কয়লা ক্ষেত্রে একশ শতাংশ বিদেশি বিনিয়োগ ও কোল ইন্ডিয়ার সদর দপ্তর সরানো নিয়ে প্রধানমন্ত্রীকে চিঠি মমতার

দ্য কোয়ারি ওয়েবডেস্কঃ কয়লা ক্ষেত্রে একশ শতাংশ বৈদেশিক বিনিয়োগ এবং কোল ইন্ডিয়ার সদর দপ্তর রাজ্য থেকে সরিয়ে নিয়ে যাওয়ার প্রতিবাদ জানিয়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় প্রধানমন্ত্রীকে চিঠি লিখলেন শুক্রবার।

একইসঙ্গে এই চিঠিতে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় প্রধানমন্ত্রীকে মনে করিয়ে দিয়েছেন, তিনি নিজে যে আত্মনির্ভরতা স্লোগান তুলেছেন কয়লা ক্ষেত্রে একশ বিদেশি বিনিয়োগের নীতি তার পরিপন্থী

মুখ্যমন্ত্রীর দাবি, কয়লা ক্ষেত্রে বাণিজ্যকরণ বা ১০০% বিদেশী বিনিয়োগের সুযোগ প্রধানমন্ত্রীর ‘আত্মনির্ভর ভারত’ সংকল্পের পরিপন্থী।

কয়লা ক্ষেত্র ভারতের ঐতিহ্য ও গৌরবময় সংস্কৃতির অঙ্গ। বিশ্বের বৃহত্তম কয়লা উৎপাদক দেশ ভারত ও ভারতের পূর্বাঞ্চলে সর্বাধিক কয়লা উৎপাদন হয়ে থাকে। কয়লা উৎপাদনে প্রায় ২৭ হাজার কোটি টাকার লভ্যাংশ রয়েছে কোল ইন্ডিয়ার। তাদের কাছে থাকা লাভের অংশ ৩১ হাজার কোটি টাকারও বেশি।

ফলে সেই কয়লা উৎপাদন ক্ষেত্রে বাণিজ্যকরণ বা ১০০% বিদেশী বিনিয়োগ দেশের সামগ্রিক কয়লা ক্ষেত্র’কে চরম বিপর্যয়ের মুখে ঠেলে দেয়ার সামিল।

প্রধানমন্ত্রীকে তিনি জানান, এই সিদ্ধান্ত রাজ্যের স্বার্থবিরোধী। প্রধানমন্ত্রীকে উদ্দেশ্য করে লেখা সেই চিঠিতে মমতা ওই নীতি পুনর্বিবেচনার দাবি জানিয়েছেন। একই সঙ্গে কলকাতা থেকে কোল ইন্ডিয়ার বিভিন্ন দফতর সরিয়ে নিয়ে যাওয়ার যে সিদ্ধান্ত দিল্লি নিয়েছে তাও পুনর্বিবেচনার দাবি জানিয়েছেন মমতা।

ওই চিঠিতে প্রধানমন্ত্রীকে আরও একটি বিষয় জানিয়েছেন মমতা। তিনি বলেছেন, ভারতের ৮০ শতাংশ কয়লা খনিই রয়েছে পূর্ব ভারতে। কোল ইন্ডিয়া কলকাতার হেড কোয়ার্টার থেকেই সেই সব খনির কাজ নিয়ন্ত্রণ করে।

কিন্তু সম্প্রতি কেন্দ্র সিদ্ধান্ত নিয়েছে, কোল ইন্ডিয়ার চারটি সংস্থা ভারত কুকিং কোল লিমিটেড, সেন্ট্রাল কোলফিল্ডস লিমিটেড, সাউথ ইস্টার্ন কোলফিল্ডস লিমিটেড এবং মহানদী কোলফিল্ডস লিমিটেডের সদর দফতর কলকাতা থেকে সরিয়ে নেওয়া হবে।এটা ওই সব সংস্থার সঙ্গে যুক্তদের এবং কর্মীদের স্বার্থের পরিপন্থী বলেও দাবি করেছেন মমতা।

এই প্রসঙ্গে বর্তমান করোনা পরিস্থিতির কথাও উল্লেখ করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি চিঠিতে লিখেছেন, মহামারীর এই সময়ে কেন্দ্রের পক্ষ থেকেই বলা হচ্ছে এক শহর থেকে আর এক শহরে না যাওয়ার জন্য। সেখানে আগামী ৩০ জুনের মধ্যে ওই চার সংস্থার কর্মীদের অন্যত্র বদলি করার সিদ্ধান্ত অমানবিক।

তাছাড়া কোল ইন্ডিয়ার অধীনস্থ সংস্থাগুলি এক শহরেই থাকার ফলে পারস্পরিক যোগাযোগ অনেক ভাল থাকে। এক সঙ্গে কাজ করার সুবিধা হয়। তাই অফিসগুলির স্থানান্তর বাঞ্ছনীয় নয়।

সম্পর্কিত পোস্ট