শেষ মুহূর্তে চমকে রাজ্যসভার ভোটে জয় বিজেপির, সরকার বাঁচানো যাবে কিনা এবার সেদিকে নজর দেশের
দ্য কোয়ারি ডেস্ক: নয়া চেহারায় ঘোড়া কেনাবেচার ছবি দেখাল মণিপুর। যেখানে প্রত্যেক পড়তে পড়তেই ছিল পালাবদল এবং চমক। আর এর উপর ভিত্তি করেই ভোটের আগে দলে ভাঙন নেমে এলেও সেখানে রাজ্যসভার ভোটে শেষ পর্যন্ত কংগ্রেসকে হারিয়ে জয়ী হল বিজেপি।
এদিন নির্বাচনের পর বিজেপির লিসেম্বা সানাজায়োবা রাজ্যসভার একমাত্র আসনে জয়ী হলেন। কংগ্রেস প্রার্থী টি মাঙ্গিবাবুকে তিনি হারিয়ে শেষ হাসি হাসলেন।
ভাঙনের মুখে ঠেলে দিয়েও রাজ্যসভার ভোটে আটকানো গেল না মণিপুরে বিজেপিকে।
উল্লেখ্য,মণিপুরে রাজ্যসভার আসন সংখ্যা মাত্র একটি। এখানে প্রার্থী সংখ্যা ছিল দুজন। কংগ্রেসের ১ আর বিজেপিরও ১ জন। কিছুদিন আগে পর্যন্ত বিজেপির জয়ই এখানে প্রায় সুনিশ্চিতই ছিল।
কিন্তু রাজ্যসভার ভোটের ঠিক আগেই বিজেপিতে ভাঙন প্রশ্নচিহ্নের সামনে দাঁড় করিয়ে দেয় তাদের। ৯ বিধায়কের দলত্যাগে বিরোধী শক্তি বেড়ে দাঁড়ায় ২৮ আর বিজেপির পক্ষে বিধায়ক সংখ্যা দাঁড়ায় ২৩।
এই অবস্থায় সবাই যখন ধরেই নিয়েছিল মণিপুরে বিজেপি সরকারের পতন অবশ্যম্ভাবী এবং একই সঙ্গে রাজ্যসভার ভোটে বিজেপির পরাজয় সুনিশ্চিত।
ঠিক তখনই খেলা ঘুরিয়ে ফিরে এল বিজেপি। বর্তমান পরিস্থিতিতে একটি আসনে জিততে দরকার ২৬টি ভোট। তা হাসিল করে হাসতে হাসতে মণিপুরের রাজ্যসভার আসনটি দখল করে নিল বিজেপি।
তবে এখনও বিজেপির জন্য বিপদ যে সম্পূর্ণ কেটে গেছে তা বলা যায় না। কারণ মণিপুরে বিজেপি সরকার এখন ভাঙনের মুখে দাঁড়িয়ে রয়েছে।
তিনমন্ত্রীসহ ৯ জন বিধায়কের পদত্যাগে বিজেপি সরকার এখন সংখ্যালঘু। মুখ্যমন্ত্রী বীরেন সিংয়ের পাশের রয়েছেন এখন মাত্র ২৩ জন বিধায়ক। তার মধ্যে বিজেপির ১৮ জন। নাগা পিপলস ফ্রন্টের চারজন। এবং এলজিপির একজন বিজেপির সঙ্গে রয়েছেন।
এদিকে কংগ্রেসের তরফে বিজেপির বিরুদ্ধে অনাস্থা ভোট আনা হয়েছে। এখন দেখার রাজ্যসভা ভোটের মত, আস্থাভোটেও শেষ মুহূর্তে বাজিমাত করতে পারে কিনা বিজেপি। আর তা যদি সম্ভব হয়, দেশের রাজনীতিতে কোন সন্দেহ নয় একটা নতুন ইতিহাস রচনা হবে।
আসলে গত বিধানসভা নির্বাচনে ৬০ আসন বিশিষ্ট মণিপুর বিধানসভায় ২৮টিতে জয়লাভ করেছিল কংগ্রেস। মাত্র ২১ আসনে জিতে সরকার গঠন করেছিল বিজেপি।
বিজেপি এখানে সঙ্গে নিয়েছিল নাগা পিপলস ফ্রন্ট ও এনপিপির চারজন করে মোট আট জন বিধায়ককে। লোকজনশক্তি পার্টির একজন, তৃণমূল কংগ্রেসের একজন ও নির্দলের একজনও তাদের সঙ্গে ছিল।
এরপর বিধায়ক কেনাবেচার খেলায় বিজেপি কংগ্রেসের সাতজনকে ভাঙিয়ে নেয়। পরে আরও একজন কংগ্রেস বিধায়ক বিজেপিতে যোগদান করে। ফলে কংগ্রেসের সংখ্যা কমে দাঁড়ায় ২০।
আর অন্যদিকে বিজেপি সরকারের উপর থেকে আগেই সমর্থন তুলে নেন ন্যাশনাল পিপলস পার্টির চার বিধায়ক।
তবে এবার বিজেপির তিন বিধায়ক কংগ্রেসে যোগ দেন এবং বিজেপির সমর্থন প্রত্যাহার করেন তৃণমূল বিধায়ক ও একজন নির্দল বিধায়ক। এর কারণেই এই বিপত্তি তৈরি হয়।