বিধায়ক মৃত্যু নিয়ে রাষ্ট্রপতিকে ভুল তথ্য দিচ্ছে বিজেপি, মুখ্যমন্ত্রীর চিঠি নিয়ে রাষ্ট্রপতি ভবনে ডেরেক

দ্য কোয়ারি ওয়েবডেস্কঃ বিধায়কের মৃত্যুর ইসু নিয়ে মঙ্গলবার বিজেপির পর বুধবার রাষ্ট্রপতি রাম নাথ কোবিন্দের দ্বারস্থ হলেন তৃণমূল কংগ্রেস।

উত্তর দিনাজপুরের হেমতাবাদের বিধায়ক দেবেন্দ্রনাথ রায়ের মৃত্যুর ঘটনা আগেই রাষ্ট্রপতি ভবনে পৌঁছে দেওয়া হয়েছিল বিজেপির তরফ থেকে।

এদিন তৃণমূলের তরফে সর্ব ভারতীয় তৃণমূল কংগ্রেসের সভানেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় চিঠি দিয়ে রাজ্যপালকে জানিয়ে দিলেন, বিধায়ক মৃত্যু নিয়ে রাষ্ট্রপতিভবনকে মিস লিড করছে বিজেপি।

জানা গিয়েছে, এই ঠিঠিতে রাষ্ট্রপতিকে জানানো হয়েছে হেমতাবাদের বিধায়কের মৃত্যুর তদন্ত সিআইডি করছে। রাজ্য সরকারের তরফে ঘটনার তদন্তে কোনও ঢিলেমী দেওয়া হবে না।

বুধবার মুখ্যমন্ত্রীর চিঠি নিয়ে রাষ্ট্রপতি ভবনে যান রাজ্যসভায় তৃণমূলের দলনেতা ডেরেক ও’ব্রায়েন। রাজ্যের শাসকদলের মুখপাত্র এদিন রাষ্ট্রপতির সঙ্গে দেখা করেন। তিনিই মুখ্যমন্ত্রীর চিঠি রাষ্ট্রপতিকে দিয়ে এসেছেন।

উল্লেখ্য হেমতাবাদের বিধায়ক দেবেন্দ্রনাথ রায়ের মৃত্যু নিয়ে চাপান-উতর চলছে। দলীয় বিধায়ককে খুন করা হয়েছে বলে নিজেদের দাবিতে অনড় গেরুয়া শিবির। এর যথাযথ বিহিত চেয়ে আগেই রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দের দ্বারস্থ হয়েছিল বিজেপির শীর্ষ নেতৃত্ব।

শহীদ পরিবার ছাড়া প্রথম ২১ জুলাই পালন করবে তৃণমূল

বিজেপি ওই ঘটনায় সিবিআই তদন্ত চাইছে। এদিকে দলনেত্রীর চিঠি নিয়ে রাষ্ট্রপতির কাছে যান তৃণমূল কংগ্রেসের সর্বভারতীয় মুখপাত্র ও সাংসদ ডেরেক ও’ব্রায়েন।

বিধায়কের মৃত্যু ও তার তদন্তের আপডেট রাষ্ট্রপতি ভবনকে জানিয়ে যান তিনি। সেখানে তিনি রাষ্ট্রপতির হাতে সেই নথি তুলে দেন।

সূত্রের খবর, বিধায়কের মৃত্যু নিয়ে বিজেপি যে রাজনীতি করছে তা কাঙ্ক্ষিত নয় বলে চিঠিতে উল্লেখ করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

তিনি লিখেছেন,দেবেন্দ্রনাথ রায়ের মৃত্যু কোনও রাজনৈতিক বিষয় না। প্রাথমিক তদন্তে জানা গিয়েছে, এটি ব্যক্তিগত টাকা লেনদেন সংক্রান্ত বিষয়ে বিবাদজনিত কারণে ঘটেছে। আমরা সব দলের বিধায়কদের সম্মান করি। দেবেনবাবু সিপিএম থেকে জেতেন। পরে বিজেপিকে সমর্থন করেন। বিজেপি আপনাকে মিথ্যা তথ্য দিয়েছে।’

মুখ্যমন্ত্রীর লেখা সেই চিঠি রাষ্ট্রপতির হাতে তুলে দেন ডেরেক। প্রয়াত বিধায়ক যে ক্রেডিট সোসাইটির সেক্রেটারি ছিলেন, সেখানকার অ্যাকাউন্টে ২ কোটি ৬০ লক্ষ টাকার হিসেব পাওয়া যাচ্ছে না। তদন্তে উঠে এসেছে। রাষ্ট্রপতিকে এই তথ্যও দেওয়া হয়েছে তৃণমূলের তরফে।

চিঠিতে আরও উল্লেখ রয়েছে, ‘বিজেপি বিধায়ক দেবেন্দ্রনাথ রায়ের রহস্যজনক মৃত্যুর তদন্ত সিআইডি-র হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে। আমরা আমাদের এক প্রতিপক্ষকে হারিয়েছি। তাঁর আত্মার শান্তি কামনা করি। তবে এই ঘটনার সঠিক তদন্ত হবে। রাজ্য সেদিকে কড়া নজর রেখেছে।’

এদিকে, পুলিশ ও সিআইডি সূত্রের খবর, বিধায়কের অস্বাভাবাবিক মৃত্যুর পিছনে আর্থিক লেনদেনের তত্ব উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না। ইতিমধ্যেই মালদা থেকে কো-অপারেটিভ ব্যাঙ্কের চুক্তিভিত্তিক কর্মী নিলয় সিংহকে গ্রেফতার করে জিজ্ঞাসাবাদ চলছে। মিনি ব্যাংকিং বা সুদের কারবারের কথা মঙ্গলবার বলেছেন রাজ্যের স্বরাষ্ট্রসচিব।

খুনের ঘটনা ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা করা হচ্ছে বলে এদিন অভিযোগ করেছেন বিজেপির সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক রাহুল সিনহা। সেই কারণেই রাষ্ট্রপতির কাছে তৃণমূলের যাওয়া বলে তিনি মনে করেন।

রাহুল বলেন, অতীতে অনেক বিজেপি কর্মীকে হত্যা করে তৃণমূল কংগ্রেস আত্মহত্যা বলে চালিয়ে দিয়েছে। এবার বিজেপি বিধায়ক দেবেন্দ্র রায়কে হত্যা করার পরে তাকে আত্মহত্যা বলে চালানোর চেষ্টা চলছে। এই চেষ্টায় মুখ্যমন্ত্রীর চিঠি নিয়ে তৃণমূল কংগ্রেসের নেতা পৌঁছে গেলেন রাষ্ট্রপতির কাছে! এবং সেই চিঠিতে ব্যাখ্যা দেওয়া হয়েছে এটা আত্মহত্যা ও সরকার তদন্ত করছে।”

রাহুলের প্রশ্ন, “আগে তো কখনও রাষ্ট্রপতির কাছে যায়নি, এবার কেন? পোস্টমর্টেম রিপোর্টের আগেই কেন বলল আত্মহত্যা? সিআইডি নয়, সিবিআি তদন্ত চাইছে বিজেপি।

সম্পর্কিত পোস্ট