সংঘাতের আবহেই প্রধানমন্ত্রী মোদি এবং অমিত শাহের সঙ্গে দেখা করতে গেলেন জ্যোতিরাদিত্য সিন্ধিয়া

দ্য কোয়ারি ওয়েবডেস্কঃ এই মুহুর্তে জাতীয় রাজনীতির মধ্যমণি মধ্যপ্রদেশ। শাসক দলের ৬ জন মন্ত্রী সহ ১১ জন বিধায়কের ব্যাঙ্গালুরু যাত্রা এবং মধ্যরাতে কমলনাথ সরকারের ২০ জন মন্ত্রীর আচমকা ইস্তফা ধীরে ধীরে উন্মাদনা বাড়িয়ে তুলছিল। এরই মধ্যে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি এবং স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের সঙ্গে বর্ষীয়ান কংগ্রেস নেতা জ্যোতিরাদিত্য সিন্ধিয়ার বৈঠক সেই জল্পনা আরও বাড়িয়ে তুলেছে। সূত্রের খবর, মঙ্গলবারই বিজেপিতে যোগ দিতে পারেন মধ্যপ্রদেশের একাধিক শীর্ষ নেতৃত্ব।

 

ইতিমধ্যেই কংগ্রেস সভানেত্রী সোনিয়া গান্ধীর কাছে ইস্তফা পাঠিয়েছেন পারক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী। ইতিমধ্যেই তাঁর সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করেছেন শচীন পাইলট। কিন্তু সিন্ধিয়ার তরফে কোনও উত্তর মেলেনি। এরই মধ্যে সিন্ধিয়ার ইস্তফা গ্রহণ করেন দলের সাধারণ সম্পাদক কেসি ভেনুগোপাল। জ্যোতিরাদিত্য সিন্ধিয়ার ওপর দলবিরধী কার্যকলাপের অভিযোগ তোলেন তিনি।

 

 

সোমবার চাটার্ড বিমান করে ব্যাঙ্গালুরু পথে রওনা দেন মধ্যপ্রদেশের কমলনাথ সরকারের ৬ মন্ত্রী সহ ১১ জন বিধায়ক। সূত্রের খবর, প্রত্যেকেই জ্যোতিরাদিত্য সিন্ধিয়ার ঘনিষ্ঠ বলে পরিচিত। রাজনৈতিক মহলের মতে, ২০১৯ এর বিধানসভা নির্বাচনে সম্ভাব্য মুখ্যমন্ত্রীর তালিকায় ছিলেন জ্যোতিরাদিত্য সিন্ধিয়া। কিন্তু তাঁর পরিবর্তে মুখ্যমন্ত্রী পদের জন্য ইন্দিরা ঘনিষ্ঠ কমলনাথকে বেছে নেয় দল। তাই ঘটনার পিছনে জ্যোতিরাদিত্য সিন্ধিয়ার যোগ রয়েছে বলে শুরু থেকেই সন্দেহ করছিলেন অনেকেই।

আরও পড়ুনঃ মোদীর শাসনে সত্যিই ‘হিন্দুত্ব খাতরেমে’

সোমবার সন্ধ্যায় মুখ্যমন্ত্রী কমলনাথের কাছে ইস্তফা পাঠান ৬ বিদ্রোহী মন্ত্রী। সরকার রক্ষা করতে চিন্তায় পড়েন মুখ্যমন্ত্রী কমলনাথ।  এরই মাঝে সরকার টিকিয়ে রাখতে একযোগে ইস্তফা দেন ২০ জন মন্ত্রী। কেবিনেটের পুনর্গঠনের জন্য আর্জি জানান কংগ্রেস বিধায়করা।

 

৬ জন বিদ্রোহী মন্ত্রীর ইস্তফার পরেই জ্যোতিরাদিত্য সিন্ধিয়ার সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করে কংগ্রেস। সোমবার মধ্যপ্রদেশের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী দিগ্বিজয় সিং জানিয়েছেন, আমরা সিন্ধিয়াজির সঙ্গে কথা বলার চেষ্টা করেছি। কিন্তু উনি এই মুহুর্তে অসুস্থ থাকার কারণে তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি।

 আরও পড়ুনঃ ওড়িশায় ইস্পাত প্রকল্পের বিরুদ্ধে আন্দোলন বনবাসীদের

গতবছর মধ্যপ্রদেশের ২৩০ জন বিধায়কের মধ্যে ১২০ জন বিধায়ক নিয়ে সরকার গঠন করেন কমলনাথ। যার মধ্যে ১১৪ জন কংগ্রেস বিধায়ক, এসপি এবং বিএসপি বিধায়কের সংখ্যা ৩ এবং চারজন নির্দল। বাকি ১০৭ টি আসনের মধ্যে দুটি খালি রয়েছে। যদি কংগ্রেসের ১৭ জন বিধায়ক ইস্তফা দেন, তাহলে কর্ণাটকের পর মধ্যপ্রদেশ হারাতে চলেছে কংগ্রেস।

মধ্যপ্রদেশের রাজনৈতিক ডামাডোলের জন্য মধ্যপ্রদেশের মাফিয়া রাজকেই দুষেছেন মুখ্যমন্ত্রী কমলনাথ। তিনি জানিয়েছেন, মধ্যপ্রদেশে বিজেপি ক্ষমতায় থাকাকালীন গোটা রাজ্যজুড়ে মাফিয়া রাজ মানুষকে সহ্য করতে হয়েছে। মাফিয়া রাজ থেকে মুক্তি পেতে কংগ্রেসকে বেছে নেয় সাধারণ মানুষ। সেই মাফিয়ারাই এখন সরকার ভাঙতে চাইছে।

অন্যদিকে মধ্যপ্রদেশের নতুন নেতার মুখ খুঁজতে দলের বিধায়কদের সঙ্গে বৈঠক করেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। সব মিলিয়ে জ্যোতিরাদিত্য সিন্ধিয়ার বিজেপিতে যোগ এখন শুধুমাত্র সময়ের অপেক্ষা।

সম্পর্কিত পোস্ট