সুপার সাইক্লোন আমফান মোকাবিলায় বিশেষ কন্ট্রোল রুম

দ্য় কোয়ারি ওয়েবডেস্কঃ আজ দুপুরের দিকেই কলকাতা শহরে আছড়ে পড়বে ঘূর্ণিঝড়। আমফান মোকাবিলায় সবদিক থেকে সতর্ক কলকাতা পুলিশ ও কলকাতা পুরসভা।

পুলিশের তরফ থেকে স্পেশাল কন্ট্রোল রুম থেকে শুরু করে ডিজাস্টার ম্যানেজমেন্ট গ্রুপ বা ডিএমজি সদস্যদের তৈরি রাখা হচ্ছে। এক্ষেত্রে স্থানীয় থানার কাজ কী হবে, তা স্পষ্ট করে দিয়েছেন পুলিস কমিশনার অনুজ শর্মা।

আমফান নিয়ে মঙ্গলবার দুপুরে সিপি কলকাতা পুলিসের সমস্ত ডিভিশনাল ডিসি ও ওসিদের সঙ্গে ভিডিও কনফারেন্স করেন।

কলকাতা পুলিশের অনুরোধ অযথা, আতঙ্কিত হবেন না। জরুরি অবস্থায় ফোন করুন আমাদের কন্ট্রোল রুমে (০৩৩-২২১৪৩০২৪/ ২২১৪-৩২৩০/২২১৪-১৩১০)। জানাতে পারেন ১০০ ডায়াল করেও। বিশেষ হেল্পলাইন থাকছে একটি,
9432624365, যে নম্বরটিতে ফোন করা ছাড়াও হোয়াটস্যাপ করতে পারবেন।

সিপি’র বার্তা,

  • সমস্ত পুলিশকর্মীকে সাবধানে কাজ করতে হবে।
  • যেন কোনও জীবনহানি বা দুর্ঘটনা না ঘটে।
  • পাশাপাশি কোনও পুলিশকর্মী যেন অত্যুৎসাহী হয়ে ঝড় দেখতে রাস্তায় নেমে না পড়েন।
  • এক্ষেত্রে প্রশাসন ও আবহাওয়া দপ্তরের বেঁধে দেওয়া গাইডলাইন কঠোরভাবে মেনে চলতে হবে।
  • গাছের তলায় বা টিনের শেডের নীচে কোনও গাড়ি দাঁড় করানো থাকলে, তা সরিয়ে দিতে হবে।
  • যাতে গাছের ডাল গাড়ির উপর ভেঙে পড়ে বড় কোনও দুর্ঘটনা না ঘটে।
  • পাশাপাশি এলাকায় থাকা বিপজ্জনক বাড়িতে কেউ থাকলে, তাঁদের আগে নিরাপদ স্থানে পাঠাতে হবে।
  • এক্ষেত্রে কলকাতা পুরসভার তরফে যে শেল্টার-এর ব্যবস্থা করা হয়েছে, সেখানে তাঁদের নিয়ে যেতে হবে। এমনকী ফুটপাতে বা রাস্তায় কেউ থাকলে, তাদেরও উদ্ধার করে শেল্টারে পাঠাতে হবে দ্রুত।
  • শহরের বিভিন্ন জায়গায় যে হোর্ডিং রয়েছে, পুরসভার সঙ্গে একযোগে কাজ করে সেগুলি নামিয়ে ফেলার নির্দেশ দিয়েছেন নগরপাল।

করোনা নিয়ে ভিডিও কনফারেন্সে শুক্রবার আলোচনায় অবিজেপি দলগুলির সঙ্গে বৈঠকে মমতা

এর সঙ্গেই জানিয়েছেন পরিস্থিতি মোকাবিলায় লালবাজারে এবং প্রতিটি ডিভিশনে আলাদা করে স্পেশাল কন্ট্রোল রুম খোলা হয়েছে। যে কোনও প্রয়োজনে সেখানে ফোন করা যেতে পারে। এখানে ২৪ ঘণ্টা ভালো সংখ্যায় পুলিসকর্মী থাকছেন।

প্রত্যেকটি ডিভিশনে দু’টি করে অ্যাম্বুলেন্স রাখা হয়েছে। যাতে কোনও দুর্ঘটনার খবর এলেই আহতকে দ্রুত উদ্ধার করে হাসপাতালে পাঠানো যায়। ডিএমজি টিমকেও তৈরি রাখা হয়েছে যে কোনও ধরনের উদ্ধারকাজের জন্য।

নদীবক্ষে টহলদারি চালাবে পুলিস। নগরপালের এই নির্দেশের পরেই সমস্ত থানা এলাকায় মাইক নিয়ে প্রচারের পাশাপাশি বিপজ্জনক বাড়িতে থাকা বাসিন্দাদের সরিয়ে ফেলার কাজ শুরু হয়েছে। এমনকী ফুটপাত বা রাস্তায় থাকা মানুষজনকেও গাড়িতে করে তুলে শেল্টারে পাঠানো শুরু হয়েছে।

কলকাতা পুরসভার মুখ্যপ্রশাসক ফিরহাদ হাকিম বলেন, ‘কলকাতা পুরসভা এলাকায় ৫৯ টি অত্যন্ত বিপদজনক বাড়ি চিন্তা বাড়িয়েছে। সেই বাড়ির আবাসিকদের অন্যত্র সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে, তবে সকলেই যেতে রাজি নন। ফলে একটা সমস্যা রয়েছে। তবে পুরসভার পক্ষ থেকে বিপদজনক বাড়ি থেকে সকলকে সরে যেতে অনুরোধ করা হয়েছে।’

ফিরহাদ হাকিম আরও বলেন, ‘সকাল থেকে আমাদের ১৬টি বরো অফিসে টিম তৈরি থাকবে। সদর দফতরেও তৈরি থাকবে টিম। তৈরি থাকবে পে লোডার, গাছ কাটার মেশিন। তৈরি থাকবে ডেমোলিশন টিমও।

এদিন সারাদিন তো বটেই রাতেও দফতরে থাকবেন প্রশাসক ফিরহাদ হাকিম। বিপর্যয় হবে ধরে নিয়েই প্রশাসকের আশ্বাস খুব দ্রুত শহর স্বাভাবিক করা হবে। তারজন্য যা করতে হবে, তা করা হবে, জানিয়েছেন মুখ্য প্রশাসক।

তিনি জানান, টালা ট্যাঙ্ক সংস্কারের কাজে বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। এর জন্য যে ক্রেনটি ওপরে লাগানো রয়েছে সেটিকে আলগা দেওয়া হয়েছে, যাতে সেটি হাওয়ার সঙ্গে অভিমুখ পরিবর্তন করতে পারে। এতে সমস্যা অনেকটাই কমবে।

তিনি জানান, সমস্ত কলকাতা পুরসভার ৭৪ টি পাম্পিং স্টেশনের সমস্ত পাম্প সক্রিয় রয়েছে। সেগুলিকে তৈরি রাখা হয়েছে। এছাড়াও শহরজুড়ে বেশ কয়েক হাজার পোর্টেবল পাম্প রাখা হয়েছে যাতে জল জমলেও তাড়াতাড়ি তা নামানো যায়।

সম্পর্কিত পোস্ট