৃত্বাধীন শিবসেনা তীব্র কটাক্ষ করেছে উদ্ধব ঠাকরেকে। তাদের দাবি, খড়কুটো আঁকড়ে বাঁচতে চাইছেন উদ্ধব। তাই চক্ষু লজ্জার খাতিরে নিজে না গেলেও ছেলেকে পাঠিয়েছিলেন রাহুলের পদযাত্রায়। উল্লেখ্য, হিন্দুত্ব ও মারাঠাবাদের রাজনীতি করা বালাসাহেব কংগ্রেস এবং গান্ধি পরিবারের তীব্র বিরোধী ছিলেন।
তবে আদিত্য ঠাকরের এই হাঁটা নিয়ে আলোচনাতেও তাদের লাভ দেখছে কংগ্রেস। কারণ তামিলনাড়ু, কেরল, কর্নাটক, তেলেঙ্গানা, অন্ধ্রপ্রদেশের (এই রাজ্যগুলি পেরিয়ে এসেছে রাহুলের যাত্রা) মতো মহারাষ্ট্রেও শিরোনামে উঠে এসেছে ভারত জোড়ো।
যার সাহায্যে ঘুরে দাঁড়ানোর অক্সিজেন পাওয়ার স্বপ্ন দেখছেন মারাঠাভূমের কংগ্রেস নেতারা। অশোক চৌহানরা গোটা পরিষদীয় দলকে একাট্টা করে ময়দানে নামাতে সফল হয়েছেন। শরিক এনসিপি ও পাশে এসে দাঁড়িয়েছে। এবার উদ্ধব ঠাকরে শিবিরও সঙ্গে আসায় বিধানসভা নির্বাচনে ঘুরে দাঁড়ানোর স্বপ্নে বুঁদ কংগ্রেস।
সময়ের দাবির অভিন্ন দেওয়ানিতেই চূড়ান্ত বৈষম্যের আশঙ্কা
এক্ষেত্রে সবচেয়ে লক্ষণীয় বিষয় হল, হৃদয় থেকে খণ্ডিত ভারতকে জোড়ার ডাক দিয়ে গান্ধিগিরির স্টাইলে রাহুল যে কর্মসূচি নিয়েছেন তাতে হিন্দুত্ববাদীদের একাংশেরও সমর্থন পাওয়া যাচ্ছে। মূলত আরএসএস ও বিজেপির বিরুদ্ধে বিভাজনের রাজনীতি, মানবাধিকারের থেকে উগ্র জাতীয়তাবাদকে প্রাধান্য দিয়ে ভারত রাষ্ট্রের অন্তরাত্মা বদলে দেওয়ার অভিযোগ তুলে ভারত জোড়োয় নেমেছেন রাহুল।
অর্থাৎ, দেশের উগ্র হিন্দুত্ববাদী শিবিরের বিরুদ্ধেই রাহুল তথা কংগ্রেসের তীর। কিন্তু উদ্ধব শিবিরের শিবসেনার পাশে থাকাই প্রমাণ করল, হিন্দুত্ববাদীদের একাংশের সমর্থনও পাচ্ছেন রাহুল। মূলত মোদি-শাহদের বিজেপির বিরুদ্ধে দেশের গণতন্ত্রের গলা টিপে ধরা, যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামোয় আঘাত হানার মতো অভিযোগ এনেছে এই হিন্দুত্ববাদীরা।
তাৎপর্যপূর্ণভাবে এই অভিযোগগুলো নিয়ে বিরোধীরাও সরব। সবমিলিয়ে রাহুল গান্ধির ভারত জোড়ো ক্রমশই বিরোধীদের ঐক্যবদ্ধ করতে করতে এগোচ্ছে। তবে এই ঐক্যে কেসিআরের ভারত রাষ্ট্র সমিতি, অরবিন্দ কেজরিওয়ালের আপ, আসাদুদ্দিন ওয়েসির মিম-এর মতো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের তৃণমূল কংগ্রেস থাকবে না বলেই মনে করছে রাজনৈতিক মহল। এরা যেমন কংগ্রেসকে জায়গা ছাড়তে রাজি নয়, তেমনই বিজেপি বিরোধীতার প্রশ্নে এই চারটি দলে বিশ্বাসযোগ্যতা নিয়েও প্রশ্ন আছে কংগ্রেসের।