চোখের জলে সমাধিস্থ ফ্লয়েডঃ শপথ অন্যায়, অবিচার ও বর্ণবাদের বিরুদ্ধে লড়াইয়ের

দ্য কোয়ারি ওয়েবডেস্কঃ দীর্ঘ দুই সপ্তাহ পর হিউস্টন নিজ শহরে মা লার্সিনিয়া ফ্লয়েডের কবরের পাশে সমহিত করা হল জর্জ ফ্লয়েডকে। জর্জের মৃত্যুতে কেঁপে ওঠে গোটা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র।

বিক্ষোভের সেই আগুন ছড়িয়ে পড়ে গোটা বিশ্বে। পুলিশি নির্যাতনের জেরে জর্জের মৃত্যুর পর মিনেপুলিসের পুলিশ বাহিনী ভেঙে দেওয়ার দাবি উঠতে থাকে।

মঙ্গলবার থেকেই জর্জকে চিরবিদায় জানাতে হাজার হাজার জনতা ভিড় জমাতে শুরু করেন। তাঁর নিথর দেহ হিউস্টন চার্চ থেকে যখন যাত্রা শুরু করে, তখন দুপাশে সারিবদ্ধ ভাবে দাঁড়িয়ে থাকা পুলিশ কর্মীরা তাঁকে স্যালুট জানাতে থাকেন।

শুধুমাত্র হিউস্টন নয়, গোটা অ্যামেরিকা ছিল এদিন শোকস্তব্ধ। তাঁর শেষকৃত্যের ছবি পুরো অ্যামেরিকায় লাইভ দেখানো হয়েছে। শেষ যাত্রা শুরু হতেই নিউ ইয়র্ক স্টক এক্সচেঞ্জ থমকে যায় ৮ মিনিট ৪৬ সেকেন্ডের জন্য।

কারণ ৮ মিনিট ৪৬ সেকেন্ড ধরে পুলিশ অফিসার ফ্লয়েডের গলা হাঁটু দিয়ে চেপে বসেছিল। অন্যায়ের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানাতে এভাবেই ২২৮ বছরের ইতিহাসে দীর্ঘক্ষণ থমকে যায় নিউ ইয়র্ক স্টক এক্সচেঞ্জ।

কৃষ্ণাঙ্গ আমেরিকানের মৃত্যু, প্রতিবাদের আগুনে জ্বলছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের একাধিক শহর

মিনেসোটার গভর্নর টিম ওয়ালজ মি. ফ্লয়েডের শেষকৃত্যের স্মরণে স্থানীয় বাসিন্দাদের ৮ মিনিট ৪৬ সেকেন্ড নীরবতা পালন করতে অনুরোধ করেন।

ডেমোক্র্যাট নেতা এবং প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ডোনাল্ড ট্রাম্পের বিরুদ্ধে সম্ভাব্য প্রার্থী জো বাইডেন সোমবার দেখা করেন ফ্লয়েডের পরিবারের সঙ্গে। তিনি বলেন, ফ্লয়েডের মৃত্যু আমেরিকার ইতিহাসে এক বড় ধরনের বাঁক পরিবর্তন করবে।

হিউস্টনের মেয়র সিলভেস্টর টার্নার একটি প্রশাসনিক নির্দেশে স্বাক্ষর করেছেন। এতে বলা হয়েছে, পুলিশ দমবন্ধ করে কাউকে মারতে পারবে না বা শাস্তি দিতে পারবে না। আর গুলি চালানোর আগে পুলিশকে প্রথমে সতর্ক করে দিতে হবে।

মেয়র নিজেও কৃষ্ণাঙ্গ। তিনি বলেছেন, ”আমরা তাঁর শ্বাস নিয়ে নিয়েছি। এখন আমরা যাতে নিঃশ্বাস নিতে পারি, সেই ব্যবস্থটুকু অন্তত করতে হবে।”

উল্লেখ্য, জর্জ ফ্লয়েডের হত্যার সঙ্গে জড়িত চারজন পুলিশ কর্মকর্তাকে চাকরিচ্যুত এবং অভিযুক্ত করা হয়েছে।

ফ্লয়েডের স্মরণসভা থেকে দাবী ওঠে,  এরপর যিনি অ্যামেরিকার প্রেসিডেন্ট হবেন, তাঁকে বর্ণবাদ শেষ করার লড়াইয়ে নেতৃত্ব দিতে হবে। অ্যামেরিকায় পরিবর্তন আনতে হবে। এখন সেই পরিবর্তন আনার সময়।

হিউস্টনেই বেড়ে উঠেছিলেন ফ্লয়েড। সেই হিউস্টনই চোখের জলে বিদায় জানাল তাঁকে। সেই সঙ্গে শপথ নিলো অন্যায়, অবিচার ও বর্ণবাদের বিরুদ্ধে লড়াইয়ের।

সম্পর্কিত পোস্ট