বিধ্বস্ত দক্ষিণ ২৪ পরগনা পরিদর্শনে শনিবার যাচ্ছেন মুখ্যমন্ত্রী, কাকদ্বীপে প্রশাসনিক বৈঠক
দ্য কোয়ারি ওয়েবডেস্ক:
শুক্রবার প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে সঙ্গে নিয়ে আকাশপথে আমফান বিধ্বস্ত এলাকা পরিদর্শনের পর শনিবার মুখ্যমন্ত্রী যাবেন দক্ষিণ ২৪ পরগনায়।
ঘূর্ণিঝড় আমফান মূলত দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলাকে মানচিত্র থেকে প্রায় বিচ্ছিন্ন করে দিয়েছে। বিপর্যস্ত জেলার মানুষের জনজীবন। এখনো বহু দুর্গত মানুষের কাছে প্রশাসনিক সাহায্য পৌঁছানোও সম্ভব হয়নি।
যেদিকে চোখ যায় শুধু ধ্বংসের চিত্র। আজ সেসবই নিজের চোখে পরিদর্শন করবেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
এদিন কলকাতা বিমানবন্দরে মুখ্যমন্ত্রী জানিয়েছেন, শনিবার আমি আবার নিজে দক্ষিণ ২৪ পরগণার পাথরপ্রতিমা, গোসাবা, বাসন্তী, নামখানা, কাকদ্বীপ ঘুরে দেখব। তারপর কাকদ্বীপে প্রশাসনিক বৈঠক করব।
একই সঙ্গে মুখ্যমন্ত্রী জানিয়েছেন, সোমবার ঈদের পর আরও কয়েকটি জেলা পরিদর্শনে যাবেন মুখ্যমন্ত্রী, কারণ আমফানের তাণ্ডবে রাজ্যের ৮ জেলা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
যদিও এই মুহূর্তে জেলাগুলির উদ্ধারকাজ ও ত্রাণ কাজ চালিয়ে যাওয়ার জন্য মন্ত্রীদের একটা দল তৈরি করে দিয়েছেন বলেও এদিন জানান মুখ্যমন্ত্রী। তাঁরা বিভিন্ন জেলার দায়িত্বে থাকবেন।
নবান্ন সূত্রে জানা গেছে, এই মুহূর্তে জাতীয় বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনীর পাশাপাশি,রাজ্য বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনীর ও দমকল একযোগে কাজ করছে। তবে এই মুহূর্তে উদ্ধার কাজে সবচেয়ে সমস্যা হচ্ছে যোগাযোগের এবং বিদ্যুত সংযোগের।
আকাশপথে পরিস্থিতি দেখতে গিয়ে দেখা গেছে সবচেয়ে খারাপ পরিস্থিতি সন্দেশখালির। কেন্দ্রের থেকে সব রকমের সহযোগিতা চেয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী।
কেন্দ্রীয় বিদ্যুত দফতর এবং টেলি কমিউনিকেশন দফতরের সহযোগিতা চেয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। মোবাইল পরিষেবা চালু করার জন্য তিনি অনুরোধ করেছেন।
করোনাভাইরাসের মাঝে আমফান। রীতিমতো শক্ত চ্যালেঞ্জের মুখে পড়েছে গোটা রাজ্য। সে কথা মনে করিয়ে মমতা বলেন, “এমন ঘুর্ণিঝড় আগে কখনও দেখিনি, আমি সেদিন যখন নবান্নে কন্ট্রোল রুমে ছিলাম, আরও অনেকেই ছিলেন ওখানে….আমি তো নিজের ঘরেই যেতে পারছিলাম না! এত কাঁপছিল, সঙ্গে কী শব্দ ! একটানা আটঘণ্টা চলল তাণ্ডব .. আসল চ্যালেঞ্জটা হল উদ্ধারকাজ আর পুনর্বাসন দেওয়া .. সব কিছু ঠিক মতো করে করা মানুষের জন্য।”
এদিন প্রধানমন্ত্রীকে সঙ্গে নিয়ে আকাশপথে আমফান বিধ্বস্ত এলাকা পরিদর্শনের অভিজ্ঞতা সম্পর্কে জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। তিনি বলেন, পরিস্থিতি খুবই ভয়াবহ। আকাশপথে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে নিয়ে আমরা বিধ্বস্ত এলাকা ঘুরে দেখেছি। তবে কোনটা জল আর কোনটা স্থল আমরা বুঝতেই পারিনি। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে আকাশপথে আমফান বিধ্বস্ত এলাকা ঘুরে আসার পর বিমানবন্দরে ফিরে কথাগুলি বলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
তিনি বলেন, হিঙ্গলগঞ্জ নামখানা প্রভৃতি এলাকা আমরা দেখেছি। একেবারে সব শেষ হয়ে গেছে। কেন্দ্রীয় দল আসবেন বলে প্রধানমন্ত্রী জানিয়েছেন। যত তাড়াতাড়ি আসবে ততটাই ভাল। তিনি আপাতত কেন্দ্র এক হাজার কোটি টাকা দেওয়ার কথা বলেছেন। যত দ্রুত এই সাহায্য দেবে ততোই মঙ্গল।
তিনি আরও জানান, রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকেও এক হাজার কোটি টাকার একটি ফান্ড তৈরি করা হয়েছে। এই সময় কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে সকলকে কাজ করতে হবে বলে জানান মুখ্যমন্ত্রী।
উল্লেখ্য, মুখ্যমন্ত্রী আমফান নিয়ে বৃহস্পতিবার বলেছিলেন, প্রাথমিক পর্যবেক্ষণের ভিত্তিতে মনে হচ্ছে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ এক লক্ষ কোটি টাকা। জেলার পর জেলা কোনও কিছুই অবশিষ্ট নেই। এখন দেখার কখন প্রধানমন্ত্রীর ঘোষিত অর্থ সাহায্য রাজ্য সরকারের হাতে এসে পৌঁছায়।