জুনিয়র ডাক্তারদের মধ্যে করোনার চিকিৎসা নিয়ে উসকানিতে বিক্ষোভে বাঙুর হাসপাতাল চত্বর

দ্য কোয়ারি ওয়েবডেস্কঃ করোনার চিকিৎসা নিয়ে জনা কয়েক জুনিয়র ডাক্তারের ইন্ধনে বিক্ষোভে উত্তপ্ত হয়ে উঠল এমআর বাঙুর হাসপাতাল। শুক্রবার সকাল সাড়ে দশটা থেকে দুপুর প্রায় ১টা পর্যন্ত টানা হাসপাতালের সুপারের বিল্ডিং ঘিরে চলল বিক্ষোভ।

পরিস্থিতি জানতে সুপারকে দফায় দফায় ফোন করলেন রাজ্যের স্বাস্থ্যসচিব, রোগী কল্যাণ সমিতির চেয়ারম্যান তথা মন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস-সহ প্রশাসনিক কর্তাব্যক্তিরা। অবশেষে বিক্ষোভ উঠে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসে।

ঘটনার সূত্রপাত দিন কয়েক আগেই। অভিযোগ, এমআর বাঙুর হাসপাতালে করোনা আক্রান্ত রোগীদের চিকিৎসা হবে, এই নোটিস পাওয়ার পর থেকেই জনা কয়েক জুনিয়র ডাক্তার মিলে হাসপাতালের অন্যান্য কর্মীদের এ নিয়ে ভুল বোঝাতে শুরু করেন।

সাফাইকর্মী, নিরাপত্তারক্ষী ও চতুর্থ শ্রেণির অন্যান্য কর্মীদের বোঝানো হয় যে করোনা আক্রান্তদের চিকিৎসা করলে, তাঁদের শরীরেও বাসা বাঁধবে মারণ ভাইরাসটি। এতে আতঙ্কিত হয়ে শুক্রবার সকাল থেকে সুপার শিশির নস্করের অফিসের সামনে জড়ো হন তাঁরা। কাজ করবেন না, এই দাবিতে শুরু করেন বিক্ষোভ।

আরও পড়ুনঃ কাল রাত ৯টায় শক্তির প্রদর্শন -“৯” এর রহস্য ভেদে হাজার প্রশ্ন – উত্তর অজানা

এমনকী ডিউটি ছেড়ে কোনও কোনও নার্সকেও সেই বিক্ষোভে যোগ দিতে দেখা যায়। হাসপাতাল সূত্রে খবর, ওই জুনিয়র ডাক্তারদের মাসে তিনবার আইসোলেশন ওয়ার্ডে ডিউটি দেওয়া হয়েছিল। অথচ তাঁরা সেই ডিউটি না করে অন্যদের উসকানি দিচ্ছেন বলে গুরুতর অভিযোগ উঠেছে।

বাঙুর হাসপাতালের নতুন বিল্ডিং, যেখানে আইসোলেশন ওয়ার্ড খুলে করোনা পজিটিভ রোগী কিংবা সন্দেহভাজনদের চিকিৎসা চলছে, সেখানে খাবার পরিবেশনের দায়িত্বে রয়েছেন চারজন ডায়েট বয়।

তাঁদের অভিযোগ, যথাযথ সুরক্ষা অর্থাৎ পিপিই ছাড়াই তাঁদের কাজে বাধ্য করা হচ্ছে। তাতে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কায় কাঁটা তাঁরা। তাই এদিনের বিক্ষোভে দেখা গেল এঁদেরও। তবে ডায়েট বয়দের এই অভিযোগ খারিজ করে সুপার স্পষ্ট জানিয়েছেন, হাসপাতালে পর্যাপ্ত সংখ্যক পিপিই আছে। তাই কাউকেই সুরক্ষা ছাড়া কাজ করতে দেওয়া হচ্ছে না। এই অভিযোগ একেবারেই ভিত্তিহীন।

নার্সদের আবার কারও অভিযোগ, নতুন এবং পুরনো বিল্ডিংয়ে রোগীদের দেখভাল করতে গেলে সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা। কারণ, নতুন বিল্ডিংয়ে COVID-19 আক্রান্তদের চিকিৎসা হচ্ছে আর পুরনো বিল্ডিংয়ে রয়েছেন অন্যান্য রোগীরা। তাই করোনার চিকিৎসা ব্যবস্থা হোক শুধু নতুন বিল্ডিংয়েই।

এর জবাবে সুপার জানিয়েছেন, এই মুহূর্তে সরকারি নির্দেশ মেনে চলতে হবে। নতুন বা পুরনো আলাদা করে কিছু নয়, যেভাবে স্বাস্থ্য দপ্তর চাইছে, সেই নিয়ম মেনে কাজ করাটাই এখন সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। সুপারের সঙ্গে কথা বলার পর তাঁরা আশ্বস্ত হয়ে বিক্ষোভের পথ থেকে সরে আসেন। তবে পরিষেবা বন্ধ রেখে বিক্ষোভের পক্ষে নন এঁরা কেউই।

যাঁদের উসকানিতে আজকের এই বিক্ষোভ, তাঁদের চিহ্নিত করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে সুপারকে। অপরাধ প্রমাণিত হলে মিলবে কড়া শাস্তি।

সম্পর্কিত পোস্ট