মিডিয়াকে একটা চমকদার শিরোনাম দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী, প্যাকেজকে এভাবেই ব্যাখ্যা কংগ্রেসের

সর্নিকা দত্ত

মঙ্গলবার প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী দ্বারা করা ২০ লক্ষ কোটি টাকার আর্থিক প্যাকেজ ঘোষণার পরে কংগ্রেস, তৃণমূল সহ বিরোধীরা বলছে, প্রধানমন্ত্রী এই ঘোষণার মাধ্যমে কেবল মিডিয়াকে একটি চমকদার ‘শিরোনাম’ দিয়েছেন। এতে গরিব সাধারণ মানুষ থেকে শুরু করে পরিযায়ী শ্রমিক কারো জন্যেই কোনও ‘হেল্পলাইন’ নেই।

বিগত সময়ে বারংবার তৃণমূল, কংগ্রেস এবং সিপিএম পরিযায়ী শ্রমিকদের বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীর নীরবতা নিয়ে সরব হয়েছিল। তাদের দাবি ছিল যে করুণ পরিস্থিতির মধ্যে এই মুহূর্তে তারা যাচ্ছে এই অবস্থায় প্রধানমন্ত্রীর নীরবতা হতাশাজনক। মঙ্গলবার শুধু প্যাকেজ ঘোষণা করেই চমক দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। এদের ভবিষ্যৎ কি হতে চলেছে সে সম্পর্কে কোনও দিশা দেখাতে পারেননি তিনি।

প্যাকেজের নিয়ে প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করতে গিয়ে কংগ্রেস মুখপাত্র রণদীপ সুরজেওয়ালা ট্যুইট করেছেন, “পরিযায়ী শ্রমিকরা যেভাবে তাদের বাড়িতে ফেরার জন্য ব্যগ্র হয়ে আছে। তাদের এই মুহূর্তে নিরাপদে বাড়ি ফেরানোর দায়িত্ব সরকারের। কিন্তু এ বিষয়ে কেন্দ্রীয় সরকারের ভূমিকা হৃদয়বিদারক। প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যে দেশের মানুষ ভেবেছিল এদের জন্য কোন আশার খবর থাকবে। লক্ষ লক্ষ পরিযায়ী শ্রমিককে হতাশ করেছেন প্রধানমন্ত্রী। ওই মানুষগুলির প্রতি সংবেদনশীলতার অভাব বাস্তবে মোদিজীর অদক্ষতার প্রমাণ। বিষয়টি দেশবাসীকে হতাশ করেছে।”

কংগ্রেসে এও বলেছে,প্রধানমন্ত্রী মিডিয়াকে একটি বড় শিরোনাম দিয়েছেন, কিন্তু দেশবাসীর জন্য এতে কোনও হেল্পলাইন নেই। তিনি পরিযায়ী শ্রমিকদের নিরাপদে বাড়ি ফেরানো এবং শ্রমিকদের মৃত্যুর বিষয়েও কিছুই বলেননি তিনি। বিষয়টি যথেষ্টই হতাশার। ‘

লকডাউন কি উঠবে? টেস্টের রিপোর্টই ঠিক করবে ভবিষ্যৎ বলছেন বিশেষজ্ঞরা

এদিকে পশ্চিমবঙ্গের বিরোধী দলনেতা আব্দুল মান্নানের কথায়, প্রধানমন্ত্রীর ঘোষণায় কোনও নতুনত্ব নেই। চমক থেকে বেরিয়ে তিনি কি করতে চাইছেন তা স্পষ্ট ভাবে বললেই দেশবাসী আরও খুশি হতেন।

সিপিএম নেতা সীতারাম ইয়েচুরি বলেছেন, প্রধানমন্ত্রী পরিযায়ী শ্রমিকদের কষ্ট ও যন্ত্রণার জ্বলন্ত বিষয়গুলি সমাধান করতে ব্যর্থ হয়েছেন।

তৃণমূল কংগ্রেসও প্রধানমন্ত্রী ঘোষিত প্যাকেজের বাস্তবতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন। তবে তৃণমূলের তরফ থেকে প্যাকেজের ঘোষণাকে স্বাগত জানানো হয়েছে। তবে সন্দেহ প্রকাশ করা হয়েছে এর সঠিক রূপান্তর নিয়ে।

তৃণমূলের জাতীয় মুখপাত্র ডেরেক ও’ব্রায়েন বলেন, প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যে একটি বাক্স এবং তার বাইরের সুন্দর মোড়ক সম্পর্কে আমরা জানতে পারলাম। কিন্তু সেই বাক্সের মধ্যে কি রয়েছে তা দেশের মানুষ জানতে পারেনি। এর জন্য তাদের আরও অপেক্ষা করতে হবে।

ডেরেকের ভাষায়, কুড়ি লক্ষ কোটি প্রতিশ্রুতি এবং দেশের জিডিপির ১০ শতাংশের কথা এই প্যাকেজে বলা হয়েছে। তবে আমাদের অতীত অভিজ্ঞতা বলছে এর পিছনে কিছু লুকোনো কন্ডিশন রয়েছে। কারণ শুধু প্যাকেজের ঘোষণা এখানে করা হয়েছে সেই প্যাকেজের বিস্তারিত তথ্য তিনি দেননি।

এদিন ডেরেক স্পষ্ট করে দিয়েছেন, যে কোনও আর্থিক প্যাকেজ স্বাগত তবে বিস্তারিত বিবরণ কই? এই প্যাকেজে অর্থ ধার করে আসবে, টাকা ছাপিয়ে আসবে না কর ছাড় দিয়ে আসবে? নাকি পুরোনো প্রকল্পগুলি রি-প্যাকেজিং করে?

অথচ পরিযায়ী শ্রমিকরা যে ক্রীতদাসে পরিনত হচ্ছে, পিএম কেয়ার ফান্ড, রাজ্যগুলির পাওনা টাকা, তা নিয়ে কোনও কথা নয়?

সম্পর্কিত পোস্ট