বিধায়কের পরিবারের পাশে না দাঁড়িয়ে রাজনীতি করছেন নাড্ডা: ডেরেক

দ্য কোয়ারি ওয়েবডেস্কঃ গত ২৪ ঘন্টায় হেমতাবাদের বিধায়কের মৃত্যু ঘিরে রাজ্য রাজনীতি ছিল তোলপাড়। বিশেষ করে বিজেপির তরফ থেকে এই মৃত্যুকে কেন্দ্র করে রাজ্যের শাসক দলকে দোষারোপ করা হচ্ছিল।

এই মৃত্যুকে খুন বলে আখ্যা দিয়ে তৃণমূলকে কাঠগড়ায় তোলা হয়েছিল। এমনকি বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি পর্যন্ত এই নিয়ে তৃণমূল সরকারকে দুষতে ছাড়েননি। এমতাবস্থায় তৃণমূল শীর্ষ নেতৃত্ব কিন্তু সেভাবে প্রতিক্রিয়া দেয়নি।

জেলা নেতৃত্বের তরফ থেকে বলা হয়েছিল, এই ঘটনার সঙ্গে তৃণমূলের কোন যোগ নেই। ঘটনার প্রকৃত তদন্ত হলেই সত্য উদঘাটিত হবে। এরপর রাজ্য সরকারের তরফ থেকে কালবিলম্ব না করে সিআইডি তদন্তের নির্দেশ দেওয়া হয়।

কিন্তু এসবের মধ্যেই তৃণমূলকে বাড়তি অক্সিজেন জোগাল মৃত বিধায়কের পোস্টমর্টেম রিপোর্ট। এই রিপোর্টে বলা হয়েছে, আত্মহত্যাই করেছেন বিধায়ক।

বৃহস্পতিবার থেকে আগামী ৭ দিন লকডাউন বারাসাত, নির্দিষ্ট সময়ে খোলা থাকবে দোকানপাঠ

মঙ্গলবার ময়নাতদন্তের রিপোর্ট হাতে আসে জেলা প্রশাসনের। যে রিপোর্টে স্পষ্টভাবেই বলা হয়েছে, দেবেন্দ্রনাথের শরীরে কোনও আঘাতের চিহ্ন নেই। তাঁর মাথায় কোনও আঘাতের চিহ্ন পাওয়া যায়নি।

এদিন সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে রাজ্যের স্বরাষ্ট্রসচিব আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়েছেন,সম্ভবত আত্মঘাতীই হয়েছেন হেমতাবাদের বিধায়ক।

তিনি বলেন, ময়নাতদন্তের পর জানা গিয়েছে, মৃতের গলায় কালশিটে দাগ এবং বাঁ হাতে ক্ষতচিহ্ন রয়েছে। ফলে প্রাথমিক তদন্তে এটিকে আত্মহত্যা বলেই করা হচ্ছে।

পাশাপাশি তিনি জানিয়েছেন, মৃতের পকেটে থাকা সুইসাইড নোটটি বিধায়কের নিজের হাতেই লেখা। যা দেখে সুদের কারবারের বিষয় সামনে এসেছে।

আত্মহত্যার ঘটনার সঙ্গে সুদের কারবারের কোনও সম্পর্ক আছে কি না সেটিও খতিয়ে দেখা হচ্ছে। পাশাপাশি জানা গিয়েছে ওই সুইসাইড নোটে দু’জনের নাম রয়েছে।

তাঁদের খোঁজ চালাচ্ছে পুলিশ। সিআইডির হাতে তদন্ত ভার রয়েছে। এই তদন্ত সম্পূর্ণ নিরপেক্ষ হবে বলেও দাবি করেছেন তিনি।

সোমবার সকালে বাড়ির থেকে প্রায় এক কিলোমিটার দূরে একটি চায়ের দোকানের বারান্দায় ঝুলন্ত অবস্থায় উদ্ধার হয় দেবেন্দ্রনাথবাবুর দেহ।

রবিবার রাত থেকেই নিখোঁজ ছিলেন তিনি। বিধায়কের মৃত্যু নিয়ে স্বাভাবিক ভাবে শুরু হয় চাপানউতোর।

বিজেপি দাবি করে, তৃণমূলের গুন্ডাদের হাতেই নিহত হয়েছেন দেবেন্দ্রনাথ রায় । দলের তরফে আরও দাবি করা হয়, মৃত বিধায়ককে হত্যা করে ঝুলিয়ে দেওয়া হয়েছে।

যদিও জেলা তৃণমূল কংগ্রেস সভাপতি কানাইয়ালাল আগরওয়াল প্রথম থেকেই পাল্টা দাবি করে আসছিলেন, এটি আত্মহত্যাই। একইসঙ্গে এই আত্মহত্যার জন্য পারিবারিক এবং ব্যক্তিগত কারণকেই সামনে এনেছিলেন জেলা তৃণমূলের সভাপতি। বাম, বিজেপি,  তৃণমূল সব পক্ষই তদন্তের দাবি করে।

অবশেষে এই ময়নাতদন্তের রিপোর্ট আত্মহত্যার তত্ত্বকেই স্বীকৃতি দিল। যদিও ময়নাতদন্তের এই রিপোর্টকে মানতে নারাজ বিজেপি। মঙ্গলবার এই রিপোর্টকে সাজানো আখ্যা দিয়ে বিজেপি নেতা কৈলাস বিজয়বর্গীয় রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দের কাছে একটি স্মারকলিপি জমা দেন ।

এদিনের জবাব দিয়েছেন তৃণমূল রাজ্যসভার সাংসদ ডেরেক ও’ব্রায়েন। তিনি সরাসরি এই ঘটনায় বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি জেপি নাড্ডাকে নিশানা করেছেন। সোশ্যাল সাইট টুইটারে তাঁর অভিযোগ, বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতিও ফেক নিউজ ছড়াচ্ছেন।

তিনি আরও বলেন, এই কাজে তিনি দলের আইটি সেলের কর্মীদের সঙ্গে প্রতিযোগিতা করছেন। বাস্তব সত্যতা যাচাই না করে, রাজনৈতিক লাভের অঙ্ক থেকেই তৃণমূলকে নিশানা করেছেন তিনি। এসব না করে এই সময় তার উচিত ছিল মৃত বিধায়কের পরিবারের পাশে দাঁড়ানো।

এই তৃণমূল নেতার মতে, সব মৃত্যুই দুঃখের। কিন্তু লাশের রাজনীতি এ রাজ্যের মানুষ কখনোই ভালো চোখে দেখে না।

সম্পর্কিত পোস্ট