ফের রাজ্যপালের নিশানায় মুখ্যমন্ত্রী, সৌজন্যে কিষাণ ক্রেডিট কার্ড
দ্য কোয়ারি ওয়েবডেস্কঃ ফের পশ্চিমবঙ্গের রাজ্যপাল জগদীপ ধনকরের নিশানায় রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। শুক্রবার কেন্দ্রীয় সরকারের প্রকল্প কিষান ক্রেডিট কার্ড নিয়ে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে বিঁধলেন রাজ্যপাল।
প্রতিদিনের মতোই এদিনও ট্যুইট বার্তায় রাজ্যের প্রশাসনিক প্রধানকে নিশানা করেছেন তিনি। পাশাপাশি দেশের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির ভূয়সী প্রশংসা করেন তিনি। এ দিন ট্যুইটে তিনি লেখেন, ‘কৃষিজীবী,পরিযায়ী এবং হকারদের কষ্ট লাঘব করার জন্য প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি যে পদক্ষেপ করেছেন তা প্রশংসনীয়।’
পিএম-কিষাণ লাগু না করার ফলে রাজ্যের 70 লক্ষ কৃষিজীবীদের ইতিমধ্যেই সাত হাজার কোটি টাকার লোকসান হয়েছে, যদিও সারা দেশ জুড়ে কৃষিজীবীরা এর সুফল উপভোগ করছেন।
— Governor West Bengal Jagdeep Dhankhar (@jdhankhar1) May 15, 2020
প্রধানমন্ত্রীর ঘোষণায় কৃষকদের জন্য সুবিধা, হকার ও পরিযায়ী শ্রমিকদের কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন,
- পিএম-কিষানের উপভোক্তা কৃষিজীবীগণ কিষাণ ক্রেডিট কার্ডের মাধ্যমে ২ লক্ষ কোটি টাকার রেয়াতি ঋনের সহায়তা পাবেন।
- হকাররা কার্যকরী মূলধনের জন্য শুরুতেই দশ হাজার করে ঋণ পাবেন।
- পরিযায়ী শ্রমিক দু’মাস বিনামূল্যে রেশন পাবেন।
- জনপ্রতি মাসিক ৫ কেজি করে শস্য এবং পরিবার প্রতি ১ কেজি করে ছোলা বরাদ্দ।
মুখ্যমন্ত্রীকে অনুরোধ করব স্বতঃপ্রণোদিত ভাবে পিএম- কিষান লাগু করুন। যাতে রাজ্যের ৭০ লক্ষ কৃষিজীবী কিষান ক্রেডিট কার্ডের মাধ্যমে তাদের প্রাপ্য রেয়াতি আর্থিক সহায়তা লাভ পেতে পারেন। পিএম- কিষান লাগু না হওয়ার ফলে রাজ্যের ৭০ লক্ষ কৃষিজীবীদের ইতিমধ্যেই ৭ হাজার কোটি টাকার লোকসান হয়েছে। যদিও সারা দেশজুড়ে কৃষিজীবীরা এই সুফল উপভোগ করছেন।’
@MamataOfficial কে অনুরোধ স্বতঃপ্রণোদিতভাবে পিএম-কিষান লাগু করুন যাতে রাজ্যের 70 লক্ষ কৃষিজীবী কিষাণ ক্রেডিট কার্ডের মাধ্যমে তাঁদের প্রাপ্য রেয়াতি আর্থিক সহায়তার লাভ পেতে পারেন।
— Governor West Bengal Jagdeep Dhankhar (@jdhankhar1) May 15, 2020
করোনা আবহে শুরুতে সাহায্যের আশ্বাস দিলেও কার্যক্ষেত্রে এই দিনে কখনোই রাজ্য সরকারের পাশে পাওয়া যায়নি রাজ্যপাল জাগদীপ ধনকারকে।
করোনা পরিস্থিতির মধ্যেও রাজভবন বনাম নবান্নের সংঘাত যথারীতি অব্যাহত রয়েছে। বৃহস্পতিবারই কলকাতা পুরসভার প্রশাসক নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি নিয়ে বিজ্ঞপ্তি মুখ্যমন্ত্রীকে বিঁধেছিলেন তিনি। এদিন কেন্দ্রীয় ঘোষণাকে সামনে রেখে মুখ্যমন্ত্রীকে নিশানা করলেন রাজ্যের সাংবিধানিক প্রধান।
কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রীর ঘোষণাকে পরিকল্পিত মিথ্যাচার বলছে বাম-কংগ্রেস-তৃণমূল
আসলে রাজ্যপাল হিসাবে এই রাজ্যের দায়িত্ব গ্রহণের পর থেকেই বারংবার তাঁকে সরকারের বিরুদ্ধে সরব হতে দেখা গিয়েছে। সরকারপক্ষ বারবারই নরমে-গরমে রাজ্যপালকে বুঝিয়ে দিয়েছেন তিনি রাজ্যের সাংবিধানিক প্রধান হলেও তিনি নির্বাচিত নন। ববং তিনি ‘পার্টি ম্যান’।
করোনা আবহে যখন কেন্দ্র-রাজ্য একসঙ্গে কাজ করার কথা বারবারই বলছেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ঠিক এই পরিস্থিতিতে রাজভবন থেকে বারবার মুখ্যমন্ত্রীকে আক্রমণ সেই সমন্বয়ে সামান্য হলেও বাধা তৈরি করেছে বলে মনে করছে তৃণমূল।
এদিন এই নিয়ে তৃণমূল কংগ্রেসের মন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্যকে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেছেন, রাজ্যপাল আসলে কি চান রাজ্যের মানুষ তা বুঝে গিয়েছে। তাই তাঁর কথাকে সেভাবে গুরুত্ব দিচ্ছে না কেউ। ওনাকে ওনার মতো করে বলতে দিন।
তৃণমূলের অপর নেতা রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছেন, রাজ্যের মানুষের শুভাকাঙ্ক্ষী সত্যিই যদি রাজ্যপাল হয়ে থাকেন তাহলে কেন করোনা পরিস্থিতিতে অন্তত এক বছরের জন্য রাজ্যের ঘরে থাকা ঋণ মুকুবের কথা বলছেন না। তাহলে তো রাজ্যবাসীর আরো উপকার হতো। আসলেই উনি রাজভবনে বসে দলের কথাই রাজ্যবাসীর কাছে পৌঁছে দিতে চান। প্রত্যেকদিন ট্যুইট করে সেই কাজটি করছেন তিনি।