সব ধরনের অসুস্থ মানুষ সম্পর্কে রেকর্ড তৈরি করতে হবে, রাজপথে কাউন্সিলররা

দ্য কোয়ারি ওয়েবডেস্কঃ করোনা–যুদ্ধে এবার নামছেন কাউন্সিলররা। পুর–স্বাস্থ্যকর্মীদের নিয়ে বাড়ি–বাড়ি গিয়ে খবর নিতে হবে কেউ অসুস্থ কি না। সব ধরনের অসুস্থ মানুষ সম্পর্কে রেকর্ড তৈরি করতে হবে। সংশ্লিষ্ট পুরসভাকে জানাতে হবে। সেই অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে। কলকাতা পুরসভার ১৪১ ওয়ার্ড দিয়ে কাজ শুরু হচ্ছে।

পুর ও নগরোন্নয়ন মন্ত্রী এবং কলকাতার মহানাগরিক ফিরহাদ হাকিমের সঙ্গে নবান্নে বৈঠক করেন মুখ্য সচিব রাজীব সিন্হা। কলকাতা পুরসভা–সহ রাজ্যের সব পুরসভায় করোনা সংক্রমণ ঠেকাতে বিশেষ নজরদারির ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে ঠিক হয়েছে।

কীভাবে গোটা প্রক্রিয়া সম্পন্ন হবে?

কলকাতা পুরসভায় এই কাজ করবেন কাউন্সিলর, পুরসভার স্বাস্থ্যকর্মী ও বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন। এ ছাড়া এই কাজ দেখভাল করার জন্য প্রত্যেক বরোয় একজন করে ম্যানেজার ও ওয়ার্ডে একজন করে ডেপুটি ম্যানেজার নিয়োগ করা হবে। কীভাবে এই পুরো কাজটি হবে, তা নিয়ে এদিন বৈঠক হয়।

পুর ও নগরোন্নয়ন মন্ত্রী জানান, কলকাতা পুরসভার সব কাউন্সিলরকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, পাড়ায় পাড়ায়, বাড়ি–বাড়িতে গিয়ে কেউ অসুস্থ কি না তা দেখতে হবে। বিশেষ করে বস্তি এলাকায় যে–সব স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন ও সংস্থার কর্মীরা কাজ করেন, তাঁরাও  যুক্ত হবেন।

আরও পড়ুনঃ দেশজুড়ে ভয়াবহ আকাল হতে পারে নুনের, চিঠি প্রধানমন্ত্রীকে

শুধু সর্দি, কাশি, জ্বর এবং করোনার উপসর্গ দেখা গেলেই নয়, যে–কোনও অসুস্থ মানুষের সম্পর্কে খেঁজখবর রাখতে হবে।

অসুখের বিস্তারিত তথ্যের সঙ্গে অসুস্থ ব্যক্তির নাম, ঠিকানা, ফোন নম্বর নিয়ে রাখতে হবে। এই সব তথ্য–সংবলিত নথি দিতে হবে ওয়ার্ডের ডেপুটি ম্যানেজারকে।

তাঁরা  বরোর ম্যানেজারকে দেবেন এই নথি। বরো ম্যানেজার ফোনে অসুস্থদের অবস্থা সম্পর্কে খোঁজখবর নেবেন। প্রয়োজনে তাঁরা পুরসভার চিকিৎসকদের দেখানোর ব্যবস্থা করবেন।

সম্ভব হলে বাড়িতেই চিকিৎসা করা হবে। হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার প্রয়োজন হলে পুরসভাই অ্যাম্বুল্যান্সে করে সরকারি হাসপাতালে পৌঁছে দেবে। এই ব্যবস্থা রাজ্যের সব পুরসভাতেই চালু করা হবে বলে জানিয়েছেন মন্ত্রী।

গোটা প্রক্রিয়ার সঙ্গে স্বাস্থ্য দফতরের সমন্বয়ঃ

এই প্রক্রিয়ার সঙ্গে স্বাস্থ্য দফতরের সমন্বয় করবেন আবাসন সচিব ওঙ্কার সিং মিনা। প্রশাসনের তরফ থেকে এই কাজের জন্য তঁাকে নোডাল অফিসার করা হয়েছে। বিভিন্ন পাড়া থেকে পাওয়া তথ্য একটি অ্যাপের মাধ্যমে পুরসভা স্বাস্থ্য দপ্তরকে পৌঁছে দেবে।

উল্লেখ্য, এখন গ্রামাঞ্চলে আশা–কর্মীরা ‘সন্ধানে’ অ্যাপের সাহায্যে করোনা ও অন্যান্য উপসর্গের তথ্য লিপিবদ্ধ করছেন।

এদিন পুর ও নগরোন্নয়ন মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম বলেন, ‘এখন যুদ্ধকালীন পরিস্থিতি চলছে। যে–সব ওয়ার্ডে করোনা–আক্রান্তদের সন্ধান পাওয়া যাচ্ছে, সেই সব ওয়ার্ডকে খুব ভাল ভাবে স্যানিটাইজ করা হচ্ছে। সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে, সব ওয়ার্ডকেই স্যানিটাইজ করা হবে ধীরে ধীরে। এই কাজ ২০টি গাড়ি, ১২০টি মেশিনের সাহায্য নিয়ে করা হচ্ছে। আরও গাড়ি ও মেশিনের অর্ডার দেওয়া হয়েছে। কিন্তু লকডাউনের কারণে পেতে দেরি হচ্ছে।’

আরও পড়ুনঃ রেশন বন্টনে অনিয়ম, বদলি করা হল খাদ্য দফতরের সচিবকে

মেয়র ফিরহাদ হাকিমের বক্তব্যঃ 

মন্ত্রী বলেন, ‘মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি সংক্রমণ ঠেকানোর সব রকম পরিকল্পনাই করছেন। যেভাবেই হোক, এই যুদ্ধ আমাদের জিততেই হবে। নিজেদের মধ্যে সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখতে হবে। যাঁরা এই বিষয়ে সতর্ক হচ্ছেন না, তঁারা নিজের, পরিবারের এবং সমাজের জন্য বিপদ ডেকে আনছেন।’

এদিন মেয়র হিসেবে কলকাতা পুরসভার কাউন্সিলরদের প্রতি তাঁরা বার্তা দিয়ে বলেছেন, ‘আপনাদের কাছে একান্ত অনুরোধ, নিজেদের এলাকায় যেভাবে ক্ষুধার্তদের মুখে অন্ন তুলে দিচ্ছেন, সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখার জন্য সচেতন করছেন, যে–সব গরিব মানুষের রেশন কার্ড নেই তাঁদের কার্ড পৌঁছে দিচ্ছেন। ঠিক একই রকম গুরুত্বের সঙ্গে অসুস্থ মানুষদের, বিশেষ করে বস্তি এলাকার অসুস্থদের তথ্য সংগ্রহের কাজটিও আপনাদের দেখভাল করতে হবে। করোনা সংক্রমণ ঠেকাতে এই তথ্য খুব প্রয়োজন।’

সম্পর্কিত পোস্ট