এনসিএমসির বৈঠকে লকডাউন বাড়ানোর পক্ষেই সওয়াল রাজ্যের, লোকাল ট্রেন চালুর বিরোধিতা মুখ্যসচিবের
দ্য কোয়ারি ওয়েবডেস্কঃ চতুর্থ পর্যায়ের লকডাউন অন্তিম পর্যায় চলে গেলেও এখনই রাজ্যে বিধি-নিষেধের রাশ আলগা করতে চাইছেনা পশ্চিমবঙ্গ সরকার। তাই সাধারণ মানুষের মনে লকডাউন আদেও থাকবে কিনা নিয়ে দ্বিধাদ্বন্দ্ব থাকলেও রাজ্য সরকারের তরফে নতুন করে লকডাউন এর প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে বলেই নবান্ন সূত্রে খবর।
আসলে পরিযায়ী শ্রমিকদের নিয়ে একের পর এক ট্রেন রাজ্যে ঢুকতেই শহর থেকে গ্রাম বিভিন্ন জায়গায় বাড়ছে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা। রাজ্য সরকার মনে করছে এখনই লকডাউন তুলে দিলে পরিস্থিতি হাতের বাইরে চলে যাবে।
বৃহস্পতিবার সেকারণেই রাজ্যের মুখ্য সচিব রাজীব সিনহা কেন্দ্রীয় ক্যাবিনেট সচিব রাজীব গৌবাকে এখনই লকডাউন পুরোপুরি তুলে না দেওয়ার জন্য আর্জি জানিয়েছেন। একইসঙ্গে তিনি রাজ্যের তরফেও জানিয়ে দিয়েছেন এক্ষুনি রাজ্যে লোকাল ট্রেন চালু করার পক্ষে নয় রাজ্য সরকার।
মুখ্যসচিবের মতে লোকাল ট্রেন এখনই চালানোর জন্য ছাড়পত্র দিলে সংক্রমণ একলাফে বহুগুণ বেড়ে যেতে পারে। আর সে কারণেই রাজ্য চাইছে এখনই লোকাল ট্রেন যেন চালু না করা হয়।
উল্লেখ্য পঞ্চম ঘোষণার আগে রাজ্য সরকারের মতামত জানতে চেয়ে এদিন বৈঠক ডেকেছিল কেন্দ্রীয় সরকার। এই বৈঠকে কেন্দ্রীয় ক্যাবিনেট সচিব রাজীব গৌবার পাশাপাশি প্রত্যেক রাজ্যের মুখ্য সচিবরা উপস্থিত ছিলেন।
যাত্রী পরিবহনের আগে বৃহস্পতিবার থেকে চালু হল কলকাতার দুই মেট্রো
সেখানেই রাজীব সিনহা তাঁকে জানান, একদিকে আমফান এবং অন্যদিকে পরিযায়ী শ্রমিকদের নিয়ে রাজ্যের যা অবস্থা তাতে এখনই লকডাউন পুরোপুরি তুলে দেওয়া রাজ্য সরকারের পক্ষে সম্ভব নয়। বরং পঞ্চম দফার লকডাউনে ছাড়ের বিষয় নিয়ে আরো কিছু ভাবনা চিন্তা করা যেতে পারে।
একইসঙ্গে মুখ্য সচিব আরও জানিয়েছেন, রাজ্যে কনটেনমেন্ট জোন গুলোর সুরক্ষায় কোনো হালকাভাবে চাইছে না রাজ্য সরকার। বড় রাজ্য সরকার অঞ্চল ধরে ধরে লকডাউন কড়া করার পক্ষে। এই মুহূর্তে আমফানের পাশাপাশি পরিযায়ী শ্রমিক নিয়ে জেরবার রাজ্য। দুইয়ের ধাক্কায় প্রতিদিনই দুশোর কাছাকাছি সংক্রমিতের খোঁজ মিলছে।
এর সঙ্গে লোকাল ট্রেন চললে রাজ্যের সব ধরনের স্বাস্থ্য বিধি লঙ্ঘিত হবে বলে মনে করছে রাজ্য সরকার। এর ফল স্বরূপ বাড়বে সংক্রমণ। এদিন সেকারণেই লকডাউন বৃদ্ধির পক্ষে সওয়াল করেছেন মুখ্যসচিব।
এদিনও ভিডিয়ো কনফারেন্সে কেন্দ্রীয় সরকারের তরফ থেকে ঘূর্ণিঝড় মোকাবিলায় সব ধরনের সাহায্যের প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছে। ক্যাবিনেট সচিব রাজীব গৌবা ঘূর্ণিঝড় পরবর্তী পরিস্থিতি পর্যালোচনা করেন। সেখানে ত্রাণ পুনর্বাসন ও পুনর্গঠনের অগ্রগতি নিয়ে আলোচনা হয়।
ক্যাবিনেট সচিব জানিয়েছেন এরই মধ্যে প্রধানমন্ত্রীর প্রতিশ্রুতি মত রাজ্যকে এক হাজার কোটি টাকা দিয়ে দেওয়া হয়েছে। সেনা জাতীয় বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনীসহ বিভিন্ন কেন্দ্রীয় সংস্থা রাজ্য সরকারের সঙ্গে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে রাজ্যে পুনর্গঠনের কাজ করছে।
প্রয়োজনে আরও সহায়তার জন্য তারা প্রস্তুত। প্রয়োজনে রাজ্যকে দেওয়ার জন্য বাড়তি খাদ্যশস্য মজুদ রাখা হয়েছে। বিদ্যুৎ পানীয় জল এবং টেলিযোগাযোগ এর মত পরিষেবা ক্ষেত্রকে অগ্রাধিকারের ভিত্তিতে স্বাভাবিক করে তোলার ওপর ক্যাবিনেট সচিব জোর দিয়েছেন।
রাজ্যের পরিস্থিতি সরেজমিনে খতিয়ে দেখতে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের একটি দলও খুব শীঘ্রই রাজ্যে আসবে বলে তিনি জানিয়েছেন।
মুখ্যসচিব রাজীব সিনহা এই বৈঠকে ত্রাণ ও পুনর্গঠনের কাজে কেন্দ্রীয় সংস্থাগুলির সহায়তার জন্য ধন্যবাদ জানান।