লকডাউনের প্রথম এক মাসেই ৮৪ শতাংশ ভারতীয়ের আয় কমেছে: সমীক্ষা
সর্নিকা দত্ত
গোটা দেশে লকডাউন ৫৪ তম দিনে পড়ল আজ। এই লকডাউন দেশবাসীর জীবনযাত্রাকে অনেক ক্ষেত্রেই বদলে দিয়েছে। এর সবচেয়ে বড় উদাহরণ প্রকাশ্যে এসেছে একটি সমীক্ষায়।
লকডাউনের মধ্যেই গোটা দেশজুড়ে করা এক সমীক্ষায় দেখা গেছে যে ভারতের ৮৪% ভারতীয় পরিবারের আয় কমেছে। পরিস্থিতি এতটাই জটিল সমীক্ষকদের কাছে বহু মানুষ দাবি করেছে সরকারি সাহায্য ছাড়া তারা বেশি দিন বাঁচতে পারবেন না।
শিকাগো বুথ স্কুল অফ বিজনেস এবং এদেশের সেন্টার ফর মনিটরিং ইন্ডিয়ান ইকোনমি প্রাইভেট লিমিটেডের যৌথ সমীক্ষায় দেখা গিয়েছে লকডাউন এর সময় দেশের সাধারণ মানুষের অর্থনৈতিক অবস্থা ক্রমেই খারাপ হচ্ছে। তাদের আয় নিয়মিত কমছে।
ভারতের ২৭ টি রাজ্যের ৫৮০০ ঘরে বাড়ি বাড়ি গিয়ে সমীক্ষা চালায় এই গবেষকেরা। এবং তাতেই ভারতের সংকটময় পরিস্থিতির ছবি প্রকাশ্যে এসেছে। এই সমীক্ষায় দেখা গিয়েছে গ্রামীণ ভারতের অবস্থা সবচেয়ে খারাপ। সেখানে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ তুলনামূলকভাবে কম হলেও গ্রামীণ অর্থনীতি একটা বড় ক্ষতি হয়েছে এ সময়ে।
পরিযায়ীরাই করোনা সংক্রমণ বৃদ্ধির কারণ হবে না তো!
এই সমীক্ষা বলছে, লকডাউন এর ফলে সবচেয়ে বেশি অর্থনৈতিকভাবে ক্ষতি হয়েছে উত্তর-পূর্বের রাজ্যগুলিতে। এছাড়া বিহার, ছত্তিশগড়,ঝাড়খন্ড ও হরিয়ানায় এর প্রভাব বেশ প্রকট।
এই সমীক্ষাতে উঠে এসেছে সবচেয়ে বেশি লকডাউনের প্রভাব পড়েছে দেশের শ্রমজীবী মানুষের উপর। বিশাল সংখ্যক দিন আনি দিন খাই শ্রমজীবী মানুষ লকডাউনের কারণে কর্মহীন হয়ে পড়েছে। একইভাবে চাকুরীজীবী ও ব্যবসায়ীদের ওপর এর প্রভাব পড়েছে। তাদেরও আয় কমার ছবি প্রকাশ্যে এসেছে।
শিকাগো বুথ স্কুল অফ বিজনেসের অধ্যাপক মেরিয়ান বার্ট্র্যান্ড, সিএমআইই-র প্রধান কৌশিক কৃষ্ণান এবং প্যারালাল স্কুল অফ মেডিসিন অ্যান্ড ওয়ার্টন স্কুলের সহকারী অধ্যাপক হিদার শোফিল্ড দেখেছেন, চাকুরীজীবী মানুষদের একটা বড় অংশ আয় কমলেও তা বন্ধ হয়নি। বহু ক্ষেত্রে তারা বাড়ি থেকে কাজ করছিলেন ফলে তাদের নির্দিষ্ট পরিমাণ অর্থ মাসে আয় করেছেন। কিন্তু স্বল্প আয়ের সঙ্গে যুক্ত যারা তাদের মধ্যে একমাত্র কৃষিজীবী আর ক্যাটারিং ব্যবসায় সঙ্গে যুক্ত মানুষ ছাড়া কারোরই আয় সেভাবে ছিল না। ফলে এর প্রভাব দেশের অর্থনীতিতে পড়েছে।
গবেষকদল দেখিয়েছেন,২৫ মার্চ দেশে লকআউট ঘোষণার একমাস পরে প্রায় ১০ কোটি ভারতীয় চাকরি হারিয়েছিলেন। একইভাবে বিশ্বে ওই সময়ে ১.৩ বিলিয়ন মানুষের আয়ের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে।